নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর বরেন্দ্র অঞ্চলের স্বাদে গুনে অনন্য আম হিসেবে পরিচিত নাক ফজলী আগামী ১ জুন থেকে গাছ থেকে নামানো শুরু হবে। জেলার আমচাষীরা বর্তমানে গাছ থেকে এ আম নামানোর জন্য সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে। তবে রোজার মাসে আমের চাহিদা কম থাকায় দাম কমের আশংকা করছেন তারা। অন্যদিকে নাক ফজলী আমের গুনাগুন বিচার বিশ্লেষন করে দেশের অভ্যন্তরে এবং বিদেশে রপ্তানীর জন্য প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, নওগাঁয় ১৮ হাজার ৬শ’ হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আম চাষ করা হয়েছে। অধিকাংশ বাগানে নাক ফজলী আম রয়েছে। এছাড়া গোপালভোগ, ল্যাংড়া, আমরুপালি জাতের আম গাছ রয়েছে। এ উপজেলার কৃষকরা কমবেশী প্রত্যেকের বাড়িতে ২-৩টি করে নাক ফজলী আম গাছ লাগিছে। এক কথায় প্রতিটি কৃষকের ঘরে ঘরে এ আম এখন চাষ হচ্ছে।

একটি নাক ফজলী আমের ওজন ৩ শ’ থেকে ৪শ’ গ্রাম পর্যন্ত। পাতলা চামড়া এবং সরু বিচি যা অন্যান্য আমের চেয়ে আলাদা। মিষ্টতার দিক দিয়ে ন্যাংড়া ও আম্রপালি আমের সমতুল্য। এ আমে কোন আঁশ না থাকায় খেতে খুবই সুস্বাদু। আম পাকার পরও শক্তভাব থাকায় সহজেই বাজারজাত করা সম্ভব। নাক ফজলী আম বাংলাদেশে শুধুমাত্র নওগাঁ জেলার ধামইরহাট ও বদলগাছি উপজেলায় বেশী চাষ হচ্ছে। তবে বর্তমানে ধামইরহাট, পত্নীতলা ও জয়পুরহাট সদর উপজেলার এ আমের বিস্তার ঘটেছে। অনেকে মনে করেন, এ আমের নিচের দিকে নাকের মত চ্যাপ্টা হওয়ায় এর নাম করণ হয়েছে নাক ফজলী।

আম চাষীদের কাছ থেকে জানা যায়, নাক ফজলী আম ১৯৬৭ সালে আফতাব হোসেন ভান্ডারীর মাধ্যমে ধামইরহাট উপজেলায় বিস্তার লাভ করে। বর্তমানে বন বিভাগে এমএলএসএস পদে কর্মরত আফতাব হোসেন ভান্ডারী জানান, তার দাদার বাড়ি একই জেলার বদলগাছি উপজেলার ভান্ডারপুর গ্রামে। ভান্ডারপুর গ্রামের তৎকালীন জমিদার খুকুমনি লাহিরীর কাছ থেকে তার দাদা এ আমের জাত সংগ্রহ করেন। জমিদার খুকুমনি লাহিরী ভারতের কলকতা থেকে এ আমের জাত সংগ্রহ করেন। পরবর্তীতে আফতাব হোসেন ভান্ডারী জোড় কলমের মাধ্যমে আজ থেকে প্রায় ৫২ বছর পূর্বে ধামইরহাট উপজেলায় এ আমের বিস্তার ঘটায়।

বর্তমানে উপজেলার মনিপুর, রামরামপুর, আঙ্গরত, চকময়রাম, হরিতকীডাঙ্গা, হাটনগর, পিড়লডাঙ্গা, শিবরামপুর, মইশড়, আগ্রাগুন, আলমপুর, এবং জয়জয়পুর এলাকায় ছোট বড় প্রচুর পরিমাণে নাক ফজলী আমের বাগান রয়েছে। এছাড়াও উপজেলার সর্বত্র কম বেশি এ আমের চাষ হচ্ছে।

(বিএম/এসপি/মে ২১, ২০১৯)