স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর উত্তরখানের ময়নারটেকের একটি বাসা থেকে উদ্ধার করা মা ও দুই সন্তানের মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়েছে। ময়নাতদন্তের প্রাথমিক প্রতিবেদনে মৃত্যুর কারণ মা-মেয়েকে শ্বাসরোধে হত্যা, ছেলেকে গলাকেটে।

সোমবার বেলা আড়াইটার দিকে ময়নাতদন্ত শেষে ঢাকা মেডিকেল ফরেনসিক মেডিসিন বিভাগের প্রধান ডা. সোহেল মাহমুদ সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান।

গতকাল রবিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে রাজধানীর উত্তরখানের ময়নারটেকের ৩৪/বি বাসা থেকে মা ও দুই সন্তানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পুলিশের ধারণা, ২/৩ দিন আগে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

পুলিশ জানায়, ভেতর থেকে দরজার সিটিকিনি লাগানো ছিল। পুলিশ গিয়ে দরজা ভেঙে পচন ধরা মা ও দুই সন্তানের মৃতদেহ উদ্ধার করে। মা ও মেয়ের মরদেহ ছিল বিছানায় আর ফ্লোরে পড়েছিল ছেলের মরদেহ।

নিহত মায়ের নাম জাহানারা খাতুন মুক্তা (৪৭)। ছেলের নাম মুহিব হাসান রশ্মি (২৮) এবং শারীরিক প্রতিবন্ধী মেয়ের নাম আফিয়া সুলতানা মিম (২০)। দুই সন্তানের বাবার নাম মৃত ইকবাল হোসেন। তাদের বাড়ি কিশোরগঞ্জের ভৈরব থানার জগন্নাথপুর গ্রামে।

মরদেহ উদ্ধারের পর প্রথমে সুরতহাল করে পুলিশ, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। সেখানে তিনটি মরদেহের ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।

ময়নাতদন্ত শেষে সোহেল মাহমুদ বলেন, ছেলে মহিবের গলাকাটা দেখা গেছে। মায়ের গলা ও পেটে কাটা চিহ্ন রয়েছে। তবে মা ও মেয়ে দুজনের মৃত্যু হয়েছে শ্বাসরোধে। আনুমানিক ৭২ ঘণ্টা আগে তাদের মৃত্যু হয়েছে।

তিনি বলেন, তিন মরদেহ থেকে ভিসেরাসহ অন্যান্য নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। চূড়ান্ত প্রতিবেদনে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

ঘটনাস্থল থেকে মরদেহ উদ্ধারের পর উত্তরা বিভাগের এডিসি এএসএম হাফিজুর রহমান রিয়েল জাগো নিউজকে বলেন, ঘরের মেঝেতে প্রচুর রক্ত দেখা গেছে। রক্ত কালো রঙ ধারণ করেছে। ছিল প্রচণ্ড দুর্গন্ধ। পাশে ড্রইং রুমের টেবিলে একটি চিরকুট পাওয়া গেছে। চিরকুটটি মোবাইলফোন দিয়ে চাপা দেয়া ছিল।

চিরকুটে লেখা ছিল, ‘আমাদের মৃত্যুর জন্য ভাগ্য ও আমাদের আত্মীয়-স্বজনের অবহেলাই দায়ী।’ আমাদের মৃত্যুর পর আমাদের সম্পদ গরিবদের মাঝে বিলিয়ে দেয়া হোক। ইতি জাহানারা বেগম।’
পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, দ্বিতীয় রোজায় ওই তিনজন বাসাটি ভাড়া নিয়েছিলেন। গত কয়েকদিন আগে ৪০তম বিসিএস পরীক্ষায়ও অংশ নেয় মুহিব হাসান রশ্মি।

(ওএস/এসপি/মে ১৩, ২০১৯)