নওগাঁ প্রতিনিধি : অসহনীয় গরমের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে নওগাঁঁয় শুরু হয়েছে বিদ্যুতের লোডশেডিং। দিনে-রাতে ৭ থেকে ৮ বার লোডশেডিং করা হচ্ছে বলে অভিযোগ গ্রাহকদের। এতে করে রোজাদারদের অবস্থা কাহিল হয়ে পড়েছে। ব্যাহত হচ্ছে ব্যবসা-বাণিজ্য ও শিক্ষার্থীদের সুষ্ঠু লেখাপড়া। বিদ্যুতের ভেলকিবাজিতে অতিষ্ঠ নওগাঁবাসী। ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে। লোডশেডিংয়ে অতিষ্ঠরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে নিজেদের ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন নিজেদের মতো করে। নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেড (নেসকো) বলছে, কোন লোডশেডিং নাই। হঠাৎ করে বাড়তি চাপের কারণে এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

এদিকে লোডশেডিংয়ের কারণে অফিস-আদালতেও স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হচ্ছে। দিনে কমপক্ষে দিনে ৭/৮ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। এতে করে দিনে ৫/৭ ঘন্টা বিদ্যুৎ থাকছেনা। এভাবে বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করায় কলকারখানায় মেশিন-যন্ত্রপাতিতে সুষ্ঠুভাবে কোনো কাজ করা যাচ্ছে না। প্রচন্ড গরমে মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধরা বেশি সমস্যায় পড়েছে।

গত ৬ মে থেকে রমজানের তারাবির পর থেকে শুরু হয়েছে লোডশেডিং। বৈশাখের এই তপ্ত রোদ ও প্রচন্ড গরম। প্রায় ৩৬-৪০ ডিগ্রী সেলসিয়াম তাপমাত্রা ওঠা-নামা করছে এখানে। কাটফাটা রোদে রাস্তাঘাটে মানুষের চলাচল কমেছে। সূর্যের প্রখর তাপ সহ্য করতে না পেরে গাছের ছায়ায় আশ্রয় নিচ্ছেন মানুষ ও প্রাণীকুল।

শহরের বাঙ্গাঁবাড়িয়া কলেজপাড়ার আব্দুল মান্নান ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, ‘অনেকেই এখন সেহেরি রান্না করতেছে, আবার অনেক রোজাদার ব্যক্তিরা ঘুমাচ্ছে। মাঝ পথে বিদ্যুৎ চলে গেল। মেজাজটা কেমন লাগে। মাস্টার পাড়া মহল্লার তপু হোসেন তার ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, নওগাঁবাসী অতি শান্তিপ্রিয় তাই বিদ্যুৎ বিভাগের এটা সমবেদনা। শহরের খাস-নওগাঁ মন্ডলপাড়া মহল্লার মৌসুমি সুলতানা শান্ত বলেন, দিনে ১০/১৫ বার বিদ্যুৎ আসা-যাওয়া করছে। এই প্রচন্ড গরমে অসুস্থ হয়ে পড়েছি। কিছু অসাধু কর্মকর্তার কারণে সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে। এটার সুষ্ঠু সুরহা হওয়া দরকার।

সদর উপজেলার বাচারী গ্রাম সোনার পাড়া আব্দুল কুদ্দুস বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ দিনে ২/৩ বার আসা-যাওয়া করে এবং ৫-৭ মিনিটের মধ্যে চলে আসে। তবে তেমন কোন লোডশেডিং নাই বললেই চলে। বিশেষ করে নামাযের সময় কোন সমস্যা হচ্ছেনা।

নওগাঁ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ জেনারেল ম্যানেজার এনামুল হক বলেন, গত বুধবার ছিল চাহিদা ৬৫ মেগাওয়াট এবং বৃহস্পতিবার ছিল ৬১ মেগাওয়াট। কোন লোডশেডিং নাই। চাহিদা মোতাবেক সরবরাহ করা হচ্ছে।

এদিকে পবিত্র রমজান মাসে সাময়িক বিদ্যুৎ বিভ্রাটের জন্য দুঃখ প্রকাশ করে নওগাঁস্থ নর্দান ইলেকট্রিসিটি সাপ্লাই কোম্পানি লিমিটেডের নেসকো) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, এই রমজানে নওগাঁবাসীকে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুতসেবা দেয়ার লক্ষ্যে নিরলস ভাবে কাজ করে যাচ্ছে নওগাঁর বিদ্যুৎকর্মীরা।

শহরের অন্যান্য মানুষ যখন পরিবার নিয়ে ইফতারীতে ব্যস্ত, তখন বিদ্যুৎকর্মীরা ইফতার করছে.কাজের ফাঁকে কোন এক রাস্তায় সাদা দিয়ে। বিশেষ করে বিকেলে ও সেহ্রীতে একই সময় রান্না করা হচ্ছে। এতে করে ট্রান্সফর্মারে লোড পড়ছে। ফলে শহরের উকিলপাড়া, ডিগ্রীর মোড় ও কাঁঠালতলীতে ট্রান্সফর্মার পুড়ে গেছে। এছাড়া কয়েক জায়গায় তার পড়ে গেছে।

আমাদের চেষ্টার কোন ক্রটি নাই। আমরা সর্বোচ্চ ভাল সেবা দেয়ার যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাচ্ছি। এছাড়া বিদ্যুৎ সরবরাহ ও চাহিদার কোন সমস্যা নাই।

(বিএম/এসপি/মে ১১, ২০১৯)