নড়াইল প্রতিনিধি : লোহাগড়া পৌর এলাকার লক্ষীপাশা চৌরাস্তা বাজারে আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে বহুতল ভবন নির্মাণের অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার (১৪মে) দুপুরে লোহাগড়া উপজেলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন উপজেলার লক্ষীপাশা গ্রামের শেখ হাবিবুর রহমানের ছেলে আবুল হুসাইন শেখ।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন,লোহাগড়া পৌর এলাকার ৯০ নং লক্ষীপাশা মৌজায় এসএ ৩৪২ নং খতিয়ানভূক্ত ৯২৯ হাল ৩০৭৯ দাগে পৃথক দুটি যৌথ দলিলে আবুল হাসান শেখ ও নুর ইসলাম শেখ ১২ শতক এবং নুর ইসলাম শেখ পৃথক দলিলে আড়াই শতক এবং পৃথক দলিলে আবুল হাসানের নিকট থেকে হুসাইন ৩শতক জমি প্রাপ্ত হয়ে দীর্ঘদিন ধরে ভোগ দখল করে আসছিল। কিন্তু বিরোধপূর্ণ জমির পরিমাপ না করে প্রতিপক্ষ নুর ইসলামসহ তার ভাড়াটে লোকজন নিয়ে জোর পূর্বক আমার জমি দখল করে ইমারত নির্মাণ আইনকে বৃদ্ধাংগুলি দেখিয়ে ৫তলা ভবনের নির্মাণের কাজ শুরু করেছেন।

আমি কাজে বাঁধা দিলে নুর ইসলামসহ তার ভাড়াটে লোকজন আমার ওপর চড়াও হয়। কোন উপায় না দেখে আমি নড়াইলের বিজ্ঞ অতিরিক্ত ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত ২এপ্রিল এম,পি ৮২/১৯ নং মামলা দায়ের করি। মামলা দায়েরের পর আদালতের বিজ্ঞ বিচারক কাগজপত্র পর্যালোচনা করে ওই জমির ওপর ১৪৪ ধারার নিষেধাজ্ঞা জারি করেন। এ ছাড়া, আদালত সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা ও লোহাগড়া থানার ওসিকে সরেজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন।

আদালতের নির্দেশনার পর ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা গত ২৩এপ্রিল এবং লোহাগড়া থানা কর্তৃপক্ষ গত ২৭ এপ্রিল সংশ্লিষ্ট আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করেন। এ দিকে, আদালতের নিষেধাজ্ঞা উপেক্ষা করে নুর ইসলাম বিরোধপূর্ণ জমিতে পূনরায় নির্মাণ কাজ শুরু করেন। এতেও বাঁধা দিলে তিনি ভাড়াটিয়া লোকজন নিয়া আমাকে প্রাণ নাশের হুমকী দেয়। এ ঘটনায় আমি আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে গত ২৩এপ্রিল ফের আদালতের শরনাপন্ন হই এবং আদালত ১৮৮ ধারা মোতাবেক ওই জমিতে পূনরায় নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে লোহাগড়া থানার ওসিকে বিরোধপূর্ণ জমিতে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখার নির্দেশনা প্রদান করেন।

ভুক্তভোগী আবুল হুসাইন আরও বলেন, লোহাগড়া থানা পুলিশ সরেজমিনে উপস্থিত হয়ে জমিতে নির্মাণাধীন ভবনের কাজ বন্ধ করে নোটিশ প্রদান করেন। পক্ষান্তরে, লক্ষীপাশা ইউনিয়ন ভূমি সহকারী কর্মকর্তা পংকজ কুমার দাশ প্রতিপক্ষ নুর ইসলামের কাছ থেকে অনৈতিক সুবিধা নিয়ে আদালতে ‘বিরোধ নাই’ মর্মে মনগড়া ও কাল্পনিক একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছেন। শুধু তাই নয়, প্রতিপক্ষ নুর ইসলাম আমাদের নামে মিথ্যা ও হয়রানীমূলক মামলা-মোকদ্দমা করার জন্য হুমকি-ধামকি দিয়ে আসছে। জমিটি অবিলম্বে দখলমুক্ত করার জন্য তিনি জেলা ও উপজেলা প্রশাসনের সহায়তা কামনা করেছেন। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন শেখ হাবিবুর রহমান, শেখ আবুল হাসান।

এ ব্যাপারে লোহাগড়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) প্রবীর বিশ্বাস গণমাধ্যম কর্মীদের বলেন, জমি দখল করে ইমারত নির্মাণের বিষয়টি আদালত নিষেধাজ্ঞা প্রদান করায় উভয় পক্ষকে নোটিশের মাধ্যমে অবহিত করে সকল প্রকার নির্মাণ কাজ বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অমান্য করলে জড়িতদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

(আরএম/এসপি/মে ১৪, ২০১৯)