রঘুনাথ খাঁ, সাতক্ষীরা : সৌদি আরবে পাচার হওয়া নারী ও তাব বাবা মামলার বাদির এফিডেফিডে আদালত থেকে জামিন পেলেন আদম ব্যাপারি ঢাকার কাকরাইলের টিপিএস ৩৬০ বাংলাদেশ এর স্বতাবাধিকারি রুবেল।

সোমবার সাতক্ষীরার মুখ্য বিচারিক হাকিম মোস্তফা পাভেল রায়হান রাষ্ট্রপক্ষ, বাদি ও ভিকটিমের মেিিখক ও লিখিত জবানবন্দি শুনানী শেষে আসামীকে পাঁচ হাজার টাকা বণ্ডে জামিনে মুক্তির আদেশ দেন।
ঘটনার বিবরনে জানা যায়, শুক্রবার সকালে তিন লাখ টাকার বিনিময়ে মামলার বাদি ও ভিকটিমের সঙ্গে আপোষ করতে আসেন টিপিএস ৩৬০ বাংলাদেশ এর স্বতাবাধিকারি রুবেল। তার সঙ্গে ছিলেন নোয়াখালির এক সময়কার প্রথম আলোর প্রতিনিধি পরিচয়দানকারি ফারুক হোসেন ও যাত্রাবাড়ি পরিবহন শ্রমিক সংগঠণের এক নেতা। সামনে সমঝোতার কথা বলে মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তাকে কৌশলে ডেকে এনে রুবেলকে গ্রেপ্তার করানোর জন্য সকাল ৯টা থেকে ভিকটিমের বাড়িতে আগে থেকেই উপস্থিত হন মানবাধিকার কর্মী রঘুনাথ খাঁ।

তবে ভিকটিমের নতুন পাতানো ভাই সাতক্ষীরা সদর থানার সিপাহী পরিচয়দানকারি ইউনুছ ওরফে কালু সেখানে হাজির হয়ে তিন লাখ টাকা নিয়ে আপোষ করার জন্য বলেন। যদিও রুবেল এ মামলার সঙ্গে যুক্ত নন বলায় ক্ষুব্ধ ভিকটিম তার পাসপোর্টে কিভাবে তার (রুবেল) সাক্ষর ও প্রতিষ্ঠানের সিল ব্যবহার হলো সেটা জানতে চান। তখন রুবেল তার বক্তব্য প্রত্যাহার করে নেন। একপর্যায়ে আসামী রুবেল হোসেনের বক্তব্য অনুযায়ি মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা সিআইডি’র পুলিশ পরিদর্শক মুরাদ হোসেন তার কাছ থেকে দু’ লাখ টাকা নেওয়ায় যথাসময়ে হাজির না হওয়া ও বাদি ময়মনসিং থাকায় সন্ধিগ্ধ আসামী রুবেল পরবর্তী ২১ জুন শুক্রবার মাগুরায় এসে মীমাংসা করার কথা বলে চলে যান।

বিষয়টি সিআইডি’র উর্দ্ধতন কর্মকর্তা শাহ আলমকে অবহিত করায় তারই নির্দেশনায় রুবলেকে শুক্রবার রাতে যাত্রাবাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করে রবিবার আদালতে পাঠানো হয়। এরপর থেকেই চলতে থাকে বাদি ও ভিকটিমকে ম্য নেজ করার তদ্বির। রবিবার বিকেল সাগে ৫টা পর্যন্ত ভিকটিম ও তার বাবা মোবাইলে মামলার সম্পর্কে কথা বলেন। সন্ধ্যার পর মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা মুরাদ হোসেনসহ দু’ জন ভিকটিমের বাড়িতে যান। এ সময় সিপাহী ইউনুছ।

