গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুর-কলতাপাড়া সড়ক সংস্কার কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া গেছে। ব্যবহার করা হচ্ছে পুরাতন ও নিম্নমানের খোয়া। রাস্তার দু’পাশে মাটি ভরাট না করে এজিন নির্মাণ করায় এজিন দূর্বল হচ্ছে। নির্মাণ কাজে অনিয়ম, নি¤œমানের মালামাল ব্যবহার ও ত্রুটিপূর্ণ মেরামতের কারণে সংস্কারকাজ শেষ হওয়ার পর বছর যেতে না যেতেই সড়ক ভেঙ্গে যায়। একই সড়ককে সরকার বারবার বরাদ্দ দিলেও সুফল পাচ্ছে না জনসাধারণ।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পুরাতন কার্পেটিং এর উপর চলছে মেকাডমের কাজ। মেকাডমে ১নং ইটের খোয়া ব্যবহার করার কথা থাকলেও ব্যবহৃত হচ্ছে ২নং ও ৩নং ইটের কোয়ার সাথে ইটভাটার রাবিস। অত্যন্ত নি¤œমানের সুরকী ব্যবহার করার কারণে রোলার দেয়ার পর এসব সুরকী পাউডারে পরিণত হয়েছে। বাতাসের সঙ্গে উড়ছে রাবিশের পাউডার।

প্রকল্পের কাজ শুরু হওয়ার সাথে সাথে প্রকল্প এলাকায় প্রকল্পের তথ্য সংবলিত সাইনবোর্ড লাগানোর কথা থাকলেও সড়ক সংস্কার ও মেরামত কাজের দেড় মাস অতিবাহিত হলেও নেই কোন সাইনবোর্ড। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানের নাম বা প্রাক্কলিত অর্থের পরিমাণ জানে না এলাকাবাসী।

উপজেলা প্রকৌশল বিভাগ জানায়, মেসার্স ইসতিয়াজ আহমেদ সড়কটির সংস্কার ও মেরামত কাজ করছে। ৩হাজার ৮৩০মিটার রাস্তার প্রাক্কলিক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ কোটি ২০ লাখ ১৫ হাজার ৪৩৬ টাকা। রাস্তায় নিম্নমানের সুরকী ও ইটের ব্যবহারের বিষয়টি স্বীকার করেন উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. ওয়াহেদুল হক।

তিনি জানান, ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠানকে বারবার মানসম্মত ইটের খোয়া আনার জন্য বলা হয়েও তা বাস্তবায়ন হচ্ছে না। ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান প্রকৌশল বিভাগের নির্দেশ না মানায় সড়ক সংস্কার ও মেরামত কাজে নিয়োজিত কর্মকর্তাদের প্রকল্প এলাকা থেকে ফিরিয়ে নিয়ে আসা হয়েছে। বিষয়টি উধ্বর্তন কর্তৃপক্ষকেও অবহিত করা হয়েছে।

গুজিখা গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, রাস্তা বড় করা হচ্ছে। দু’পাশে কোন মাটি ভরাট করা হয়নি। এমন সময় কাজ করা হচ্ছে যে সময় দু’পাশেই পাকা ধান। তাঁতকুড়া গ্রামের আবুল হাসিম জানান, রাস্তার পুরাতন ইট, পাথর মিশিয়ে দেয়া হচ্ছে।

শিক্ষক গোলাম মোহাম্মদ জানান, নিম্নমানের ইট ও রাবিস ব্যবহারের ফলে রাবিশের পাউডার উড়ে মানুষের শ্বাসকষ্ট রাড়ছে। সময়মত পানি দেয়া হচ্ছে না।

গৌরীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক মজিবুর রহমান ফকির বলেন, রাষ্ট্রের অর্থের অপচয় নয়। প্রয়োজন সুপরিকল্পিত ও টেকসই উন্নয়ন। যা সাধারণ মানুষের কল্যাণে আসবে। একই সড়ক কেন বারবার ভাঙছে; তা নিরুপণ করে প্রতিরোধ ব্যবস্থাসহ সড়ক সংস্কার ও উন্নয়র করা প্রয়োজন।

উপজেলা প্রকৌশলী আবু সালেহ মো. ওয়াহেদুল হক আরো জানান, সকল নির্মাণ ও মেরামত কাজে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে দেখভাল করা হচ্ছে। রাস্তায় চলাচলকারী অভারলোড গাড়ী যা এসব রাস্তার ধারণ ক্ষমতার দুই/তিন গুণ বেশি। ফলে দ্রুত নির্মিত সড়ক ভেঙ্গে যাচ্ছে।

(এসআইএম/এসপি/মে ০৫, ২০১৯)