স্পোর্টস ডেস্ক : প্রতিপক্ষের ৩৪০ রানের বড় সংগ্রহের জবাবে ব্যাট করতে নেমে মাত্র ৭৬ বলে সেঞ্চুরি এবং ৮৯ বলে ১১৪ রানের বিধ্বংসী ইনিংস খেলে দলকে জেতানোর অনুভূতিটা নিঃসন্দেহে অনেক বেশি ভালো লাগার। যার সাক্ষী হয়েছেন ইংলিশ ওপেনার জেসন রয়।

তবে তার অনুভূতি যতটা না ছিলো ভালো লাগার, তার চেয়ে বেশি ছিলো নিজের দেড় মাসের বাচ্চাকে নিয়ে চিন্তায় পূর্ণ। কেননা ছোট এ বাচ্চাকে হাসপাতালে রেখেই যে মাঠে ব্যাটিং করেছেন বাবা জেসন রয়।

শুক্রবার রাতে নটিংহ্যামের ট্রেন্টব্রিজে পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩ উইকেটের জয়ে অনন্য এক রেকর্ড গড়েছে ইংল্যান্ড। বিশ্বের প্রথম দল হিসেবে পরপর তিন ম্যাচে ৩৪০ বা তার বেশি রান করে ম্যাচ জিতেছে তারা। নিশ্চিত করেছে সিরিজ জয়।

তবে তাদের আগেই পরপর তিন ম্যাচে ৩৪০ বার তার বেশি রানের রেকর্ড গড়েছিল পাকিস্তান। কিন্তু তারা ব্যর্থ হয়েছে জিততে, আদতে পরপর তিন ম্যাচেই হেরেছে তারা। আগের দুই ম্যাচে পাকিস্তানকে হারানোর মূল কারিগর ছিলেন জস বাটলার এবং জনি বেয়ারস্টো।

শেষ ম্যাচটিতে ৮৯ বলে ১১৪ রানের ইনিংস খেলে নায়ক হয়েছেন জেসন রয়। তবে তার জন্য এ ইনিংস খেলা একদমই সহজ ছিলো না। কারণ মানসিকভাবে তিনি ছিলেন প্রায় ভঙ্গুর অবস্থায়। ম্যাচের দিন সকাল পর্যন্ত ছিলেন মেয়ের সঙ্গে হাসপাতালে।

গত মার্চে পৃথিবীর মুখ দেখেছে রয়ের কন্যাসন্তান এভারলি। শুক্রবার ম্যাচের আগের রাতে হঠাৎ করেই অসুস্থ হয়ে পড়ে ছোট্ট এভারলি। মধ্যরাতেই তাকে নিয়ে হাসপাতালে ছোটেন জেসন রয়, সেখানে ছিলেন সকাল পর্যন্ত। পরে বাসায় ফিরে খানিক বিশ্রাম নিয়ে দলের অনুশীলনের খানিক আগে গিয়ে উপস্থিত হন মাঠে।

এ ঘটনার বর্ণনা দিয়ে স্থানীয় সংবাদমাধ্যমে তিনি বলেন, ‘সকালটা আমার জন্য একদমই সহজ ছিলো না। তাই এ সেঞ্চুরিটি আমার জন্য এবং আমার পরিবারের বিশেষ বলতে পারেন। আমার ছোট মেয়ে হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়ে। রাতে ১.৩০ মিনিটে তাকে নিয়ে হাসপাতালে যেতে হয়, সেখানে আমি ছিলাম সকাল ৮.৩০ মিনিট পর্যন্ত। পরে বাসায় ফিরে কিছুক্ষণ ঘুমিয়ে ওয়ার্মাআপের সময় যোগ দেই দলের সঙ্গে। এ সেঞ্চুরিটা আমার জন্য খুবই আবেগময়।’

এসময় তিনি নিজের অষ্টম সেঞ্চুরিটিকে ক্যারিয়ারের সেরা না মানলেও, বিশেষ এক ইনিংস হিসেবেই বিবেচনা করে। রয় বলেন, ‘আমি হয়তো আমার জীবনের সেরা ছন্দে নেই। আমার জীবনের সেরা ইনিংসের একটিও হয়তো নয় এটি। তবে এটা সত্যি যে তিন অঙ্ক ছোঁয়ার মুহূর্ত আমার জন্য বিশেষ ছিল, এ ইনিংসটি বিশেষ এক ইনিংস। আমি ভাবিইনি এমন ইনিংস খেলতে পারবো।’

(ওএস/এসপি/মে ১৮, ২০১৯)