নওগাঁ প্রতিনিধি : নওগাঁর ধামইরহাটে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) নির্মিত গ্রোথ সেন্টার হিসেবে পরিচিত ৩টি খাদ্য গুদাম ব্যবহার না হওয়ায় দির্ঘদিন ধরে অযত্ন আর অবহেলায় পড়ে রয়েছে। অথচ এসব গুদাম সংস্কার করলে এখানে শত শত টন খাদ্যশস্য মজুদ রাখা সম্ভব। এলাকাবাসী এসব খাদ্য গুদাম সংস্কার পূর্বক ব্যবহার উপযোগি করার জন্য জোর দাবী জানিয়েছেন।

ধামইরহাট এলজিইডি সূত্রে জানা গেছে, বিগত ১৯৭৯ থেকে ৮১ সালের দিকে তৎকালিন সরকার গুরুত্বপূর্ণ ও বড় হাট বাজারের সন্নিকটে বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয়ে এসব খাদ্যগুদাম নির্মাণ করেছিলেন। লক্ষ্যছিল কৃষকের উৎপাদিত পণ্য সামগ্রী হাট থেকে সরকারিভাবে কিনে এসব খাদ্য গুদামে রাখা হবে। সেই লক্ষ্যে এলজিইডির পক্ষ থেকে ধামইরহাট উপজেলায় ৩টি বড় হাট বাজারে খাদ্য গুদাম নির্মাণ করেছিল। ২শ’ ৫০ মে.টন ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন এসব খাদ্যগুদাম হলো, ধামইরহাট হাটখোলা, মঙ্গলবাড়ী হাটখোলা ও রাঙ্গামাটি হাটখোলা। নির্মানের পর থেকেই প্রায় অব্যবহৃত হিসেবে পড়ে রয়েছে গুদামগুলো। অথচ এসব গুদাম সংস্কার করলে তিনটি গুদামে ৭শ’ ৫০ মে.টন খাদ শস্য রাখা সম্ভব।

বর্তমানে ধামইরহাট উপজেলায় প্রায় ১৬ হাজার ৪শ’ ৫০ হেক্টর জমিতে এবার বোরো ধান চাষ করা হয়েছে। ফলনও ভালো হয়েছে। বাজারে বর্তমানে প্রতিমণ ধান ৬শ’ ৩০ থেকে ৬শ’ ৫০ টাকা দরে কেনা বেচা চলছে। সরকারিভাবে প্রতি মণ ধানের ক্রয় মূল্য ১হাজার ৪০ টাকা। সরকারি খাদ্য গুদামে কৃষক ধান বিক্রি করতে পারলে ধানের উৎপাদিত খরচ তোলা সম্ভব। কিন্ত গুদাম সংকটের কারনে সরকারিভাবে এ উপজেলায় মাত্র ৫শ’ ৮ মে.টন ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। অথচ এ তিনটি গুদাম সংস্কার করলে এখানে আরও ৭শ’ ৫০ মে.টন ধান রাখা সম্ভব। এতে কৃষকদের কাছ থেকে বেশি ধান কেনা যেত। ফলে কৃষক তার পণ্যের ন্যায্য মুল্যও পেত।

এ ব্যাপারে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর ধামইরহাটের উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ আলী হোসেন বলেন, গ্রোথ সেন্টার হিসেবে পরিচিত এই তিনটি গুদামের মধ্যে মঙ্গলবাড়ী হাটের গুদাম সংস্কার করলেও ব্যবহার উপযোগি করা সম্ভব নয়। লোকজন যত্রতত্রভাবে ওই গুদাম ব্যবহার করার ফলে সেটি নষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। অপরদিকে ধামইরহাট হাটখোলা খাদ্যগুদামটি ২০২১ সাল পর্যন্ত জনৈক ব্যক্তিকে লীজ দেয়া হয়েছে। তবে রাঙ্গামাটি হাটের গুদাম লীজ দেয়া হয়নি।

তিনি আরও বলেন, খাদ্য গুদামগুলো সংস্কারের জন্য উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে। উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষ স্থানীয়ভাবে লীজ প্রদান করে গুদামগুলোর সংস্কার কাজ করানোর পরামর্শ দিয়েছেন। এদিকে এলাকার সুধীমহল সংস্কার পূর্বক এ তিনটি খাদ্য গুদামকে ব্যবহার উপযোগি করে খাদ্য বিভাগের আওতায় নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্র্তৃপক্ষের নিকট জোর দাবি জানিয়েছেন।

(বিএম/এসপি/মে ২৭, ২০১৯)