রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : জমি জবরদখলকারিরা কালিগঞ্জের বিষ্ণুপুর গ্রামের এক আওয়ামী লীগ নেতা,তার স্ত্রী ও দু’ সন্তানকে পিটিয়ে জখমের পর ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনার ৪৮ ঘণ্টায়ও কোন আসামীকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। উপরন্তু মামলা তুলে নেওয়ার জন্য চাপ দেওয়া হচ্ছে নির্যাতিত পরিবারের সদস্যদের। করেছে তার বসত ঘরের আসবাবপত্র। রোববার দুপুর ১২টার দিকে সাতক্ষীরার কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। তাকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।

আহতরে নাম সমীর কুমার মণ্ডল (৬০)। তিনি কালিগঞ্জ উপজেলার বিষ্ণুপুর গ্রামের মৃত সন্ন্যাসী চরণ মণ্ডলের ছেলে।
কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আওয়ামী লীগ নেতা সমীর কুমার মণ্ডল জানান, উপজেলার মনোহরপুর গ্রামের হযরত খাঁ’র ছেলে কামরুল ইসলাম ও ফতেপুর গ্রামের মনিরুল তার বিমাতা ভাই এর কাছ থেকে দু’ কাঠা জমি কিনে তার দখলে থাকা জমির উপর ঘর বাঁধার চেষ্টা করলে তিনি অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে ১৪৫ ধারায় মামলা করেন।

আদালতের নির্দেষ উপেক্ষা করে গত বছরের ১৭ জুলাই কামরুল ঘর নির্মাণের চেষ্টা করলে তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে কামরুল, ফতেপুরের মনিরুল ইসলাম মনি ও তার স্ত্রী জোহরা তার বাড়িতে হামলা চালান। একইভাবে বিলের জমি কেনার বায়নাপত্র করে গত ২ মার্চ জোরপূর্বক তার ভিটা জমি দখল করে বাড়ি বানান সাতক্ষীরা সদর উপজেলার রামেরডাঙা গ্রামের বরকতুল্লাহ সরদারের ছেলে মিজানুর রহমান। মিজানুর রহমান নাশকতা মামলার আসামী বলে তিনি জানতে পারেন। জমি জবরদখলের বিষয়ে থানায় অভিযোগ করলে ক্ষুব্ধ ছিল কামরুল, মিজানুর ও মনিরুল।

বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মাধ্যমে মীমাংসার প্রক্রিয়া চলছিল। বিষয়ংটি জানতে পেরে দুপুর ১২টার দিকে বাড়িতে ঢোকার সময় মিজানুর রহমান, তার স্ত্রী খুকু খানম, কামরুল, মনিরুল, তার স্ত্রী জোহরা , সমরেশ মণ্ডল তাকে ধাওয়া করে। একপর্যায়ে দরজার সামনে তাকে এলোপাতিাড়ি পিটিয়ে জখম করা হয়। তার স্ত্রী ও মেয়েরা তাকে ঘরের মধ্যে নিয়ে গেলে হামলাকারিরা তাদের উপর চড়াও হয়। এমনকি ঘরের মধ্যে থাকা আসবাবপত্র ভাঙচুর করে। লুটপাট করা হয় নগদ ৪৬ হাজার টাকাসহ সোনার গহনা। এ নিয়ে বেশি বাড়াবাড়ি করলে গ্রাম থেকে উচ্ছেদ করা হবে বলে হুমকি দিয়ে তারা চলে যায়। পরে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে কালিগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। এ ঘটনায় রোববার রাতেই থানায় মামলা রেকর্ড করা হয়। অভিযোগ মামলার ৪৮ ঘণ্টা পরেও পুলিশ কোন আসামীকে ধরতে পারেনি। তারা প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়ালেও পুলিশ তাদের ধরছে না।

জানতে চাইলে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা কালিগঞ্জ থানার উপপরিদর্শক আসমত আলী জানান, আসামীরা পলাতক থাকায় তাদেরকে ধরা যাচ্ছে না। তবে মামলা তুলে নেওয়ার হুমকির বিষয়টি তাকে জানানো হয়নি।

(আরকে/এসপি/মে ২১, ২০১৯)