স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার জন্য কেরাণীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসানোর যে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে তার কঠোর সমালোচনা করে দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ সরকারের উদ্দেশে বলেছেন, আগুন নিয়ে খেলবেন না, হিংসার আগুনে আপনাদেরই সর্বনাশ হবে।

মঙ্গলবার (১৪ মে) দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

রিজভী বলেন, ‘লন্ডন থেকে প্রধানমন্ত্রী দেশে ফেরার পরপরই সরকারের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় নির্দেশনা দিয়েছে খালেদা জিয়ার মামলা পরিচালনার জন্য কেরানীগঞ্জের কারাগারে আদালত বসাতে। গুরুতর অসুস্থ দেশনেত্রীকে পিজি হাসপাতাল থেকে কেরানীগঞ্জ কারাগারে নেয়ার চক্রান্ত ও ষড়যন্ত্র চলছে।’

তিনি বলেন, ‘গুরুতর অসুস্থ খালেদা জিয়ার চিকিৎসা সম্পন্ন হয়নি, তিনি এখনও বেশ অসুস্থ। চারবারের প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে শিগগিরই কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে নতুন নির্মিত মহিলা কম্পাউন্ডে স্থানান্তর করার অশুভ আয়োজন চলছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। তার নামে ১৭টি মিথ্যা মামলার বিচার কার্যক্রম ঢাকার নাজিম উদ্দিন রোডের পরিত্যক্ত কারাগার থেকে কেরানীগঞ্জের কেন্দ্রীয় কারাগারে স্থানান্তরের প্রজ্ঞাপন জারি করেছে আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়।’

রিজভী বলেন, ‘দেশের প্রতিটি বিবেকবান মানুষ আশা করেছিলেন, এই পবিত্র রমজানে অন্ততঃ হিংসা-বিদ্বেষ, রাগ-ক্রোধ, লোভ-মোহ, প্রতিহিংসা-জিঘাংসা থেকে আত্মশুদ্ধি লাভ করবে সরকার ও সরকার প্রধান। জনগণের নেত্রীকে মুক্তি দিয়ে জনগণের মাঝে ফিরে আসতে দেয়া হবে। একজন নিরপরাধ ৭৪ বছর বয়সী চারবারের প্রধানমন্ত্রীকে মিথ্যা মামলায় অন্যায়ভাবে সাজা দিয়ে কারাবন্দি করে মধ্যরাতের সরকার যে অপরাধ করেছে তা থেকে নিজেদের শুধরে নেবে তারা। কিন্তু বাস্তবে তারা প্রতিহিংসাপরায়ণ মানসিকতা ত্যাগ করতে পারেননি। আদালতকে কুক্ষিগত করে রেখে বেগম জিয়ার জামিনে পদে পদে বাধা দেয়া হচ্ছে।’

বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘আমরা সরকারকে হুঁশিয়ার করে বলতে চাই, আগুন নিয়ে আর খেলবেন না। এই হিংসার আগুনে একদিন হয়তো আপনাদের নিজেদেরই সর্বনাশ হবে। বাংলাদেশের মানুষের প্রিয় নেত্রী, গণতন্ত্রের মা খালেদা জিয়ার জীবন নিয়ে যে ছিনিমিনি খেলছেন এবার সেই ‘ডার্টি গেইম’ বন্ধ করুন। জামিনে হস্তক্ষেপ বন্ধ করুন। আদালতের ওপর প্রভাব বিস্তার বন্ধ করুন। রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের মত প্রকাশের স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ করবেন না। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নিশ্চিহ্ন করার জন্য আদালতের স্বাধীনতাকে কারাগারে বন্দি করবেন না।’

রিজভী বলেন, ‘অবিলম্বে দেশনেত্রীকে মুক্তি দিতে হবে। আপনাদের বর্বর মতলব জনগণের কাছে ফাঁস হয়ে গেছে। জনগণ আর আপনাদেরকে রেহাই দেবে না। সরকার যদি বারবার দেশনেত্রীর জামিনে বাধা দেয় তবে রাজপথেই হবে ফয়সালা। অন্যায়কারী-জুলুমবাজরা কখনও বিজয়ী হতে পারেনি। এই মধ্যরাতের সরকারও পারবে না। এখন বাংলাদেশের সব জনগণ একদিকে আর বর্তমান শাসকগোষ্ঠী আরেক দিকে। দিনের শেষে জনগণের বিজয় অবশ্যম্ভাবী।’

(ওএস/এসপি/মে ১৪, ২০১৯)