স্পোর্টস ডেস্ক : জয়ের জন্য আসল কাজটা করে দিয়েছিলেন বোলাররা। আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে যে ক্যারিবীয় ব্যাটিং লাইনআপ ৩৮১ রান করে ফেলে কিংবা ৩৩৮ রানও তাড়া করে জিতে যায়, সেই ব্যাটিং লাইনআপকে বাংলাদেশ বেঁধে রেখেছে মাত্র ২৪৭ রানে। ব্যাটসম্যানদের জন্য কাজটা এর চেয়ে আর বেশি সহজ হওয়ার কথাও নয়।

সেই সহজ কাজটাকেই শেষ পর্যন্ত বাস্তবে রূপ দিতে পেরেছেন ব্যাটসম্যানরা। ওয়েস্ট ইন্ডিজকে অনায়সেই ৫ উইকেটে হারিয়ে ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনাল নিশ্চিত করলো টাইগাররা। ক্যারিবীয়দের ২৪৭ রানের জবাব দিতে নেমে ১৬ বল হাতে রেখেই জয়ের লক্ষ্যে পৌঁছে যায় বাংলাদেশ।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটি ভেসে যায় বৃষ্টিতে। তৃতীয় ম্যাচে এসে আবারও হারালো ক্যারিবীয়দের। যার ফলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তো বাংলাদেশ উঠলোই, একই সঙ্গে ফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেলো। কারণ কোনো ম্যাচ না জেতা আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট কেবল ২।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে যদি তারা হারিয়েও দেয়, তবুও বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে ওঠা সম্ভব নয়। যার ফলে ১৫ তারিখ বাংলাদেশ আর আয়ারল্যান্ড ম্যাচটি পরিণত হলো কেবল আনুষ্ঠানিকতার।

জয়ের জন ২৪৮ রানের লক্ষ্যে ব্যাট করতে নেমে প্রথম ম্যাচের মতোই দেখে-শুনে, ধীরে-সুস্থে ইনিংসের সূচনা করেন দুই ওপেনার তামিম ইকবাল এবং সৌম্য সরকার। তবে প্রথম ম্যাচের মতো এত বড় জুটি গড়তে পারেননি তারা।

দু’জনের ব্যাটে ৫৪ রান ওঠার পরই বিচ্ছিন্ন হয়ে যান তারা। অ্যাসলে নার্সের একটি ঘূর্ণি বল ডাউন দ্য উইকেটে খেলতে এসে মিস করে ফেলেন তামিম। ফলে বোল্ড হয়ে যেতে হয় তাকে। ২৩ বলে ২১ রান করে ফিরে যান তিনি।

তিন নম্বরে নামা সাকিব আল হাসান সৌম্য সরকারকে নিয়ে ইনিংসের হাল ধরেন। ৫২ রানর জুটি গড়ার পর বিচ্ছিন্ন হয়ে যান সাকিবও। অ্যাসলে নার্সেরই আরেকটি বল খেলতে গিয়ে শর্ট কভারে ক্যাচ দেন রোস্টন চেজের হাতে। ৩৫ বলে ২৯ রান করে আউট হন সাকিব।

তবে সৌম্য সরকার তার নিজের ওপর অর্পিত দায়িত্ব সঠিকভাবেই পালন করে যান। তামিমের সঙ্গে ৫৪ রানের জুটির পর সাকিব আল হাসানের সঙ্গে গড়েন ৫২ রানের জুটি। ৬৭ বলে ৫৪ রান করে অবশেষে সেই নার্সের বলেই সুনিল আমব্রিসের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান সৌম্য।

সৌম্য আউট হওয়ার পর মুশফিকুর রহীম আর মোহাম্মদ মিঠুন মিলে গড়ে তোলেন ৮৩ রানের দারুণ এক জুটি। আগের ম্যাচে ব্যাট করার সুযোগ পাননি মিঠুন। এই ম্যাচে সুযোগটা দারুণভাবে কাজে লাগালেন। ৫৩ বলে খেললেন ৪৩ রানের কার্যকরি এক ইনিংস।

১৯০ রানের মাথায় মিঠুন আউট হওয়ার পর মুশফিকুর রহীম আর মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ মিলে গড়েন আরও একটি ৫০ রানের জুটি। এই জুটিতেই মূলতঃ ওয়েস্ট ইন্ডিজের হাত থেকে ম্যাচ বের করে আনে বাংলাদেশ।

জয় থেকে মাত্র ৮ রান দুরে থাকতে ব্যক্তিগত ৬৩ রানের মাথায় আউট হয়ে যান মুশফিক। কেমার রোচের বলে ড্যারেন ব্র্যাভোর হাতে ক্যাচ দিয়ে সাজ ঘরে ফেরেন তিনি। ৬৩ রানের ইনিংসটি তিনি সাজান ৭৩ বলে ৫টি বাউন্ডারি এবং ১টি ছক্কা দিয়ে।

শেষে জয়ের কাজটি অনায়াসে সেরে আসেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ আর সাব্বির রহমান। ৩৪ বলে ৩০ রানে অপরাজিত ছিলেন রিয়াদ। সাব্বির রহমান কোনো বলই খেলার সুযোগ পাননি। রানের খাতা তো খেলা পরের ব্যাপার।

ক্যারিবীয় বোলারদের মধ্যে অ্যাসলে নার্সই কিছুটা সমীহ আদায় করে নিয়েছেন টাইগার ব্যাটসম্যানদের কাছ থেকে। যে কারণে ১০ ওভারে ৫৩ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন তিনি। কেমার রোচ একটি এবং অন্য উইকেটটি নেন জেসন হোল্ডার।

নিজেদের প্রথম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে হারানোর পর আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে ম্যাচটি ভেসে যায় বৃষ্টিতে। তৃতীয় ম্যাচে এসে আবারও হারালো ক্যারিবীয়দের। যার ফলে ১০ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে তো বাংলাদেশ উঠলোই, একই সঙ্গে ফাইনালও নিশ্চিত হয়ে গেলো। কারণ কোনো ম্যাচ না জেতা আয়ারল্যান্ডের পয়েন্ট কেবল ২।

শেষ ম্যাচে বাংলাদেশকে যদি তারা হারিয়েও দেয়, তবুও বাংলাদেশ এবং ওয়েস্ট ইন্ডিজের ওপরে ওঠা সম্ভব নয়। যার ফলে ১৫ তারিখ বাংলাদেশ আর আয়ারল্যান্ড ম্যাচটি পরিণত হলো কেবল আনুষ্ঠানিকতার।

সংক্ষিপ্ত স্কোর

টস : ওয়েস্ট ইন্ডিজ (ব্যাটিং)
ওয়েস্ট ইন্ডিজ : ২৪৭/৯, ৫০ ওভার (সাই হোপ ৮৭, জেসন হোল্ডার ৬২, সুনিল আমব্রিস ২৩, রোস্টন চেজ ১৯, অ্যাসলে নার্স ১৪; মোস্তাফিজ ৪/৪৩, মাশরাফি ৩/৬০, সাকিব ১/২৭, মিরাজ ১/৪১)।

বাংলাদেশ : ২৪৮/৫, ৪৭.২ ওভার (মুশফিকুর রহীম ৬৩, সৌম্য সরকার ৫৪, মিঠুন ৪৩, মাহমুদউল্লাহ ৩০*, সাকিব ২৯, তামিম ২১; অ্যাসলে নার্স ৩/৫৩, হোল্ডার ১/৪৩, কেমার রোচ ১/৪৬)।

(ওএস/এসপি/মে ১৪, ২০১৯)