আসামিদের সঙ্গে চুক্তি অনুযায়ি রাত ৮টার পর বাড়িতে তালা মেরে সকলে বড় মেয়ের পাঠানো গাড়িতে তার বাড়ি দেবহাটার দক্ষিণ পারুলিয়ায় যান। মেয়ের বাড়িতে বসেই বাবা, ভিকটিম, ইউনুছ পুলিশ ও আসামী পক্ষের দু’জনের সঙ্গে আলাপ শেষে রুবেল হোসেনের জামিন ও মামলা না চালানো এমন শর্ত সাপেক্ষে তৈরি দু’টি এফিডেফিডে সাক্ষর করার পর ভিকটিম ও তার বাবার হাতে ছয় লাখ টাকা তুলে দেওয়া হয়। রাত দু’ টোর দিকে মামলার বাদি বাড়ি চলে এলেও মেয়ে (ভিকটিম) বড় বোনের বাড়িতে থেকে যান। সকালে সে পারুলিয়া থেকে আদালতে আসেন ও তার বাবা মাহুরা থেকে আদালতে আসেন।

রিমাণ্ড মঞ্জুর ও জামিন না দেওয়ার পক্ষে কঠোর অবস্থান নেওয়া রাষ্ট্রপক্ষের উপপরিদর্শক ( সিএসআই) কুদ্দুস বলেন, মেয়ের পাচারকারিদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বাবা, মেয়ে উদ্ধারের জন্য সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে করেছেন সাংবাদিক সম্মেলন। ভিকটিম সৌদি থেকে স্বজনদের সঙ্গে ইমোতে কথা বলাকালে প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ জন পুরুষকে তার সঙ্গ দিতে হয়, আপত্তি করায় তার স্তনে, উরুতে তলপেটে, পিঠে, ঘাড়ে ইলেকট্রিক ইস্ত্রি ও গরম খুনতির স্যাঁকা দেওয়া হয় এমন দগদগে ক্ষতচিহ্ন দেখিয়েঝেন যাহা আদালতে উপস্থাপন করা হয়েছে।

অথচ নির্যাতিতার বাবা আদালতে এসে আসামির জামিনের পক্ষে এফিডেফিড দিয়েছেন। ভিকটিম লিখিতভাবে উল্লেখ করে কাঠগোড়ায় বলেছেন আসামীকে তিনি কখওেনা দেখেননি, চেনেন না। তার বিরুদ্ধে কোন অভিযোগ নেই। জামিন দিলে কোন আপত্তি নেই। এসব কেন হয়েছে সেটা তার বুঝতে বাকি নেই। আগামিকে সুযোগ থাকলে এ ধরণের মামলায় বিশেষ সুবিধা নিয়ে আসামীর সঙ্গে আপোষ করার অভিযোগে বাদি ও ভিকটিমকে জেলে পাঠানোর জন্য বিচারকের কাছে আবেদন করবেন। বাদি ও ভিকটিমের কথামত আদালত আসামী রুবেলকে জামিন দিতে বাধ্য হয়েছেন বলে দাবি করেন তিনি।

তবে এ ব্যাপারে মামলার বাদি ও ভিকটিমের সঙ্গে বার বার যোগাযোগের চেষ্টা করলে তারা সংযোগ বিচ্ছন্ন করে দেন। তবে ভিকটিমের বড় বোন বলেন, আপোষনামা বা টাকার বিনিময়ে জামিনের জন্য আদালতে এফিডেফিট দেওয়া সম্পর্কে তার বাবা বা বোন কিছুই তাকে জানাননি।

বিশিষ্ঠ মানবাধিকার কর্মী রাইটস যশোরের নির্বাহী পরিচালক বিনয় কৃষ্ণ মল্লিক জানান, মীমাংসার অযোগ্য এ ধরনের মামলার বাদি ও ভিকটিমের আদালত জেল হাজকে পাঠালে অন্যরা ও শিক্ষা পাবে।
তবে রুবেল হোসেন বা তার পক্ষের কারো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

(আরকে/এসপি/জুন ১৭, ২০১৯)