মির্জাগঞ্জ (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : ঘূর্ণিঝড় ‘ফণী’র প্রভাবে পটুয়াখালীর মির্জাগঞ্জের মেন্দিয়াবাদ গ্রামের পায়রা নদীর বাধঁ ভেঙ্গে ৫ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে।

শুক্রবার সকাল দশটার দিকে পায়রা নদীর স্বাভাবিক জোয়ারের চেয়ে ৪-৫ ফুট পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় পানির স্রোতের চাপে পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) ৪১/৭ নং পোল্ডারের মেন্দিয়াবাদ গ্রামের বাধঁ ভেঙ্গে রবি ফসলী মাঠ ও বসত ঘরবাড়ি প্লাবিত হয়েছে।

অনেকেই ঘরবাড়ি ছেড়ে গুরুত্বপূর্ণ মালামাল নিয়ে আশ্রয় নিতে শুরু করেছেন পার্শ্ববর্তী নিরাপদ স্থানে। পরিস্থিতির অবনতি হলে আশ্রয়কেন্দ্রে যাওয়ারও প্রস্তুতি নিয়েছে। গতকাল দুপুর দেড়টার দিকে ঝড়ে উপজেলার ২০টি ঘরসহ সহাস্্রাধিক গাছের উপরে পড়েছে। উপজেলার মেন্দিয়াবাদ গ্রামের মোঃ জাহাঙ্গীর আলাম সানু বলেন, সিডরে এ এলাকার অনেক জান-মালের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

ফণী’র কথা শুনেই আতঙ্কে আছি। শুক্রবার সকালে মেন্দিয়াবাদ গ্রামের বেড়িবাঁধ ভেঙে লোকলয়ে পানি ঢুকেছে। আমরা ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় অবস্থান করছি। বেড়িবাঁধ ভেঙে আমার বাড়িতে পানি ঢুকে পড়েছে। রাতের জোয়ারে কি হবে জানি না। গত দুই বছর পর্যন্ত মেন্দিয়াবাদ গ্রামের বাধঁ নির্মান করা হয় না এ এলাকার মোনসে আলী সিকদারের কারনে। পায়রার ভাঙ্গনের কারনে নতুন বেড়িবাধঁ মোনসে আলী সিকদারের জমির উপর দিয়ে নেয়ার কথা কিন্তু তিনি জমি না দিলে পানি উন্নয়ন বোর্ড এখানে বেধিবাধঁ নির্মান করছে না। এতে প্রায়ই পায়রা নদীর পানি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পেলে পানিতে ৫টি গ্রাম প্লাবিত হয়। এলাকার লোকজন নিজেদের উদ্যোগে মাটি দিয়ে জোয়ারের পানি কোন মধে বাধঁ দিলেও ফনি’র প্রভাবে তা ভেঙ্গে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়।

এদিকে বাধঁ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করার খবরশুনে সেখানে ছুটে যান উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খান মোঃ আবু বকর সিদ্দিকী, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল জাকী ও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা এস.এম দেলোয়ার হোসেনসহ স্থানীয় সংবাদকর্মী। পরে স্থানীয় লোকজনকে নিকটবর্তী আশ্রয় কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার জন্য মাইকিং করা হয়। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার উপজেলার ভয়াং বাজারে গিয়ে পায়রা নদী তীরবর্তী প্রতিটি বাড়ি বাড়ি গিয়ে সকলকে ভয়াং সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়কাম সাইক্লোন সেল্টার আশ্রয়কেন্দ্রে নিয়ে আসেন। ভয়াং বাজারের হোটেল ব্যবসায়ী মোঃ সুমন বলেন,সিড়রের সময়ে আমি ছোট।

তবে কিছুটা বুছি। কিন্তু বর্তমান উপজেলা নির্বাহী অফিসারের মতো অফিসার মির্জাগঞ্জে আর আসে নাই। তিনি দুপুরে ঝড়-বৃষ্টি উপেক্ষা করে পায়রা নদীর পাড়ের বসবাসরত মানুষগুলোকে নিজে বাড়ি-বাড়ি গিয়ে আশ্রয়নকেন্দ্রে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করেন। তিনি দীর্ঘদিন বেঁেচ থাকুক সাধারন মানুষের সেবা করার জন্য।

এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার আবদুল্লাহ আল জাকি বলেন, ঘূর্নিঝড় ফনি’র প্রভাবে মেন্দিয়াবাদ গ্রামের পায়রা নদীর বাধঁ ভেঙ্গে পানি লোকালয়ে প্রবেশ করায় সেখানে ছুটে যাই এবং ওই এলাকাসহ অন্য এলাকার প্রায় ৩ হাজার মানুষসহ তাদের গৃহপালিত পশুকে নিরাপদে আশ্রয়ে নেয়া হয়েছে।

অন্য ইউনিয়নের তেমন কোন সমস্যা নেই। পটুয়াখালী পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ হাসানুজ্জামান জানান, মির্জাগঞ্জ উপজেলার দেউলী ইউনিয়নের মেন্দিয়াবাদ গ্রামের পায়রা নদীল ৪৭/১ নং পোল্ডারের আগে থেকেই বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্থ ছিল। নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় ওই পয়েন্ট থেকে গ্রামে পানি ঢুকে পড়েছে। মানুষ বেশি ক্ষতিগ্রস্থ না হয় তার ব্যবস্থা নেয়ার চেষ্টা করছি।

(ইউজি/এসপি/মে ০৩, ২০১৯)