আন্তর্জাতিক ডেস্ক : সৌদি আরবের পূর্বাঞ্চলের সংখ্যালঘু শিয়া অধ্যুষিত কাতিফ প্রদেশে পুলিশের সঙ্গে সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে অন্তত ৮ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। শনিবার পুলিশের ওই অভিযানের পর দেশটির কর্মকর্তারা বলেছেন, নিহতরা কাতিফের একটি সন্ত্রাসী সেলের সদস্য।

নিরাপত্তাবাহিনীর একজন মুখপাত্রের বরাত দিয়ে সৌদির সরকারি বার্তাসংস্থা সৌদি প্রেস অ্যাজেন্সি (এসপিএ) এক প্রতিবেদনে বলছে, দেশের নিরাপত্তা ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য প্রস্তুতি নিতে সম্প্রতি ওই সন্ত্রাসী সেলটি গঠিত হয়েছিল।

তিনি বলেছেন, ‘একটি আবাসিক ভবন ঘিরে ফেলার পর নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের লক্ষ্য করে গুলি নিক্ষেপ করে সন্ত্রাসীরা। পরে পুলিশের পাল্টা গুলিতে মারা যায় তারা।’

‘তাদেরকে আত্মসমর্পনের আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু তারা এতে সাড়া না দিয়ে নিরাপত্তাবাহিনীকে লক্ষ্য করে গুলিবর্ষণ করে...ফলে পুলিশের গুলিতে নিহত হয় সন্ত্রাসীরা।’

তবে এই অভিযানে কোনো বেসামরিক নাগরিক কিংবা নিরাপত্তা বাহিনীর কোনো সদস্য আহত হননি বলে জানিয়েছেন সৌদি ওই কর্মকর্তা।

ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স বলছে, সংখ্যালঘু শিয়া অধ্যুষিত দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় কাতিফ প্রদেশের বাসিন্দারা প্রতিনিয়ত বিভিন্ন ধরনের বৈষম্য ও দমন-পীড়নের শিকার হচ্ছেন বলে সুন্নী সংখ্যাগরিষ্ঠ সৌদি আরবের ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে। কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ এ অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

শিয়া অধ্যুষিত এই এলাকায় নিয়মিত সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান পরিচালনা করে সৌদি নিরাপত্তাবাহিনী। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ও গত জানুয়ারিতে কাতিফে পুলিশের অভিযানে বেশ কয়েকজনের প্রাণহানি ঘটে।

২০১১ সালে আরব বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশে ‘আরব বসন্ত’ শুরু হওয়ার পর থেকেই ওই প্রদেশে অস্থিরতা শুরু হয়। ২০১৬ সালে প্রদেশের সংখ্যালঘু শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা নিমর আল নিমরকে সন্ত্রাসবাদের দায়ে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করে সৌদি সরকার।

নিমরকে ফাঁসিতে ঝুলানোর পর শিয়া সংখ্যাগুরু ও মধ্যপ্রাচ্যে সৌদি আরবের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সঙ্গে রিয়াদের সম্পর্ক চরম আকার ধারণ করে। সৌদি আরবের ৩ কোটি ২০ লাখ জনগোষ্ঠীর মধ্যে অন্তত ১৫ শতাংশ শিয়া সম্প্রদায়ের। তবে দেশটিতে শিয়াদের ব্যাপারে কোনো ধরনের পরিসংখ্যান প্রকাশ করে না সৌদি সরকার। মিডল ইস্ট আই, এএফপি

(ওএস/এসপি/মে ১২, ২০১৯)