রঞ্জন কৃষ্ণ পন্ডিত, টাঙ্গাইল : টাঙ্গাইলের ধনবাড়ীতে চলন্তবাসে এক গৃহবধূকে গণধর্ষণ মামলায় চার আসামীকে যাবজ্জীবন কারাদন্ডাদেশ দিলেন আদালত। প্রত্যেক আসামিকে ১ লাখ টাকা করে অর্থদন্ড প্রদানের আদেশ দিয়েছেন। টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক বেগম খালেদা ইয়াসমিন বুধবার দুপুরে তিন আসামির উপস্থিতিতে এ রায় দেন। এ ঘটনায় মামলার দন্ডাদেশ প্রাপ্ত অপর আসামি পলাতক রয়েছে।

দন্ডপ্রাপ্তরা হলো গাড়ি চালক হাবিবুর রহমান (নয়ন) (২৮), হেলাপার মো. খালেক ভুট্টো (২৩) ও সুপাভাইজার আশরাফুল (২৬)। এ ঘটনায় অপর সুপার ভাইজার রেজাউল করিম জুয়েল (৩৮) পলাতক রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষে মামলা পরিচালনা করেন টাঙ্গাইল নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালের বিশেষ পিপি নাসিমুল আক্তার নাসিম। তাকে সহায়তা করেন মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থা টাঙ্গাইল জেলা শাখার সাধারন সম্পাদক এ্যাডভোকেট আতাউর রহমান আজাদ।

মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৬ সালের ১ এপ্রিল কালিয়াকৈরের মৌচাকে কমর্রত এক গার্মেন্টস কর্মী টাঙ্গাইলের ধনবাড়ী বাসস্ট্যান্ড থেকে ভোর পাঁচটার দিকে বিনিময় পরিবহনের একটি বাসে কালিয়াকৈরের উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় বাসে যাত্রী না থাকার সুযোগে বাসটি কিছু দূর যাওয়ার পর সুপার ভাইজার বাসের জানালা দরজা বন্ধ করে দেয়। পরে গাড়ির চালক হাবিবুর রহমান নয়ন তাঁকে পিঁছনের সিটে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষন করে। পালাক্রমে বাসের এক সুপার ভাইজার ও হেলপার ধর্ষণ করে। পরে বাসটি ঢাকা না গিয়ে টাঙ্গাইল ময়মনসিংহ রোডের একটি ফাঁকা জায়গায় ওই গৃহবধূকে নামিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়।

পরে ওই গৃহবধূ মধুপুর বাসস্ট্যান্ডে এসে তাঁর স্বামীকে বিষয়টি জানালে স্বামী তাঁকে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িত বাসের চালক, হেলপার ও সুপার ভাইজার আশরাফুলকে ঐদিনই গ্রেপ্তার করে। গৃহবধুর স্বামী বাদী হয়ে টাঙ্গাইল মডেল থানায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। পরে পুলিশ তদন্ত শেষে চার জনকে আসামি করে চার্জসীট দিয়ে ছয়জনকে অব্যহতি প্রদান করে।

গ্রেপ্তারকৃত তিন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করেন। আদালতে ২২ ধারায় গৃহবধুর জবানবন্দী গ্রহণ করা হয়। জবানবন্দীতে গৃহবধু আশরাফুল নামের আরো একজনের নাম উল্লেখ করে। এতে মোট আসামীর সংখ্যা দাড়ায় ১০ জন। এ মামলায় বাদীসহ ৯ জন আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করে।

(আরকেপি/এসপি/মে ২২, ২০১৯)