মদন (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি : বিভিন্ন নাটকীয়তার পর অবশেষে নেত্রকোনার মদন উপজেলার ১০ নং রত্নপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যকে বদলি করা হলো প্রত্যন্ত হাওরাঞ্চলের মান্দরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে। তার অনিয়মের চিত্র তুলে ধরে জেলা প্রশাসক কার্যালয় ও মদন প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে পৃথক তদন্ত প্রতিবেদন ২০ নভেম্বর ও ২ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে দাখিল করেন। কিন্তু দীর্ঘ দিনেও এর প্রতিকার না হওয়ায় স্কুল ম্যানেজিং কমিটি ও অভিভাবকগণ ক্লাস বর্জন কর্মসুচি অব্যাহত রাখেন। এ ব্যাপারে বিভিন্ন জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিকে স্ব-চিত্র প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।

নেত্রকোনা জেলা শিক্ষা অফিসের ২৪ এপ্রিল জেপ্রাশিঅ/নেত্র ২০১৯/৯৬৭ নং স্মারকে প্রেরিত প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে প্রাথমিক শিক্ষা ময়মনসিংহ বিভাগীয় পরিচালক মোঃ আনোয়ার হোসেন ৭ মে প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যকে একই উপজেলার মান্দরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে বদলির আদেশ জারি করেন। এতে উল্লেখ করা হয় ১২ মে এর মধ্যে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে হবে অন্যতায় ১৩ মে তারিখ হতে তাকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য করা হবে। এ বদলির সংবাদটি শনিবার শোনে এসএমসি কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও শিক্ষার্থীদের মাঝে আনন্দের বন্যা বইছে।

বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মোঃ আলী আকবর জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যের স্বেচ্ছাচারিতা ও অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বরাবর দায়ের করার পর অবশেষে ৭ মে তাকে অন্যত্র বদলি করা হয়েছে। এতে আমরা খুবই খুশি। দ্রুত এ বিদ্যালয়ে একজন প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেওয়ার জন্য কর্তৃপক্ষের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা স্বপন কুমান সূত্রধর জানান, প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যের বদলির চিঠি পেয়েছি। তাকে ১২ মে মান্দরুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে যোগদান করতে হবে অন্যতায় ১৩ মে তারিখ হতে তাকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত বলে গণ্য করা হবে।

উল্লেখ্য প্রধান শিক্ষকের অনিয়ম, স্বেচ্ছাচারিতা ও বিদ্যালয়ে অনুপস্থিত থাকার ব্যাপারে বিভিন্ন কর্তৃপক্ষের বরাবর অভিযোগ দায়ের করেন এসএমসি কমিটি ও অভিভাবকরা। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার মোঃ মোজাহিদুল ইসলাম ১৮ জুলাই ২০১৮ এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) মির্জা শাকিলা দিল হাছিল ৮ নভেম্বর ২০১৮ বিদ্যালয় পরিদর্শন করে প্রধান শিক্ষক নন্দিতা ভট্টাচার্যকে অনুপস্থিত ও অন্যান্য কার্যক্রমে অব্যবস্থাপনায় সুস্পষ্ট নিদর্শন পান। এমনকি একটি শ্রেণীতে কোনো শিক্ষার্থীকে উপস্থিত পাওয়া যায়নি তা উল্লেখ করে দুই কর্মকর্তা ২০ নভেম্বর ও ২ ডিসেম্বর ২০১৮ ইং তারিখে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এতে কোনা ব্যবস্থা না নেওয়ায় বিদ্যালয়টিতে অচল অবস্থার সৃষ্টি হওয়ায় শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও ম্যানেজিং কমিটির সদস্যগণ ক্ষুদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন করে প্রতিবাদ জানিয়ে আসছিলেন। এরই প্রেক্ষিতে এ বদলির আদেশটি হয়।

(এএমএ/এসপি/মে ১১, ২০১৯)