গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : মে মাসে বহু ফুল ফোটে। কিন্তু মে মাসের মূল আকর্ষণ ‘মে ফ্লাওয়ার’। একদিকে মে মাস শুরু হয়। অন্যদিকে মাথা তুলে দাঁড়াতে থাকে মে ফ্লাওয়ার। মাসের একেবারে প্রথম দিক থেকেই মে ফ্লাওয়ার প্রকৃতিকে তার অস্তিত্ব ও সৌন্দর্য জানান দেয়। এ কারণেই ফুলটির নাম মে ফ্লাওয়ার। তবে মে ফ্লাওয়ারের আরো কিছু পরিচিত নাম আছে। যেমন -ফায়ার বল, বল লিলি, গ্লোব লিলি, আফ্রিকান ব্লাড লিলি ইত্যাদি।

মে ফ্লাওয়ার কন্দজাতীয় ফুল গাছ। গ্রীষ্মের আগমনে মাটি ভেদ করে ফুলের ডাঁটা বের হয়, ফুলের কলি জন্মে আর মে মাসের শুরু থেকেই উজ্জ্বল লাল রঙের মাঝে হলুদ-সাদা আভার মিশ্রণে গোলাকার বল আকৃতির ফুল ফোটে। গড়নের দিক থেকে কদম ফুলের মতো। তবে আকারে আরও বড়। ফুল গন্ধহীন। ফুটন্ত ফুল দেখতে অত্যন্ত আকর্ষণীয়। পাপড়ি ও পুংকেশর অসমান। ফুল শেষে গাছে ফল ধরে। ফুলের ডাঁটা ও গাছের গড় উচ্চতা প্রায় ১০ থেকে ১২ ইঞ্চি পর্যন্ত হয়ে থাকে। ছোট গাছ দেখতে অনেকটা ছাতার মতো।

শুক্রবার সকালে মে ফ্লাওয়ারের দেখা মিলে ময়মনসিংহের গৌরীপুর পৌর শহরের বৃক্ষপ্রেমী মোতালিব বিন আয়েতের ফুলবাগানে। বাগানের একটি টবে ফুটে আছে দৃষ্টিনন্দন মে ফ্লাওয়ার। প্রথম দেখায় মনে হয় পুরোটা ফুল কাটায় ঘেরা। প্রকৃতপক্ষে তা নয়। ফুলের পাপড়িতে ছুঁয়ে দিলে নরম কোমল অনুভূতি হয়। আঙুলের ডগায় উঠে আসে ছিটে ফোটা হলুদ রং। যেন ভালোবাসার চিহ্ন।

এদিকে মে ফ্লাওয়ার ফুটার খবর পেয়ে বৃক্ষ প্রেমী মোতালিব বিন আয়েতের বাড়িতে ছুটে আসছে দর্শনার্থীদের। পছন্দের ফুলটিতে একনজর দেখতে উৎসুক দর্শনার্থীরা সকাল থেকেই ভীড় জমিয়েছে। কেউ কেউ আবার ব্যস্ত হয়ে পড়েছে মুঠোফোনে সেলফি তোলতে।

বৃক্ষপ্রেমী মোতালিব বিন আয়েত বলেন, এক বছর আগে আমি এই মে ফ্লাওয়ার গাছের মূল সংগ্রহ করে টবে রোপণ করি। এরপর নিয়মিত পরিচর্যা করি। চলতি বছরের মে শুরুর দিকে মে ফ্লাওয়ার ফোটে বড় হতে থাকে। মে ফ্লাওয়ার একমাস স্থায়ী হয়। ফুল ঝড়ে পড়ার পর পাতার সৌন্দর্য আরো কিছুদিন উপভোগ করা যায়। এটি একটি দুর্লভ ফুল। কন্দ ও বীজের মাধ্যমে এই ফুলের বংশবিস্তার ঘটে। মূলত সৌাখিন ফুলপ্রেমীরা মে ফ্লাওয়ারকে বাঁচিয়ে রেখেছেন।

মে ফ্লাওয়ারের আদি নিবাস আফ্রিকা। পরিবার :Amaryllidaceae উদ্ভিদ তাত্ত্বিক নাম :Haemanthus multiflorus বিস্তৃতি পূর্ব ভারত থেকে মিয়ানমার ও ইন্দোনেশিয়া। তবে আমাদের প্রকৃতি ও পরিবেশে এ ফুল বেশ মানিয়ে নিয়েছে। তাই পুষ্পপ্রেমীরা বাগানে, বারান্দার টবে, ছাদ বাগানে স্থান দিয়ে এদের সৌন্দর্য উপভোগ করে।

(এসআইএম/এসপি/মে ১১, ২০১৯)