নড়াইল প্রতিনিধি : নড়াইলের লোহাগড়া পৌরসভার কলেজপাড়ায় পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায়  দুই ভাইকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় থানায় ৯ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। তবে পুলিশ এজাহারভুক্ত কোনো আসামীকে গ্রেফতার করতে পারে নাই। পুলিশ বলছে, ঘটনার পর পরই আসামিরা পালিয়ে গেছে। এ ঘটনায় লোহাগড়া কলেজ পাড়ায় তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে।

হামলার শিকার এলিচ ও পরশের মা সুলতানা পারভীন এবং প্রতিবেশীরা জানান, কলেজপাড়ার বাসিন্দা লোহাগড়া মডেল ক্লিনিকের মালিক মোজাম্মেলের সঙ্গে নিশাত ক্লিনিকের টেকনিশিয়ান হাফিজের স্ত্রী শাফিয়া বেগমের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর এ নিয়ে এলাকাবাসী কয়েকবার সালিশ বৈঠক করেছে। মোজাম্মেল পরিবার নিয়ে হাফিজের বাসায় ভাড়া থাকতেন। গত দুই মাস আগে সালিশের মাধ্যমে মোজাম্মেলের পরিবারকে হাফিজের বাসা থেকে তাড়িয়ে দেয়া হয় এবং এ ধরনের অনৈতিক কাজ না করতে তাকে নিষেধ করা হয়। মোজাম্মেল পরিবার নিয়ে ওই বাসা থেকে চলে গেলেও মাঝেমধ্যে গোপনে ওই বাসায় আসা যাওয়া করতো।

গত ১৩ জুন রাতে মোজাম্মেল হাফিজুরের বাসায় ঢুকতে গেলে প্রতিবেশিরা বাঁধা দেয়। এ নিয়ে মোজাম্মেলের সাথে প্রতিবেশিদের কথা-কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মোজাম্মেল ও প্রেমিকা সাফিয়া স্থানীয় সন্ত্রাসীদের খবর দেয়। এ সময় প্রতিবেশিদের চিৎকার শুনে সুলতান মাহমুদ এলিচ ও আসিফ মাহমুদ পরশ তাদের বাসার দোতলা থেকে নিচে নেমে এসে সৃষ্ঠ ঘটনার প্রতিবাদ করলে সন্ত্রাসীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে দু’ভাইকে গুরুতর জখম করে পালিয়ে যায়। আহত দু’ভাইকে এলাকাবাসী উদ্ধার করে লোহাগড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে। তারা কলেজপাড়ার মুক্তিযোদ্ধা জিল্লুর রহমানের ছেলে। দু’ভাই আউটসোর্র্সিং ব্যবসার সাথে জড়িত।

আহতদের মা সুলতানা পারভীন ও প্রতিবেশীরা সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করে বলেন, পরকীয়া প্রেমের প্রতিবাদ করায় কলেজপাড়ার ছাত্রলীগ নেতা আবুজারের নেতৃত্বে রোহান, রোমান, দিপু, সোহেল, সাকিবসহ ৯/১০ জন সন্ত্রাসী হামলা চালিয়ে ওই দুই ভাইকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করেছে। প্রতিবেশিরা এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার ও দোষীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন।

এ ব্যাপারে আহত সুলতান মাহমুদ বাদী হয়ে গত শুক্রবার রাতে লোহাগড়া থানায় ৯ জন সহ অজ্ঞাত ৫/৭ জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেছেন। মামলার আসামীরা হলো সাফিয়া বেগম, মোজাম্মেল হক, আবুজার শেখ, সোহেল রানা, সাকিব হোসেন, দীপু, রোমান, রোহান।

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লোহাগড়া থানার এসআই অনিল মুখার্জি রোববার সাংবাদিকদের জানান, ঘটনার পর পরই আসামিরা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছে। তাদের আটকের চেষ্টা চলছে।

(ওএস/এসপি/জুন ১৬, ২০১৯)