চাটমোহরে অধ্যক্ষের অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
চাটমোহর (পাবনা) প্রতিনিধি : পাবনার চাটমোহর সরকারি কলেজের (সদ্য জাতীয়করণকৃত) অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি, হয়রানি, স্বেচ্ছাচারীতা ও ষড়যন্ত্রের প্রতিবাদে মানববন্ধন কর্মসূচী অনুষ্ঠিত হয়েছে।
রবিবার সকাল ১১টায় কলেজ গেট এলাকায় তীব্র গরম ও রোদ উপেক্ষা করে কলেজের শিক্ষকবৃন্দের আয়োজনে ঘন্টাব্যাপি এ মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। শিক্ষক-শিক্ষার্থী, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিক ও সাধারণ মানুষ একাত্মতা ঘোষণা করে মানববন্ধনে অংশ নেন। মানববন্ধনে প্লেকার্ড হাতে দাঁড়িয়ে অংশ নেয় কোমলমতি শিশুরাও।
চাটমোহর সরকারি কলেজের ইতিহাস বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মো. কামাল মোস্তফার সভাপতিত্বে মানববন্ধকালে বক্তব্য দেন, চাটমোহর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল হামিদ মাস্টার, ভাইস চেয়ারম্যান ইসাহাক আলী মানিক, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফিরোজা পারভীন, পৌর আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ ইদ্রিস আলী, প্রভাষক লিলি পারভীন, প্রেসক্লাবের সভাপতি রকিবুর রহমান টুকুন, ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি কে এম বেলাল হোসেন স্বপন, প্রাক্তন ছাত্র মোজাম্মেল হক, অভিভাবক রিপন হোসেন, উপজেলা ছাত্রলীগের সেক্রেটারী রাজিব কুমার বিশ্বাস প্রমুখ।
মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী এই কলেজকে রক্ষা করতে হলে দুর্নীতিবাজ অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানকে অবিলম্বে বহিস্কার করতে হবে। নইলে এরপর চাটমোহর বাসী তার বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করবে।
উল্লেখ্য, এরআগে গত কয়েকদিন ধরে আন্দোলনরত শিক্ষকরা পৌর শহরসহ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় অধ্যক্ষ মিজানুর রহমানের অসারণ চেয়ে লিফলেট বিতরণ করেন। এরপর দেয়ালে দেয়ালে তার (অধ্যক্ষ) দুর্নীতি’র চিত্র তুলে ধরে পোস্টারিং করা হয়।
অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চেয়ে অধ্যক্ষ মো. মিজানুর রহমানের মোবাইলে বারবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে তিনি ফোনটি বন্ধ করে দেন। এরপর পৌর শহরের কালী সাগর পাড়ে তার বাড়িতে গিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।
এ সময় তার স্ত্রী একই কলেজের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক শাহীণুর আয়েশা সিদ্দীকা তার স্বামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ মিথ্যা বলে দাবি করেন।
উল্লেখ্য, অধ্যক্ষের অপসারণ দাবিতে এবং দূর্নীতির ১২ দফা উত্থাপন জানিয়ে কলেজের শিক্ষকরা রাস্তায় নেমে মানুষের হাতে হাতে লিফলেট বিতরণ শুরু করে বৃহস্পতিবার থেকে। এরপর চাটমোহর পৌর শহরে ব্যাপক পোস্টারিং করেছে। এছাড়া থানায় পাল্টাপাল্টি জিডি করেছেন ৫১ জন শিক্ষক ও অধ্যক্ষসহ ১২ জন শিক্ষক।
পোস্টারে উল্লেখিত ১২ দফার মধ্যে বলা হয়েছে, অধ্যক্ষ মোঃ মিজানুর রহমান প্রতারণার মাধ্যমে ১২ বছরের কম অভিজ্ঞতা নিয়ে এবং সহকারী অধ্যাপক না হয়েও ফরিদপুর উপজেলার দিঘুলিয়া এ জেড স্কুল এন্ড কলেজে প্রতারণার মাধ্যমে নিয়োগ লাভ করেন, অধ্যক্ষ কলেজ সরকারিকরণ ঘোষনা হওয়ার পর গভর্নিং বডিকে না জানিয়ে ব্যাক ডেট দিয়ে রেজুলেশন টেম্পারিং করে রাতের অন্ধকারে জনবল কাঠামোর অতিরিক্ত ২২ জন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছেন, অধ্যক্ষ স্বজনপ্রীতির মাধ্যমে নিজ স্ত্রী, বোন, শ্যালক-শ্যালিকা, চাচাতো, ফুফাতো, খালাতো ভাই বোনদের নিয়োগ দিয়ে মেধাবীদের বঞ্চিত করেছেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। ইউএনও কলেজের কাগজপত্র থানা হেফাজতে রেখেছেন।
(এস/এসপি/মে ২৬, ২০১৯)