মোঃ আব্দুল কাইয়ুম, মৌলভীবাজার :  মৌলভীবাজার জেলা বারের আইনজীবী আবিদা সুলতানাকে হত্যার ঘটনায় সন্দেহভাজন আসামী মসজিদের ইমাম তানভীর আলমকে শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশ আটকের পর তাকে নিয়ে নানা তথ্য বের হয়ে আসছে। 

জানা যায়, ঘাতক তানভীর হত্যার ঘটনা আড়াল করতেই শ্রীমঙ্গল উপজেলার কালাপুর ইউনিয়নের বরুনা মাদ্রাসা মসজিদকে বেছে নেয়। সেখানে দেশের নানা প্রান্থ থেকে ২০ রমজানের পর থেকে পরবর্তি ১০দিন ইতিকাফের জন্য মুসল্লিরা জড়ো হন, সেই সুবাধে ঘাতক তানভীরও এই মসজিদে খুনের ঘটনা থেকে বাঁচতে ইতিকাফকে পুঁজি করে ঐতিহাসিক বরুনা মসজিদকে বেছে নেয়। পুলিশ জানায় সাড়া দেশ থেকে কয়েকশ মুসল্লি রমজানে ইতিকাফের জন্য এই মসজিদে একত্রিত হন ,আর সেই সুযোগ কাজে লাগিয়ে তানভীর আশ্রয় নেয় এই মসজিদে। মসজিদ কতৃপক্ষের সাথে আগে থেকে কোন পরিচয় ছিলনা বলেও নিশ্চিত করেন পুলিশের এক কর্মকর্তা।

শ্রীমঙ্গল থানার অফিসার ইনচার্য (ওসি) আব্দুস ছালেক দুলাল জানান , খুনের ঘটনা থেকে বাঁচতে তানভীর বরুনার মসজিদে আশ্রয় নেয় ইতিকাফের উদ্দেশ্যে। তিনি বলেন ঘটনার সাথে ইমাম তানভীরের সম্পৃক্ততা অনেকটা স্বীকার করে নিয়েছে আমাদের কাছে। এসময় তিনি আরো বলেন বুধবার (২৯মে) দুপুর দেড়টার দিকে বরুনা এলাকার গাড়ী চালক ইলিয়াস আহমদ শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশকে আটক আসামী তানভীরের ব্যবহার করা ব্যাক্তিগত একটি স্মার্টফোন পাওয়ার খবর দিলে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী হাফেজ জুবায়ের বলেন ইমাম তানভীর মাত্র ১হাজার টাকা দামে স্মাটফোনটি বরুনার বিশিষ্ট আলেম হাফিহ মাওলানা ওলিউর রহমানের গাড়ি চালক ইলিয়াসের নিকট বিক্রি করে । পরে তিনি পুলিশকে খবর দিলে শ্রীমঙ্গল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফজলে রাব্বির নেতৃত্বে পুলিশ সেটি উদ্ধার করে।

এদিকে পুলিশের ধারনা উদ্ধার হওয়া স্মার্টফোন থেকে আইনজীবী খুনের ঘটনার গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া যাবে।

এর আগে গত সোমবার (ঘটনার পরদিন ) দুপুর ১টার দিকে ছদ্মবেশে শ্রীমঙ্গল থানার ওসি আব্দুস ছালেকের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল শ্রীমঙ্গল উপজেলার বরুনার বড় মসজিদ থেকে তানভীরকে আটক করতে সক্ষম হয়।

এদিকে এঘটনায় আবিদা সুলতানার স্বামী শরীফুল ইসলাম বাদী হয়ে মসজিদের ইমাম তানভীর আলমকে প্রধান আসামী করে তানভীরের স্ত্রী হালিমা সাদিয়া ও মা নেহার বেগম ও ভাই আফসার আলমকে আসামী করে বড়লেখা থানায় একটি মামলা দায়ের করেন । এই মামলায় অজ্ঞাত কয়েকজনকে আসামী করা হয় ।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বড়লেখা থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) জসিম উদ্দিনের আবেদনের প্রেক্ষিতে মঙ্গলবার দুপুরের দিকে আসামীদের জিজ্ঞাসাবাদের আবেদন করলে বড়লেখার জ্যৈষ্ঠ বিচারিক হরিদাস আসামী তানভীরকে ১০দিনের রিমান্ড ও তানভীরের স্ত্রী ও মাকে ৮দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

(একে/এসপি/মে ২৯, ২০১৯)