ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে একই পরিবারে ২ মাসের ব্যবধানে দুটি বাল্য বিয়ে দিয়ে আলোচনা-সমালোচনায় পড়েছে ঐ পরিবার। এ নিয়ে এলাকায় দেখা দিয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া।এর ধারা অব্যাহত থাকলে জেলায় বাল্য বিয়ের হার বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার চিলারং ইউনিয়নের বাঁশগাড়া এলাকায় মৃত-পয়জার আলী(কসাই)’র বড় মেয়ে সনাই ও ছোট ছেলে সালাম এর দুই মাসের ব্যবধানে পার্শ্ববর্তী রায়পুর ইউনিয়নে বিয়ে দেয় আত্মীয়-স্বজনরা।সনাই এর বিয়ে হয় রায়পুর ইউনিয়নের বিলডাঙ্গী মটরা এলাকার মো: কালুর ছেলে সোহেল এর সাথে। আর সালাম এর বিয়ে হয় রায়পুর ইউনিয়নের শীতলাগড় এলাকার মো: কুদ্দুস এর এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়ে জেসমিন এর সাথে।

সনাই এর জন্ম সনদ অনুযায়ী জন্ম তারিখ ০৭/০৭/২০০১ইং এবং তার বিয়ে হয় ২১/০২/২০১৯ইং তারিখে।আবার সনাইয়ের চেয়ে বয়সে তার ছোট ভাই সালাম দুই বছরের ছোট হলেও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় সে জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়ে যায়।সেখানে তার বয়স বাড়িয়ে দেওয়া হয়, কিন্তু সে জেসমিন নামে যাকে বিয়ে করে সে আবার ২০১৯ সালেরর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ফেল করে।অর্থাৎ জেসমিনের বয়সও ১৮’র নীচে।

এদিকে বাল্য বিয়ের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে কিছুটা কৌশল অবলম্বন করে মেয়ে ও ছেলের পরিবার।একটি বিয়ে দেওয়া হয় মুন্সি মোহরানায় আর আরেকটি বিয়ে দেওয়া হয় কোর্টের মাধ্যমে।তবে উভয় পরিবারে যোগাযোগ করা হলে কেউ বিয়ের বৈধ কাগজ দেখাতে পারেনি।

চিলারং ইউনিয়নের কাজী আ: কাদের জানান, সংবাদকর্মীরা বাল্যবিয়ে দুটি সম্পর্কে জানতে চাইলে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি সনাই এর বিয়ে দেওয়া হয়েছে মুন্সি মোহরানায় আর সালাম এর বিয়ে নাকি কোর্টে হয়েছে।এর বেশি কিছু জানাতে পারেননি তিনি।

বাল্য বিয়ের বিষয়টি এলাকায় বেশ আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়দের মতামত, এভাবে যদি বাবা-মা’রা তাদের সন্তানদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে দেন তাহলে ছেলে-মেয়ে উভয়েরই স্বস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কা থাকে।তারা বাল্য বিয়ে রোধে সরকারি হস্তক্ষেপ কামনা করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, বাল্য বিয়ে প্রতিরোধে যথেষ্ঠ সচেতন রয়েছে উপজেলা প্রশাসন।আগে “৩৩৩” নাম্বারে ফোনের মাধ্যমে অভিযোগ পেয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হতো।তবে ইদানিং কল আসছে না।তারপরও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও সদর উপজেলা প্রশাসন বাল্য বিয়ে রোধে বিভিন্ন সভা-সেমিনার সহ জনসচেতনতা বাড়াতে নানা কর্মসুচি পালন করে আসছে।তবে কোথাও বাল্য বিয়ে ঘটে থাকলে তা ঘটার আগে উপজেলা প্রশাসনকে অবহিত করার অনুরোধ জানান তিনি।

(এফ/এসপি/মে ২১, ২০১৯)