বাগেরহাট প্রতিনিধি : বাগেরহাটের মোংলার স্বনামধন্য সেন্ট পলস্ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান বিভাগে এবার এসএসসি পরীক্ষায় এ প্লাস পেয়েছে দৃষ্টি প্রতিবন্ধী মুন্নি শেখ। দরিদ্র পরিবারে জন্ম নেয়া মুন্নি ভবিষ্যৎতে ডাক্তার হওয়ার স্বপ্ন নিয়ে খেয়ে-নাখেয়ে ভলো ফলাফল করলেও অর্থাভাবে কতোটুকু এগিয়ে যেতে পারবে তা নিয়ে শংকা এখন মুন্নি ও তার পরিবার।

মোংলা উপজেলার চাঁদপাই ইউনিয়নের উত্তর কাইনমারী গ্রামের দিনমজুর জাফর শেখের মেয়ে মুন্নি। দুই সন্তান নিয়ে ওই গ্রামে ভাড়া বাড়িতে বসবাস জাফরের। শিশু শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় সহপাঠিদের সঙ্গে খেলতে গিয়ে বাম চোখের দৃষ্টি হারায় সে। সেই থেকেই চোখের চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে উপার্জিত সকল অর্থবৃত্তই শেষ হয়েছে পরিবারটির। এসএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ার পর মেয়ের লেখা পড়ার ভবিষ্যৎ চিন্তায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন জাফরের পরিবার। মেয়েকে কোথায় ভর্তি করাবেন, কিভাবেই করাবেন, টাকা পাবেন কোথায় ভর্তি পরবর্তী আগামী দিনের শিক্ষা জীবনের প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান দিবেন কিভাবে এর যোগফল মিলাতে পারছেন না দরিদ্র জাফর পরিবার।

মুন্নি’র ইচ্ছা ভবিষ্যৎ ডাক্তার হয়ে মানুষের সেবা করার। কিন্তু তার সেই স্বপ্ন পূরণে কে দাড়াবে তার পাশে, কে বাড়াবে সাহায্যের হাত এমন প্রশ্ন প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়ায় তার পরিবারকে। মুন্নি’র মা হোসনেয়ারা বেগম বলেন, মেয়ের বাম চোখের দৃষ্টি ফেরানোর প্রচেষ্টায় চিকিৎসা করাতে গিয়ে একেবারে নিঃস্ব হয়েগেছি। তারপরও চোখ ভাল করা সম্ভব হয়নি। এছাড়া ভাল থাকা ডান চোখও কখনও কখনও ব্যথা অনুভব করছে। লেখা পড়া করতেও খুব কষ্ট হচ্ছে। এতো কষ্টের মধ্যে মেয়ের পরীক্ষার ভাল ফলাফল ক্ষণিকের জন্য আনন্দ বয়ে আনলেও হতাশা পিছু ছাড়ছে না। শেষ পর্যন্ত কি বাম চোখের মতোই নিভে যাবে মুন্নি’র উচ্চ শিক্ষার স্বপ্ন আর প্রতিভার আলো ! এমন প্রশ্ন তুলে চোখের জল মুছছেন অসহায় মা হোসনেয়ারা। আর বাবা জাফরও নির্বাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকেন পড়েন মেয়ের দৃষ্টিহীন চোখে দিকে। তাদের প্রত্যাশা সরকারি কিংবা বেসরকারি একটু সহায়তা পেলেই মুন্নি ভাল কলেজে ভর্তি ও তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে।

(এসএকে/এসপি/মে ১৩, ২০১৯)