রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে ঢুকে জ্যেষ্ট সাংবাদিকদের উপর সশস্ত্র হামলা চালিয়েছে। বৃহষ্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে ঘণ্টাব্যাপি হামলায় প্রেসক্লাবের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ১০জন আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে আশঙ্কাজনক অবস্থায় মোহনা টিভির সাতক্ষীরা প্রতিনিধি আব্দুল জলিলকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। অন্যরা হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।

এদিকে ঘটনার সময় শহীদ আব্দুর রাজ্জাক পার্ক থেকে প্রেসক্লাবের বাইরে পর্যন্ত দেড় শতাধিক দাগী সন্ত্রাসী মাদকসেবী ও চোরাচালানিকে মহড়া দিতে দেখা গেছে। এছাড়া সাতক্ষীরার এক সাংসদের দুই ভাই মাহমুদ হাসান লাকি ও মাহি আলমকেও ওই সন্ত্রাসীদের সাথে ঘোরাফেরা করতে দেখা যায়।

প্রত্যক্ষদর্শী ও সিসি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে জানা গেছে, দুপুর ১২ টার দিকে মনিরুল ইসলাম মিনি, মনিরুল ইসলাম মনি, মোস্তাফিজুর রহমান উজ্জল, শামীম পাপরভেজ, শেখ কামরুল, শহীদুল ইসলাম, অমিত বাবু(লোহার রড), তুহিন, খন্দকার আনিছুর রহমান(হাতে ক্রিকেট স্ট্যাম্প),শাহ আলমসহ বহিরাগত ২৫ থেকে ৩০জন সন্ত্রাসী বীরদর্পে প্রেসক্লাব ভবনে ঢুকে পড়েন। তাদের মধ্যে কয়েকজন হৈ হুল্লোড় করতে করতে প্রথমেই সিসিটিভি ক্যামেরার কানেকশন টেনে ছিড়ে ফেলে।

অমিত বাবু লোহার রড দিয়ে সাংবাদিক জলিলকে মারতে মারতে বাইরে বের করে এনে মাথা ফাটিয়ে দেয়। পরে তাকে এলোপাতাড়ি লোহার রড দিয়ে পেটানো হয়। একইসাথে অন্য সন্ত্রাসীরা প্রেসক্লাব সভাপতি আবু আহম্মেদ, সাধারণ সম্পাদক মমতাজ আহম্মেদ বাপ্পি, সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবুল বারী, প্রথম আলোর স্টাফ রিপোর্টার কল্যাণ ব্যাণার্জীসহ কয়েকজনকে পিটিয়ে জখম করে।

সাংবাদিকরা বাঁচাও বাঁচাও বলে চিৎকার করার পরও বারবার টেলিফোন পেয়েও মাত্র ১০০ গজ দুরে থাকা সাতক্ষীরা থানা পুলিশ আসতে দেরি করে ফেলে। ততক্ষনে রক্তাক্ত অবস্থায় সাংবাদিকরা আহাজারি করতে থাকেন। ঘটনার সময় বিএনপি নেতা কেএম আনিসুর রহমান ওসির সামনে বসে এই হামলা মনিটরিং করছিলেন বলে জানা গেছে।

এদিকে খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক এসএম মোস্তফা কামাল , পুলিশ সুপার সাজ্জাদুর রহমান , সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোন্তাফিজুর রহমান এবং উর্দ্ধতন পুলিশ কর্মকর্তারা প্রেসক্লাবে আসেন। তারা দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেন।

এদিকে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে এই সন্ত্রাসী হামলার প্রতিবাদে শুক্রবার সকাল ১০টায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচির ডাক দিয়েছে প্রেসক্লাব।

উল্লেখ্য গত ২০ মার্চ অসৌজন্যমূলক আচরণের কারণে সাতক্ষীরা সদর আসনের সংসদ সদস্য মীর মোস্তাক আহমেদ রবিকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব। এ ঘটনার আড়াই মাস পর গত বুধবার সাতক্ষীরা প্রেসক্লাব সেই সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেয়। এর মাত্র কয়েক ঘন্টা পর সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটলো।

(আরকে/এসপি/মে ৩০, ২০১৯)