স্টাফ রিপোর্টার : নিম্নমানের ৫২ পণ্যের মধ্যে যদি কোনো প্রতিষ্ঠান তাদের পণ্য বাজারজাত করতে চায় তাহলে বিএসটিআই থেকে পুনরায় মান পরীক্ষা করাতে হবে। মান পরীক্ষার পর বিএসটিআই অনুমতি দিলে তা বাজারজাত করা যাবে। এমন নির্দেশনা দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বৃহস্পতিবার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে আজ আবেদনের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান। নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মুহাম্মদ ফরিদুল ইসলাম। ভোক্তা অধিকারের পক্ষে ছিলেন কামরুজ্জামান কচি।

প্রাণ এগ্রোর পক্ষে ছিলেন এম কে রহমান, এসিআই’র পক্ষে ব্যারিস্টার রোকন উদ্দিন মাহমুদ, সান চিপসের পক্ষে ব্যারিস্টার তানজীব উল আলম, বাঘাবাড়ী ঘি’র পক্ষে ছিলেন মোমতাজ উদ্দিন আহমদ মেহেদী।

রিটকারীর আইনজীবী জানান, রিটকারীর আবেদন অনুযায়ী বাজার থেকে ৪০৬টি পণ্যের মান পরীক্ষা করার পর ৩১৩টির ফলাফল প্রকাশ করা হয়। তবে সম্পূরক আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বাকি ৯৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল ১৬ জুনের মধ্যে প্রকাশ করে তার তথ্য আদালতকে জানাতে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

৫২ প্রতিষ্ঠানের মধ্যে কোনো প্রতিষ্ঠান যদি তাদের পণ্য বাজারজাত করতে চায় তাহলে পুনরায় পরীক্ষা করে উত্তীর্ণ হলে এ বিষয়ে আগামী ১৩ জুনের মধ্যে বিএসটিআইকে ফলাফল প্রকাশ করতে হবে।

গত ১২ মে বাজার থেকে নিম্নমানের পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। আদেশ বাস্তবায়ন করে বৃহস্পতিবার আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

গতকাল বুধবার আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর।

এতে ৫২ পণ্যের একটির প্যাকেটও জব্দ করার বিষয়টি না থাকায় আজ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করেন আদালত।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবীর উদ্দেশ্যে আদালত বলেন, পণ্য জব্দ ও প্রত্যাহার করতে আদেশ দেয়া হয়েছিল। আপনারা একটি মসলার প্যাকেটও জব্দ করতে পারেননি। ভদ্রতার একটি সীমা আছে। ভদ্রতাকে দুর্বলতা মনে করবেন না। আপনারা চিঠি দিয়েছেন, অনুরোধ করেছেন, কিন্তু পণ্য প্রত্যাহারের ব্যবস্থা নেননি।

আদালত বলেন, আপনাদের ১৭ জন জনবল। ম্যাজিস্ট্রেট-পুলিশ মিলে একটি পণ্যও জব্দ করতে পারলেন না? এমনটি হলে চাকরি করার দরকার কী? বড় বড় কোম্পানিকে ভয় পান। সেটা হলে চেয়ার ছেড়ে দিয়ে বাড়িতে গিয়ে রান্নাবান্না করলেই হয়। নইলে কোনো ব্যাংকের কেরানির চাকরি নিলেই হয়। বসে বসে টাকা গুণবেন, টাকার হিসাব রাখবেন।

আদালত আরও বলেন, বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে সরে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। সোজা না বলে বাঁকাভাবে বলছেন।

নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের আইনজীবী জানান, তিনি রাতে নির্দেশনা বাস্তবায়নবিষয়ক প্রতিবেদন পেয়েছেন। এ সময় আদালত বলেন, আরেকটা অজুহাত দিলেন।

বিএসটিআই’র পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের ৫২ পণ্য বাজার থেকে না সরানোয় ক্ষোভ প্রকাশ করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে তলব করা হয়েছে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানকে। আগামী ১৬ জুন চেয়ারম্যানকে হাইকোর্টে হাজির হতে হবে। তার বিরুদ্ধে কেন আদালত অবমাননার অভিযোগ আনা হবে না- তা জানাতে বলা হয়েছে।

(ওএস/এসপি/মে ২৩, ২০১৯)