দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দুমকিতে বেদখল হওয়া সরকারি খাস জমির রেকর্ডিও ১০টি খালের স্বাভাবিক গতি ফেরাতে প্রশাসনের কোন উদ্যেগ নেই। ক্রমাগত সরকারী রেকর্ডিও খালের খাসজমি ভরাট করে প্রভাবশালীদের দখলে চলে গেলেও সংশ্লিষ্টরা রয়েছে নির্বিকার। ফলে এভাবেই কৃষি প্রধান এলাকার সেচ সুবিধার সহায়ক সরকারী রেকর্ডিও খালগুলো ভরাট ও বেদখল হয়ে অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে।

উপজেলা শহর সংলগ্ন পিরতলা বাজারের খাল, আংঙ্গারিযা ইউনিয়নের দুমকি সাতানি খাল, শ্রীরামপুর ইউনিয়নের জামলার খাল, মুন্সির হাটে ফেদিয়ার খাল, কচ্ছপিয়া, গোদার খাল, মুরাদিয়ার বোর্ড অফিস বাজার সংলগ্ন খালসহ অন্তত: ১০টি রেকর্ডিও সরকারী খাল ক্রমাগত ভরাট হয়ে বেদখল হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয় প্রভাবশালীরা তাদের দখলীয় পৈত্রিক ও রেকর্ডিও সম্পত্তির অগ্রভাগ দাবিতে ্ক্রমে ্ক্রমে সরকারী খাল ভরাট করে ভিটি ও জমির প্লট বৃদ্ধি করে দোকান ঘর ও স্থাপনা নির্মাণ করে চললেও কারো যেন কোন মাথাব্যাথা নেই।

প্রশাসনের কর্মকর্তাদের চোখের সামনেই এ দখল প্রক্রিয়া চলে আসলেও তারা কেউ টু শব্দটিও করছে না। প্রশাসনের এমন রহস্যজনক ভূমিকার কারনে দখলবাজদের দৌরাত্ব দিনে দিনে আরও বেড়ে গেছে। তারা যে যেমন পারছে, তেমন করে দ্বিগুন উৎসাহে খাল ভরাট করে চলছে। এ অব্যহত দখল প্রক্রিয়ার কারনে রেকর্ডিও সরকারী খালগুলোর অস্তিত্বের সংকট দেখা দিয়েছে।

সরেজমিন দেখা যায়, আংঙ্গারিযা ইউনিয়নের দুমকি সাতানি মৌজার ২২৭নং খতিয়ানে ৪৩৭ নং দাগের রেকর্ডিও সরকারি খালটি আস্তে আস্তে ভরাট ও বেদখল হওয়ায় দুমকি সাতানী ও আঠারোগাছিয়া মৌজার প্রায় কয়েকশ’ হেক্টর আবাদি জমির সেচের পানি উঠা নামা মারাত্মক ভাবে ব্যহত হচ্ছে। উপজেলা শহর সংলগ্ন পিরতলা খালটি ক্রমেই ভরাট হয়ে বে-দখল হয়ে যাচ্ছে। জামলার খালের ওপর দিয়ে ওয়াপদা ভেরিবাঁধে আটকে থাকায় এবং ১০০গজের ব্যবধানে ডানিডা সড়কের বাঁধ নির্মিত হওয়ায় খালটি স্থায়ী ভাবে বন্ধ হয়ে গেছে। সম্পূর্ণ আবদ্ধ খালের সরকারী রেকর্ডি জমি আস্তে আস্তে ভরাট হয়ে যাওয়ায় স্থানীয় লোকজন তাদের সম্পত্তির অগ্রভাগ দাবিতে ভোগদখল করছে।

এভাবে পানি চলাচলের রেকর্ডিও খাল বেদখল ও ভরাট হয়ে অস্তিত্বের সংকটে পরায় ওই এলাকার কৃষি জমির চাষাবাদে পানির সংকট দেখা দিয়েছে। সেচ সুবিধা বাঁধাগ্রস্থ হওয়ায় প্রতি বছর ফসল হানীর ঝুকিতে পড়েছে কৃষিজীবিরা। এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক বেদখল হওয়া রেকর্ডিও সরকারী খাল উদ্ধার ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের নির্দেশ দিলেও তা কার্যকর হয়নি।

উপজেলা ভূমি অফিস এসব অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে নোটিশ দিলেও পরবর্তি সময়ে রহস্যজনক কারনে উচ্ছেদাভিযান থেমে যায়। আর এ কারনেই অবৈধ দখলদাররা তাদের দোকান ঘর না সরিয়ে বরং দ্বিগুন উৎসাহে দোকান ঘর চালু করেছেন। অভিযোগ ওঠেছে, টাকা ও ক্ষমতার দাপটে ভূমি ও ইউএনও অফিসকে ম্যানেজ করে অবৈধ দখলদাররা সরকারী খাল বহাল তবিয়তে দখল করে আছেন।
আংঙ্গারিযা ইউনিয়নের দুমকি সাতানি, শ্রীরামপুর, মুরাদিয়া ও আঠারগাছিয়া মৌজার এসব সরকারি খালের দু’পারের বিস্তীর্ণ এলাকার ফসলি জমি চাষাবাদে সেচ সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অবিলম্বে ওইসব খালের সকল অবৈধ্য স্থাপনা দোকান ঘর উচ্ছেদের দাবী করেছেন ্এলাকাবাসীরা।

উপজেলার সহকারী কমিশনার (এসিল্যান্ড) আল-ইমরান বলেন, মাত্র কয়েক মাস হলো যোগদান করেছি, বিষয়টি আমার জানা নেই, খোঁজ খবর জেনে শুনে ভালো ভাবে দেখে ব্যবস্থা নেয়া হবে। অবৈধ দখল উচ্ছেদ করা হবে কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, খুব শ্রীঘ্রই এ বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

(এস/এসপি/মে ১০, ২০১৯)