দুমকি (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর দুমকিতে ছিচকে চুরি আশংকাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রায় প্রতিরাতেই উপজেলা শহরসহ প্রত্যন্ত এলাকায় বাসাবাড়িতে হানা দিয়ে সংঘবদ্ধ চোরচক্র গৃহস্তের নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মোবাইল ফোন ইত্যাদি মূল্যবান মালামাল চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে। বিগত ১মাসে অন্তত: ৩৫/৪০টি বাড়িতে চুরি সংঘঠিত হওয়ায় শ্রীরামপুর ইউনিয়নবাসীর মধ্যে আতংক দেখা দিয়েছে। চুরি ঠেকাতে আতংকিত গ্রামবাসীরা রাত জেগে পাহারা বসালেও রোধ হচ্ছে না চুরি। 

শ্রীরামপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো: আমিনুল ইসলাম সালাম বলেন, বিগত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পর পরই (এপ্রিল মাসের ১ম সপ্তাহ থেকে) উপজেলা শহর ও আশ-পাশের গ্রাম মহল্লায় ছিচকে চুরির ঘটনা ঘটে চলছে। সংঘবদ্ধ চোরচক্র অভিনব কায়দায় বাসাবাড়ির গ্রিল কেটে, দরজা খুলে ঘুমন্ত গৃহস্তের বাসাবাড়িতে হানা দিয়ে নগদ টাকা, মোবাইল ফোন ও স্বর্ণালংকার চুরি করে নিয়ে যাচ্ছে।

বিগত এক মাসে উপজেলা শহর ও সংলগ্ন মুসলিমপাড়া, একতা সড়ক, গ্রামীণ ব্যাংক সড়ক, মাদ্রাসা ব্রিজ, দেবীর চর মডেল স্কুল সড়ক, এলাকায় অন্তত: ২০/২৫টি বাড়িতে চুরি সংঘঠিত হয়। পীরতলা বাজারের তৃতীয় লেনের একটি ফ্লাট বাড়িতে প্রকাশ্য দিনের বেলায় তালা ভেঙ্গে দুধর্ষ চুরির ঘটনা ঘটে। এর ১/২দিন পরে বিশ্ববিদ্যালয়ের পেছনে হাসপাতাল রোডের একটি বাড়িতে চুরি হয়েছে। সম্প্রতি শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ১,২,৩,৪নং ওয়ার্ডের অন্তত: ১৫/২০টি বাড়িতে চুরি সংঘঠিত হয়েছে। প্রায় প্রতিরাতে বিভিন্ন পাড়া-মহল্লায় চোরের উৎপাত দেখা দেয়ায় সাধারন মানুষের মাঝে চুরির আতংক দেখা দিয়েছে।

পুলিশি টহল আর গ্রামবাসীদের রাত জেগে পাহারায় ও রোধ হচ্ছে না ছিচকে চুরি। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসনের সতর্ক পাহারা এড়িয়ে প্রায় প্রতিরাতেই উত্তর দুমকি, দক্ষিণ দুমকি, দুমকি সাতানী, শ্রীরামপুর, বাদুয়া শ্রীরামপুর, পশ্চিম শ্রীরামপুর গ্রামের কোন না কোন বাসাবাড়িতে চুরি ঘটনা ঘটেই চলছে। এতে গ্রামবাসীদের মাঝে বিরাজ করছে চুরির আতংক। শ্রীরামপুর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মো: হুমায়ুন কবির মৃধা বলেন, ছিচকে চোরের উপদ্রুব ঘটনায় জনপ্রতিনিধি ও পুলিশ প্রশাসন এখন রীতিমত বিব্রত। চুরি বন্ধে ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে বিভিন্ন গ্রামে কমিউনিটি পুলিশিং কার্যক্রম জোড়দারে বেশ কয়েকটি সভা করে গ্রামবাসীদের সতর্ক করা হয়েছে। থানা পুলিশের পেট্রোল বৃদ্ধি করে গ্রামবাসীদের নিয়ে রাতভর পাহারার ব্যবস্থা করা হয়েছে।

এদিকে দিনে রাতে সমানে চুরির ঘটনা ঘটতে থাকায় গ্রামবাসির মধ্যে চুরির আতংক দেখা দিয়েছে। এ ব্যপারে দুমকি থানায় লিখিত অভিযোগ করা হয়েছে। জানাশোনা চোরের দল মালিকের অনুপস্থিতি নিশ্চিত হয়েই দিনের বেলায় চুরি সংঘঠিত করেছে বলে এলাকাবাসীদের ধারনা। তবে পুলিশ এসব চুরির ঘটনায় জড়িতদের কাউকেই আটক করতে পারেনি।

দুমকি থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মনিরুজ্জামান চোরের উৎপাতের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, গ্রামবাসীদের সহযোগিতা ছাড়া পুলিশের একার পক্ষে চুরি বন্ধ করা অসম্ভব। তিনি বলেন, প্রায় প্রতিরাতে চুরির খবর শুনা গেলেও বেশীর ভাগই লিখিত অভিযোগ কিম্বা মামলা দিতে অনীহা প্রকাশ করছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না পাওয়ায় পুলিশ কারো বিরুদ্ধে আইনী পদক্ষেপ নিতে পারছে না। তিনি আরও বলেন, পুলিশ সর্বদা তৎপড় আছে এবং উল্লেখিত এলাকায় বেশ কয়েকটি পেট্রোল টিম দেয়া হয়েছে। গ্রামবাসীদের পাহারা আর পুলিশের পেট্রোল জোড়দারে চুরির ঘটনা ক্রমেই হ্রাস পাচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি।

(এস/এসপি/মে ১৬, ২০১৯)