চট্টগ্রাম প্রতিনিধি: চট্টগ্রামের এক লাখ নয় হাজার ৯৭০ জন ভোটারের স্মার্ট কার্ড প্রিন্ট হয়নি মানহীন ছবি, স্থায়ী ঠিকানা নিয়ে জটিলতা ও নামে বিরাম চিহ্ন-পদবীর ব্যবহারসহ নানান কারণে। ভোটার তালিকা হালনাগাদে দায়িত্বরতদের অসতর্কতার কারণে এসব সমস্যা তৈরি হলেও ভুক্তভোগী সাধারণ মানুষ।

পাঁচলাইশ এলাকার ভোটার আহমদুর রহমান সাকিব (২৮)। সম্প্রতি তাদের এলাকায় স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হয়েছে। তবে ছবি জটিলতায় প্রিন্ট হয়নি সাকিবের কার্ড। আহমদুর রহমান সাকিব বলেন, কীভাবে ছবি তুলতে হবে, নাম-ঠিকানায় কি তথ্য দিতে হবে, সবই তো নির্বাচন কমিশনের লোকজন করে। এখন বলছে ছবি ভালো হয়নি। কিন্তু ছবি তো আমি তুলে দিইনি। অথচ ভুগছি নিজে।

এদিকে কবে এসব ভোটারের কার্ড আসবে এবং হাতে পাবেন, এমন প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তারা।

এর আগে ২০১৮ সালের ১৩ মার্চ চট্টগ্রামে স্মার্ট কার্ড বিতরণ কার্যক্রম শুরু করে জেলা নির্বাচন অফিস। নগরের ছয়টি থানা ও আনোয়ারা উপজেলায় ইতোমধ্যে বিতরণ কার্যক্রম শেষ হয়েছে। তবে যারা নির্ধারিত সময়ে কার্ড তুলেননি, তারা সংশ্লিষ্ট নির্বাচন অফিসে গিয়ে প্রয়োজনীয় কার্যক্রম শেষে কার্ড নিতে পারবেন।

জেলা নির্বাচন অফিস থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী, স্মার্ট কার্ড পায়নি কোতোয়ালীতে ছয় হাজার ৬৫০জন, ডবলমুরিংয়ে ১৭ হাজার ২৭১জন, চান্দগাঁওয়ে ১৪ হাজার ৩৮৪জন, পাহাড়তলীতে ১৬ হাজার ৯৭৬জন, পাঁচলাইশে ১৫ হাজার ৬২৮জন, বন্দরে ২৯ হাজার ৩৯৪ জন ও আনোয়ারায় ৯ হাজার ৬৬৭ জন ভোটার।

নির্বাচনের অফিসের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, স্থায়ী ঠিকানা ভুল হওয়ায় বেশিরভাগ কার্ড প্রিন্ট হয়নি। এছাড়াও অনেক ব্যক্তি নামে বিরাম চিহ্ন কিংবা পদবির ব্যবহার করেছেন, তাদেরও কার্ড প্রিন্ট হয়নি। তবে মানহীন ছবির কারণে যেসব ভোটারের কার্ড আসেনি, সে কার্ডগুলো প্রিন্ট করা হচ্ছে বলে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে।

পাঁচলাইশ থানা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. সাহিদ হোসেন বলেন, যেসব নাগরিকের কার্ড প্রিন্ট হয়নি, সে তালিকা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দিয়েছি। আশা করি দ্রুত কার্ডগুলো আমরা পাবো।

এ ব্যাপারে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. মুনীর হোসাইন খান বাংলানিউজকে বলেন, অস্পষ্ট ছবির কারণে যেসব কার্ড প্রিন্ট হয়নি, সেগুলো প্রিন্টের কাজ চলছে। তবে অনেকে ভোটার হওয়ার সময় ফরমে স্থায়ী ঠিকানার তথ্য দেয়নি। তাদের কার্ডগুলো নিয়ে জটিলতা আছে।

‘২০০৭ বা ২০০৮ সালে যারা ভোটার হয়েছেন, এমন ভোটারদের তথ্যে ব্যাপক ভুল রয়েছে। ওইসময়ে ভোটার হওয়া অনেক নাগরিকের কার্ড প্রিন্ট হয়নি। এজন্য সংশোধনীর ব্যবস্থা রয়েছে’ বলে জানান জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা।

ভোটাররা কার্ডগুলো কখন পাবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে মুনীর হোসাইন খান বলেন, ‘আমরা চাইলেও কার্ডগুলো প্রিন্ট করে দিতে পারি না। তালিকা পাঠানো হয়েছে। নির্বাচন কমিশন থেকে কার্ডগুলো আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে।’

(ওএস/পিএস/০৮ জুন, ২০১৯)