গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম খানকে উপজেলার অচিন্তপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম অন্তর আটক করে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগের ঘুষের টাকা ফেরত চাইলেন। ঘটনাটি ঘটেছে বৃহস্পতিবার (২ মে) উপজেলা সদরের একটি খাবার হোটেলে।

এ সময় উভয়েই মধ্যাহ্নভোজ করতে ওই হোটেলে এসেছিলেন। এ সময় চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম অন্তর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে আটক করে বলেন ‘টাকা না দিলে যেতে পারবেন না’। গত ২৮মার্চ উপজেলায় ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগ দেয়া হয়। এতে ব্যপক ঘুষ লেনদেন হয় বলে অভিযোগ রয়েছে। তবে প্রকাশ্যে প্রথম বোমাটি ফাটল খাওয়ার হোটেলে।

দপ্তরী কাম নৈশ প্রহরী নিয়োগে টাকা নেয়ার অভিযোগ সম্পূর্ণ বানোয়াট ও মিথ্যা বলে জানান উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম খান। তিনি অভিযোগ করেন, অচিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম অন্তর তার নিকট ৭লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে আসছিলো। ৪/৫দিন আগেও মুঠোফোনে আবারও চাঁদার টাকা চেয়েছে। এ বিষয়ে তিনি বৃহস্পতিবার থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে অচিন্তপুর ইউপি চেয়ারম্যান শহিদুল ইসলাম অন্তরের মুঠোফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী মাছুয়াকান্দার হোটেল ব্যবসায়ী মৃত আব্দুল আজিজের পুত্র আব্দুল কাদির ওয়াসিম বলেন, বৃহস্পতিবার আড়াইটার দিকে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম খান, সহকারী উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. ইকবাল হোসেন ও মো. হাদিউল ইসলাম হোটেলে খেতে আসেন। তাদের খাওয়ার মাঝখানেই অচিন্তপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাবেক ভিপি শহিদুল ইসলাম অন্তরও দু’জনকে সঙ্গে নিয়ে খেতে আসেন।

শহিদ চেয়ারম্যান এ সময় বলেন, আপনি টাকা দিবেন-দিবেন বলে ৪/৫টা তারিখ করেছেন। টাকা দেননি, আজ টাকা দিয়েই যেতে হবে। আগে খান। তারপর কথা হবে। এ সময় শিক্ষা অফিসার মুঠোফোনে কার কার সাথে এ বিষয় নিয়ে কথা বলতে চাইলে দু’জনের মাঝে কথা কাটাকাটি হয়। এ দোকানের কর্মচারী তারা মিয়া বলেন, খাওয়ার এক পর্যায়ে চেয়ারম্যান আর শিক্ষা অফিসারসহ সবাই খাবারেই হাত ধোঁয়ে ফেলেন। তবে সবার খাবার বিল দিয়েছেন শহীদ চেয়ারম্যান।

খবর পেয়ে উপজেলা পরিষদের নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান মোফাজ্জল হোসেন খান সেখানে উপস্থিত হন। তিনি জানান, শিক্ষা অফিসারের নিকট টাকা পাবেন এ বিষয়টি শহিদুল ইসলাম অন্তর আগেই জানিয়েছিল। তবে হোটেলে চেয়ারম্যান আর শিক্ষা অফিসারের বাকবিত-া দু:খজনক। দু’জনকেই ফিরিয়ে দিয়েছি। অফিসিয়াল আলোচনা অফিসে হলেই ভালো বলে দিয়েছি।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম খান থানায় এসে একটি অভিযোগ দিয়েছেন। অভিযোগটি মামলা হিসেবে নথিভূক্ত করা হয়েছে।
গৌরীপুরে এখন ‘টক অব দ্যা টাউন’ আসলে এটি ‘চাঁদা না ঘুষ’?

(এসআইএম/এসপি/মে ০৩, ২০১৯)