মানিক সরকার মানিক, রংপুর : পবিত্র ঈদের এখনা দু’চারদিন বাকী থাকলেও রংপুরের বাজারে পোলাওয়ের চাল, আদা রসুন পেঁয়াজ আর ছোট এলাচসহ ঈদ কেন্দ্রীক পণ্য সামগ্রির দামে আগুন লেগেছে। চাল, তেল, পেঁয়াজ, কাঁচা মরিচ আর রসুনের দর সামান্য বাড়লেও অস্থির করে তুলেছে আদার বাজার। মাত্র সপ্তাহখানেক আগেও যে আদা বাজারে খুচরা বিক্রি হয়েছে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা কেজি দরে, বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ২২০ থেকে ২৫০ টাকায়। যা গতবারের তুলনায় দ্বিগুণেরও বেশি। তবে সেমাই, চিনিসহ মাছ মাংসের দাম কিছুটা বাড়লেও তা রয়েছে ধরাছোয়ার মধ্যেই। আকস্মিক এই ঈদ পণ্য দরের ছন্দপতনে বিস্মিত হয়ে পড়েছেন সাধারণ ক্রেতারা। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, পাইকারী বাজারে দাম বাড়ালে তাদের করার কী আছে?

এসবের বাজারে এখনও ক্রেতার সমাগম তেমন চোখে না পড়লেও পণ্য সামগ্রির দর দেখে হতাশ সাধারণ ক্রেতারা। বিক্রেতারা বলছেন, ক্রেতারা এখনও শাড়ি, জামা প্যান্ট আর জুতা স্যান্ডেল কেনাকাটা নিয়ে ব্যস্ত। কাঁচা মাল আর চাল মশলার বাজারে আসবে দু’এক দিন আগে।

শনিবার রংপুর কেন্দ্রীয় সিটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে দরের এই ছন্দপতন। সবচে ভাল পোলাওয়ের চাল ‘চিনিগুড়া’র কেজি চার পাঁচদিন আগেও ৮৫ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হলেও বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১০৫ থেকে ১১০ টাকা দরে। তবে অন্যান্য চাল রাজভোগ, রাধুনী, কাটারীভোগ এসবেরও দাম বেড়েছে কেজিতে ২/৩ টাকা করে।

অন্যদিকে বিভিন্ন মানের সেমাইয়ের দাম রয়েছে আগের মতই ৪৫/৫০ টাকা কেজি। যে মশুরের ডাল দু’দিন আগেও বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি দরে বর্তমানে তা বিক্রি হচ্ছে ১০০ থেকে ১০৫টাকা দরে। বেড়েছে ছোট এলাচের দামও। সেমাই তৈরিতে অতি প্রয়োজনীয় উপাদান এই ছোট এলাচ ক’দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৬’শ থেকে ১৭’টাকা কেজিতে, এখন তা ২২’শ থেকে ২৪’শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৪০ টাকার কাঁচা মরিচ এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। এছাড়া করলা, বেগুন, পটল, ঝিঙ্গার দাম রয়েছে অপরিবর্তিত। আর সুখের খবর হচ্ছে সোয়ারিন তেলের দাম ৫ লিটারের বোতল এখন বিক্রি হচ্ছে আগের চেয়ে ৪/৫টাকা কম দরে।

অন্যদিকে বিভিন্ন প্রজাতির মাছ মাংসের দামও বেড়েছে খানিকটা। সবমিলেই ঈদের আগে অস্থিতিশীলতার সৃষ্টি হয়েছে কাঁচা ও মশলার বাজারে।

ক্রেতারা এই মূল্য বৃদ্ধির জন্য আড়তদার সিন্ডিকেটকে দায়ি করে বলছেন, জেলা ও সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ মাঝে মধ্যে এসবের মনিটরিং করলেও পরে যা হবার তাই হয়। আর আড়তদার-ব্যবসায়ীরা বলছেন, বৃষ্টি এবং নানা কারণেই মালের আমদানি কম হওয়ায় দর কিছুটা বেড়েছে। তারা জানান, কাঁচা তরকারী পচনশীল এসব ধরে রাখার কোন উপায় নেই। ফলে বেশি দামেই বেচতে হচ্ছে তাদের। আর আদার এতবেশি দাম সম্পর্কে তাদের ভাষ্য, এমনিতেই এ সময়টায় আদার চাহিদা বেশি, তার উপর আবাদ কম হয়েছে। এটিও পচনশীল হওয়ায় হিমায়িত করে রাখা সম্ভব হয় না।

ফলে চলতি বছরের শুরু থেকেই এর দাম বেড়েছে। এখানে তাদের কিছু করার নেই। এসব বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসক এনামুল হাবিবের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, তাদের পক্ষে প্রতিনিয়তই বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে। কাচাঁ বাজারের পণ্যের দাম প্রতিনিয়তই ওঠানামা করে। তবে কোন ব্যবসায়ী বা সিন্ডিকেট যদি পণ্য মজুদ করে দাম বৃদ্ধির অপচেষ্টা করে তাহলে তাদের বিরুদ্ধে অবশ্যই ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে এবং হবে।

(এম/এসপি/জুন ০১, ২০১৯)