গৌরীপুর (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি : ময়মনসিংহের গৌরীপুরে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে মাদক ব্যবসায়ী নূরু মিয়া (৪৫) ছুরিকাঘাতে নুরুজ্জামান জনি (৩২) নামক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা খুন হয়েছে। শুক্রবার (১৭ মে) রাত ৮ টার দিকে উপজেলার মাওহা ইউনিয়নের নহাটা বাজারে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটে। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে বিক্ষুব্দ জনতা ওইদিন রাত ১০টার দিকে হত্যাকান্ডে জড়িতদের বাড়িঘরে অগ্নি সংযোগ করে। নিহত জনি কুমড়ী গ্রামের মৃত সিদ্দিকুর রহমান মাস্টারের একমাত্র ছেলে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নহাটা গ্রামের মৃত আজিম উদ্দিনের ছেলে মাদক ব্যবসায়ী নুরু মিয়ার সাথে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে জনির বিরোধ চলছিল। এ নিয়ে গৌরীপুর থানায় পরস্পর বিরোধী মামলাও রয়েছে। ঘটনারদিন জনি ইফতার শেষে বাড়ি থেকে বের হয়ে নহাটা বাজারে রুকন মিয়ার চায়ের দোকানে বসেছিল। এসময় মাদক ব্যবসায়ী নূরু মিয়ার নেতৃত্বে ১৫/২০ জন সশস্ত্র লোক পরিকল্পিতভাবে জনিকে ডেকে নিয়ে সুজন মাহমুদের কম্পিউটারের দোকানের সামনে তার ওপর অতর্কিতে হামলা চালায়।

এসময় জনির বুকে ছুরিকাঘাত ও মুখে ক্ষুর দিয়ে আঘাত করে মারাত্মক রক্তাক্ত জখম করা হয়। প্রতিপক্ষের হাত থেকে বাঁচতে জনি দৌঁড়ে গিয়ে বাজার সংলগ্ন স্থানীয় খোকন মিয়ার পুকুর পাড়ে ওঠে। সেখানে সে অজ্ঞান হয়ে পড়ে। পরে স্থানীয় লোকজন তাকে ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে ময়মনসিংহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক জনিকে মৃত ঘোষণা করে।

এদিকে জনির মৃত্যুর খবর এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে রাত ১০ টার দিকে বিক্ষুব্দ শত শত জনতা হত্যাকান্ডের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে নূরু মিয়া, কাঞ্চন মিয়া, জিলু মিয়া, শিরু মিয়া, মোজাম্মেল, শামছু, হেলিম ও আব্দুল খালেকের বাড়ি-ঘর পুড়িয়ে দেয়।

নিহতের মা ঝরনা খাতুন ও স্বজনরা জানায়, জনি মাওহা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সহ সম্পাদক ছিল। তিনি ময়মনসিংহ আনন্দ মোহন কলেজ থেকে হিসাব বিজ্ঞানে অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেছে। বর্তমানে ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী হিসেবে গৌরীপুর থানায় কর্মরত ছিল। এর পাশাপাশি সে একটি প্রাইভেট কোম্মপানীতে চাকুরি করত।

তারা বলেন, ঘটনার দিন বিকেলে স্থানীয় বৈখেরহাটি বাজারে নূরু মিয়ার সাথে জনির বাকবিতন্ডা হয়। এরপর ইফতার শেষে বাড়ি থেকে কৌশলে মোবাইলে নহাটা বাজারে ডেকে নিয়ে জনিকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করে নূরু মিয়া গংরা।

গৌরীপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, নিহত জনি ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মী হিসেবে গৌরীপুর থানায় কর্মরত ছিল। পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে এ হত্যাকান্ডের ঘটনাটি ঘটেছে। ঘটনাদিন রাতে বিক্ষুব্দ জনতা নূরু মিয়া ও তার সহযোগিদের বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। হত্যাকান্ডে জড়িতদের আটক করতে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে বলে জানান তিনি।

(এসআইএম/এসপি/মে ১৮, ২০১৯)