স্টাফ রিপোর্টার : বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী বলেছেন, ‘বর্তমান দুঃশাসনের কবলে পড়ে দেশের মানুষের মাঝে ঈদ আনন্দ নেই।’

তিনি বলেন, ‘গত কয়েকদিন ধরে সরকারের মন্ত্রী ও কতিপয় নেতা বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে লাগামছাড়া বক্তৃতা দিচ্ছেন। ঈদুল ফিতরের প্রাক্কালে খুব বিস্মিত হচ্ছি তাদের কথা শুনে। তারা কথার তাল লয় হারিয়ে ফেলছেন বলে অনুমিত হচ্ছে।’

মঙ্গলবার (৪ মে) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।

রিজভী বলেন, ‘সোমবার (৩ মে) আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেছেন, খালেদা জিয়ার মুক্তির জন্য বিএনপি কোনো উত্তাপ সৃষ্টি করতে পারেনি।’- ওবায়দুল কাদেরের এ কথা শুনে আবারও সুপ্রমাণিত হলো যে বেগম জিয়া আইনি প্রক্রিয়ায় নয় অবৈধ আওয়ামী সরকারের নির্দেশেই কারাগারে বন্দী।’

ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘আপনি তো ভিনগ্রহের বাসিন্দা বা এলিয়েন নন। কিন্তু আপনি আসল সত্যটা বলতে পারবেন না মন্ত্রীত্ব রক্ষার স্বার্থে। দেশের বিচার ব্যবস্থা কি স্বাধীন কাদের সাহেব? ’

রিজভী বলেন, ‘অন্য কোনো কারণে নয় শেখ হাসিনা প্রতিহিংসা কারণে বেগম খালেদা জিয়া আজ কারাগারে। কেবল তাই নয়, বাড়াবাড়ি করলে সারাজীবন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রাখা হবে ঘোষণা দিয়ে লন্ডন থেকে দেশে ফিরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেশনেত্রীকে কেরানীগঞ্জ কারাগারের নির্জন প্রকোষ্ঠে বন্দী রাখার পদক্ষেপ নিয়েছেন। তার জামিনযোগ্য জামিন বন্ধ রেখেছেন। ওবায়দুল কাদের সাহেব, আপনার নেত্রীকে জিজ্ঞেস করবেন কি, তিনি আর কতদিন ক্ষমতালিপ্সায় দেশের প্রাণপ্রিয় নেত্রী বেগম জিয়াকে বন্দী রেখে শাস্তি দিবেন? আর কতদিন লাগবে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতে? দেশের প্রতিটি মানুষ জানেন, আইনি লড়াইয়ে খালেদা জিয়ার মুক্তি হবে না। কারণ আইনি প্রক্রিয়া শেখ হাসিনার আঁচলে বন্দী।’

তিনি বলেন, ‘একদলীয় হানাদারি শাসনের ঘন অন্ধকার দূর করে আলোর প্রত্যাশাপূরণে দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি অপরিহার্য। অবিলম্বে বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্তি দিন।’

রিজভী বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাহেব সড়ক-মহাসড়ক নিয়ে গত কয়েক দিন কত বক্তব্য দিয়েছেন তা নিশ্চয় আপনারা ভুলে যাননি? তিনি বলেছেন এবারের ঈদযাত্রা ইতিহাসের সবচেয়ে স্বস্তিদায়ক হবে। আমি গতকালও বলেছি এবারের ঈদ হচ্ছে সবচেয়ে বেদনাদায়ক। এ বেদনায়ক চিত্র সর্বত্র ফুটে উঠেছে। ঈদযাত্রাকে কেন্দ্র করে গণপরিবহনে যে সীমাহীন নৈরাজ্য চলছে ইতিহাসে এমন ঘটনা আগে কখনও ঘটেনি। ২০০ টাকার ভাড়া ৮০০ টাকা, ৫০০ টাকার ভাড়া ২০০০ টাকা পর্যন্ত নেয়া হচ্ছে, রাজধানীর অভ্যন্তরীণ পরিবহনে ৫০ টাকার নিচে ভাড়া নেয়া হচ্ছে না। ভাড়া নিয়ে গণপরিবহনের লোকেরা যাত্রীর সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করছে, লাঞ্ছিত করছে। মহাসড়কে দুর্বিসহ যানজটে পড়ে মানুষ সীমাহিন কষ্ট করছে। এগুলো দেখার কেউ নেই। গণপরিবহনে এ নৈরাজ্যের জন্য দায় ওবায়দুল কাদের এড়াতে পারেন না।’

তথ্যমন্ত্রীর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘ড. হাছান মাহমুদের বক্তব্য বিবৃতি হাস্যরসের। তিনি আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতার কাছ থেকে কি স্বীকৃতি পেয়েছিলেন, তা নিশ্চয়ই সবার জানা আছে। বেয়াদব উপাধি পেয়েছিলেন। ’

(ওএস/এসপি/জুন ০৪, ২০১৯)