স্টাফ রিপোর্টার : রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) কোনো তৎপরতা নেই দাবি করে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, সরকারবিরোধী নেতাদের দমন ও ক্ষমতাসীনদের দুর্নীতি মোছার যন্ত্র হিসেবে কাজ করে আসছে দুদক।

সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

রিজভী বলেন, দেশ যে দুর্নীতিতে ছেয়ে গেছে তার প্রমাণ ব্যাংক-বীমা, কয়লা-পাথর, শেয়ার মার্কেট গলাধঃকরণের পর এখন রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পে সাগর চুরির দুর্নীতি। এ খবরে বিস্মিত দেশবাসী। উন্নয়নের কথা বলে রাজনৈতিক উচ্চাভিলাষ বাস্তবায়ন করা হচ্ছে মহাদুর্নীতির ওপর ভর করে। রূপপুর আনবিক প্রকল্পে বালিশ-কেটলিসহ প্রকল্পের বিভিন্ন সরঞ্জামাদি কেনার মহাদুর্নীতির খবরে দেশজুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে।

তিনি বলেন, প্রকল্পে কর্মরত মালি-ড্রাইভারদের বেতন লাখ টাকার কাছাকাছি, যা শুধু নজিরবিহীনই নয় এটি একটি জাহাজ মার্কা দুর্নীতিরই দৃষ্টান্ত। এখানে হাজার হাজার কোটি টাকার দুর্নীতির খবরে দুদকের কোনো তৎপরতা নেই।

রিজভীর বলেন, দেশব্যাপী বিভিন্ন সেক্টরে দুর্নীতি ও লুটপাটের যে মহোৎসব চলছে তাতে ক্ষমতাসীন দলের শীর্ষ নেতৃবৃন্দ জড়িত বলেই এগুলোর কোনো বিচার হচ্ছে না। এ ক্ষেত্রে দুদক নখদন্তহীন নিশ্চল, নির্বিকার প্রাণীর ভূমিকা পালন করছে।

'গণতন্ত্রের অনুপস্থিতিতে জবাবদিহির টেকসই নীতি নেই বলেই লুটপাটের নীতিই প্রাধান্য বিস্তার করেছে। এ জন্য ঋণখেলাপিদের আরও ঋণ দেয়া হচ্ছে, আর মধ্যরাতের ভোটের সহায়তাকারীদের বিনা সুদে গাড়ি বাড়ি কেনার ঋণ দেয়া হচ্ছে। তাই মহাদুর্নীতির মাধ্যমে পকেট ভারী করাই হচ্ছে মিডনাইট সরকারের উন্নয়নের ভেতরের কাহিনি',- বলেন তিনি।

অবিলম্বের দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার মুক্তি দাবি করে রিজভী বলেন, 'দেশনেত্রী গত চারদিন কোনো রকমে জাও ভাত খেয়ে বেঁচে আছেন। তার মুখে ঘাঁ হয়ে ফুলে গেছে। জিহ্বা নাড়াতে পারছেন না। তিনি শয্যাশায়ী। এই রমজানে জেলে তার অবস্থা বিপজ্জনক পর্যায়ে উপনীত হয়েছে।'

প্রধানমন্ত্রীর সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী আপনি অন্যায়ভাবে ‘গণতন্ত্রের মা’-কে বন্দি করে মিডনাইট নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্রকে চূড়ান্তভাবে সমাহিত করেছেন। গণতন্ত্রের এই অকাল প্রয়াণে শোক জানাতেও মানুষ ভয় পাচ্ছে। কারণ, গুম, খুন, বিচারবহির্ভূত হত্যার রক্তপাতের মাধ্যমে যে পিশাচের রাজত্ব কায়েম হয়েছে তাতে মানুষ শঙ্কিত। আইনের শাসনকে ফাঁসিতে লটকিয়ে সন্ত্রাসীরা এলোপাতাড়ি দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দেশব্যাপী। সুতরাং বর্তমান দুঃশাসনের অবসান না হলে দেশে ভয়ের শাসনই জারি থাকবে। সেজন্য ‘গণতন্ত্রে মা’-কে কারামুক্ত করাই এখন গণতান্ত্রিক শক্তির প্রধান দায়িত্ব।

(ওএস/এসপি/মে ২০, ২০১৯)