বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের শরণখোলায় পাওনা টাকা আদায়ে মো. ইসমাইল খান (৬০) নামের বৃদ্ধকে শেকলে বেধে নির্যাতন করার অভিযোগ উঠেছে এক আওয়ামী লীগ নেতা ও তার লোকজনের বিরুদ্ধে। তাকে পায়ে শেকল দিয়ে বেধে কয়েক দফা শারিরীকভাবে নির্যাতন করে ছেড়ে দেওয়া সোমাবার সন্ধ্যায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর রাতে জড়িত একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।

নির্যাতনের স্বীকার মো. ইসমাইল খান ওইদিন রাতেই মূল অভিযুক্ত রায়েন্দা ইউনিয়নের ৪ নম্বর খাদা ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল বয়াতী (৫০), পশ্চিম খাদা গ্রামের কাঞ্চন বয়াতীর ছেলে শাহিন বয়াতী (৩০), মালিয়া রাজাপুর গ্রামের খালেক আকনের ছেলে এনামুল আকনসহ (৪৫) ঘটনায় জড়িত অজ্ঞাত আরো পাঁচ জনকে আসামী করে শরণখোলা থানায় মামলা দায়ের করেন। তবে, প্রধান অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কামাল বয়াতীকে পুলিশ এখনো গ্রেফতার করতে পারেনি।

মঙ্গলবার দুপুরে শরণখোলা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মো. ইসমাইল খান জানান, বর্তমানে তিনি মোরেলগঞ্জের জিলবুনিয়া পীর সাহেবের খাদেম হিসেবে কাজ করছেন। স্ত্রী, তিন ছেলে থাকেন মোংলাতে। রবিবার তিনি পারিবারিক একটি সালিসি-বৈঠকে অংশ নিতে দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের বাড়িতে যাচ্ছিলেন। পথিমধ্যে বাংলাবাজার এলাকায় পেয়ে কামাল বয়াতী তাকে ধরে পাওনা টাকার জন্য তার হোটেলে ওইদিন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত আটকে রাখে। সন্ধ্যায় তাকে ওই বাজারে অবস্থিত আওয়ামী লীগ অফিসে শেকল দিয়ে বেধে মারধর করে। সেখান থেকে রাতে তার বাড়িতে নিয়ে যায়। সোমবার সারাদিন আটকে রেখে সন্ধ্যায় ছেড়ে দেয়। কামাল বয়াতী তার কাছে ১৫ হাজা টাকা পাবেন বলে তিনি স্বীকার করেছেন। মো. ইসমাইল খান উপজেলার রায়েন্দা ইউনিয়নের দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের মৃত আ. গণি খানের ছেলে।

তবে, অভিযুক্ত আওয়ামী লীগ নেতা কামাল বয়াতী বলেন, ইসমাইল খান একজন ধুরন্ধর লোক। তার কাছে তিন বছর আগের ২০ হাজার টাকা পাওনা রয়েছে আমার। এভাবে আরো বহু মানুষ তার কাছে টাকা পাবে। কারো টাকা না দিয়ে সে এলাকা থেকে স্বপরিবারে পালিয়ে যায়। দীর্ঘদিন পর রবিবার দুপুরে পেয়ে তাকে আটক করি এবং পাওনা টাকার জন্য চাপ দেই। তাকে কোনো প্রকার নির্যাতন করা হয়নি। টাকা যাতে না দেওয়া লাগে সেজন্য সে নাটক সাজিয়েছে।

শরণখোলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) দিলীপ কুমার সরকার বলেন, সোমবার সন্ধ্যায় ইসমাইল খানকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এঘটনায় ইসমাইল খান নিজেই বাদি হয়ে মামলা দায়ের করেছেন। ওই রাতে আসামী এনামুলকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে। বাকি আসামীদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে।

(এসএকে/এসপি/মে ০৮, ২০১৯)