গাইবান্ধা প্রতিনিধি : কৃষি নির্ভশীল দেশে কৃষককে ঠকাতে ব্যস্ত সবাই,জমি রোপনে, ফসলের পরিচর্যা করতে সার, কৃটনাশক, সেচসহ ফসল ঘরে উঠা পর্যন্ত শ্রিমক ব্যয় দিয়ে সামান্য কিছু আয় নিয়ে নিম্ন ও মধ্যম শ্রেনীর কৃষকদের জন্য বাপক সংকটময় সময় সবকিছুর দাম বৃদ্ধি হলেও কৃষকের স্বর্ণ ফসলের চাহিদা মতো দাম বৃদ্ধি হয়নি। গাইবান্ধা জেলার সাত উপজেলায় বোরো ধান কাটা মাড়াইয়ের ভরা মৌসুম চলছে। কিন্তুধান কাটা মাড়াইয়ের কাজের কৃষি শ্রমিকের চরম সংকট দেখা দিয়েছে। এক মন ধানের দামেও মিলছে না একজন শ্রমিক। কেননা একজন শ্রমিক ধান কাটতে সাড়ে ৪শ’ টাকা থেকে ৫শ’ টাকা মজুরী নিয়ে থাকে। আবার চুক্তিবদ্ধ শ্রমিকদের দিয়ে এক বিঘা জমির ধান কাটতে খরচ লাগছে ৪ হাজার টাকা। ফলে এ জেলার বোরো চাষিরা পড়েছেন চরম বিপাকে। জমিতে উৎপাদিত ধান বিক্রি করেও খরচ উঠছে না। 

জানা গেছে, বৃষ্টি ও প্রখর রোদ থাকায় এবার জমির ধান একসাথে দ্রুত পেকে গেছে। ফলে একযোগে ধান কাটা শুরু হওয়ায় জেলাজুড়ে কৃষি শ্রমিকের তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে।

অন্যদিকে নতুন ধান বিক্রি হচ্ছে প্রতি মণ ৫শ’ থেকে সাড়ে ৫শ’ টাকা দরে। অথচ একজন শ্রমিকের দৈনিক মজুরি হাকানো হচ্ছে সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা। শ্রমিকের দাম দ্বিগুণ হওয়ায় ক্ষেতের ধান ঘরে তুলতে হিমশিম খেতে হচ্ছে কৃষকদের। গত কয়েকদিনের ঝড়ো হাওয়া ও ঘুর্ণিঝড়ে ফনির কারণে মাঠের বেশির ভাগ ধান নুইয়ে পড়ায় শ্রমিক লাগছে তুলনামূলক বেশী।

সুতরাং মাঠে মাঠে স্বপ্নের সোনালী পাকা ধান থাকলেও কৃষকের মুখে হাসি নেই। কৃষকদের কাছ থেকে জানা গেছে, এক বিঘা জমিতে বোরো ২৮ জাতের চিকন ধান চাষ করতে শ্রমিকের মজুরী, জমি চাষ, তেল, সেচ, সার, কীটনাশকসহ মোট খরচ পড়ছে সাড়ে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। এক বিঘা জমিতে ওই ধান চাষ করে ফলন পাওয়া যাচ্ছে ২০ মণ থেকে ২৪ মণ। কিন্তু বাজারে বোরো ২৮ জাতের ধানের মূল্য এখন সাড়ে ৪শ’ থেকে ৫শ’ টাকা।

মৌসুম সময়ে উৎপাদন ব্যয় মিটিয়ে দরিদ্র কৃষকের পক্ষে ধান মজুদ করে রাখা কোনক্রমেই সম্ভব হয় না। ফলে তারা এই বাজার দরেই বাধ্য হয়ে ধান বিক্রি করছে। এতে এক বিঘা জমির ধান বিক্রি করে সাড়ে ৯ থেকে ১০ হাজার টাকা। যা দিয়ে সে উৎপাদন ব্যয় মেটাতে বাধ্য হচ্ছে। উদ্বৃত্ত থাকছে না কৃষকের ঘরে কোন ধান। অনেক পরিশ্রম করে ধান উৎপাদন করা সত্ত্বেও কৃষকের ঘর থেকে যাচ্ছে না চিরায়ত অভাব।

(এস/এসপি/মে ১৫, ২০১৯)