আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : নাম তার মাহাবুবা মাহি, কিন্তু গ্রামের সবাই তাকে এক নামে চেনে ‘তথ্য আপা’ হিসেবে। যে কোন সমস্যায় সকলের ফোন ধরেন, প্রয়োজনে তার বাড়ি গিয়ে পাশে দাড়ান তিনি। তাই ধনী-দরিদ্র আর ধর্মের বেড়াজাল ছিড়ে গ্রামের সকলের কাছে এখন এক প্রিয় বিস্বস্ত মুখ তথ্য আপা।

পিছিয়ে পড়া গ্রামীণ নারী সমাজকে সরকারের সংশ্লিষ্ঠ দপ্তরের কর্মকর্তার সাথে সাথে সরাসরি যুক্ত করতে মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে জাতীয় মহিলা সংস্থার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার লক্ষে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন (প্রকল্প-২) এর আওতায় হাতে নেয়া হয়েছে ‘তথ্য আপা’ প্রকল্প।

বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার রাজিহার ইউনিয়নের রামানন্দেরআঁক গ্রামের মন্দির আঙ্গিনায় মঙ্গলবার বিকেলে ওই গ্রামের ৫০জন নারীদের নিয়ে এই ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পর উদ্ভোধনী উঠান বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে।

‘তথ্য আপা’ হিসেবে পরিচিত উপজেলা তথ্য ও সেবা কর্মকর্তা মাহাবুবা মাহি’র সভাপতিত্বে পিছিয়ে পড়া নারীদের উদ্ভোধনী উঠান বৈঠকে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস।

উপজেলা এনজিও সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক কাজল দাস গুপ্তর সঞ্চালনায় উঠান বৈঠকে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদে প্যানেল চেয়ারম্যান মলিনা রানী রায়, আমার বাড়ি আমার খামার প্রকল্প সমন্বয়কারী সুব্রত হালদার।

উপস্থিত ছিলেন রামানন্দেরআঁক মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শংকর লাল বিশ্বাস, প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক তপন বসু, স্থানীয় সমাজ সেবক স্বপন হালদারসহ গ্রামের গন্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।

উঠান বৈঠকে বক্তারা বলেন, আধুনিক তথ্য প্রযুক্তি থেকে পিছিয়ে পড়া নারীদের তথ্য ও যে কোন ধরনের সেবা দিতে সরকারের মহিলা ও শিশু বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের উদ্যোগে জাতীয় মহিলা সংস্থার বাস্তবায়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়তে তথ্য যোগাযোগ প্রযুক্তির মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়ন (প্রকল্প-২) এর আওতায় ৫৪৪৯০ দশমিক ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে দেশের ৪শ ৯০টি উপজেলায় ‘তথ্য আপা’ নামের প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। এই প্রকল্পের কর্মকর্তা “তথ্য আপা’ তথ্য কেন্দ্রে ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগ, বিশেষজ্ঞের মতামত গ্রহন, প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা, সরকারী সেবা সমূহের সহজলভ্যতা নিশ্চিত করণ, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইন, ব্যবসা, জেন্ডার, কৃষি বিষয়ক সেবা, ভিডিও কনফারেন্স, ই-লার্নিং, ই-কমার্সসহ নারীদের যে কোন সমস্যা সমাধানে রয়েছে সদা সচেষ্ট। এক কথায় সরকারের সাথে সেবা গ্রহনকারীদের সেতু বন্ধন হিসেবে কাজ করছেন এই তথ্য আপা প্রকল্পের ‘তথ্য আপা’।

কর্মকর্তারা জানান, উপজেলা পাঁচটি ইউনিয়নেই এই ‘তথ্য আপা’ প্রকল্পর তথ্য আপা কাজ করবেন। নারীরা এই ‘তথ্য আপা’র মাধ্যমে আধুনিক সেবা গ্রহন করে ডিজিটাল দেশ বিনির্মানে অগ্রণী ভুমিকা রাখবে বলে আশা ব্যক্ত করেন।

(টিবি/এসপি/মে ২২, ২০১৯)