স্পোর্টস ডেস্ক: নিজেদের ওয়ানডে ইতিহাস বটে, বিশ্বকাপ ইতিহাসেও সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জিতেছে বাংলাদেশ। টনটনে বিশ্বকাপের ২৩তম ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের দেয়া ৩২২ রানের লক্ষ্য টাইগাররা পার হয়ে গেছে ৭ উইকেট ও ৫১ বল হাতে রেখে।

২০১৫ বিশ্বকাপে স্কটল্যান্ডের দেয়া ৩১৮ রানের বিপরীতে বাংলাদেশ ৪ উইকেটে করে ৩২২ রান। যা ছিল বাংলাদেশের ওয়ানডে ও বিশ্বকাপ ইতিহাসে সর্বোচ্চ রান তাড়া করে জেতার রেকর্ড। এবার ক্যারিবিয়দের ৮ উইকেটে করা ৩২১ রান অনায়াসে পার হয়ে নিজেদের রেকর্ডটি ভাঙল টাইগাররা।

বাংলাদেশকে অবিস্মরণীয় জয় এনে দিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাশ। বল হাতে ৮ ওভারে ৫৪ রানে ২ উইকেট শিকারের পর সাকিব ব্যাট হাতে তুলে নিয়েছেন ‘ব্যাক টু ব্যাক’ সেঞ্চুরি। ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ১২১ রানের পর বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার উইন্ডিজদের বিপক্ষে করেছেন অপরাজিত ১২৪ রান।

বিশ্বকাপে ‘ব্যাক টু ব্যাক’ সেঞ্চুরি করে সাকিব পাশে বসলেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের। ২০১৫ বিশ্বকাপে ইংল্যান্ড ও নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টানা দুই সেঞ্চুরি করেছিলেন মাহমুদউল্লাহ।

এছাড়া উইন্ডিজদের বিপক্ষে ২৩ রান করে সাকিব দ্বিতীয় বাংলাদেশি হিসেবে স্পর্শ করেন ৬ হাজার রানের মাইলফলক। প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে এই মাইলফলক স্পর্শ করেন তামিম ইকবাল।

সাকিবের মাহাত্ম্য এখানে শেষ নয়; ইংল্যান্ড ও ওয়েলস বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকাতেও সবার শীর্ষে উঠেছেন বিশ্ব সেরা অলরাউন্ডার। ৪ ম্যাচে ২ ফিফটি ও দুই সেঞ্চুরিতে সাকিব করেছেন ৩৮৪ রান। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ করেছেন ৫ ম্যাচে ৩৪৩ রান।

টনটনে টস জিতে ‍ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় মাশরাফি। শুরুতে ক্রিস গেইলকে (০) ফিরিয়ে উল্লাসে মেতে ওঠে টাইগাররা। তবে এভিন লুইস (৭০) এবং শাই হোপের (৯৬) ব্যাটে ভর করে বড় সংগ্রহের পথে এগিয়ে চলে ক্যারিবিয়রা। তাদের ১১৬ রানের জুটি ভাঙেন সাকিব।

পরে টনটনের ছোট মাঠে ঝড়ো ইনিংস খেলেন শিমরন হেটমায়ার (৫০) ও অধিনায়ক জেসন হোল্ডার (৩৩)।ড্যারেন ব্রাভো করে ১৯ রান। নিজের ৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নাম মুস্তাফিজুর রহমান সেঞ্চুরি বঞ্চিত করেন হোপকে।

উইন্ডিজদের দেয়া বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে দুর্দান্ত শুরু এনে দেন তামিম ইকবাল ও সৌম্য সরকার।দু’জনের ৫২ রানের উদ্বোধনী জুটি ভাঙেন আন্দ্রে রাসেল। সৌম্য ক্রিস গেইলের হাতে বন্দী হয়ে ফিরেন ২৯ রানে। ২০১৯ বিশ্বকাপে প্রথম ফিফটি থেকে ২ রান দূরে থাকতে রান আউটের শিকার হোন তামিম। এর পরপরই ব্যক্তিগত ১ রানে ফিরে যান মুশফিকুর রহিমও।

তবে হাল ধরে থাকেন সাকিব। লিটনকে সঙ্গে নিয়ে দলকে এনে দেন বিশ্বকাপের দ্বিতীয় জয়। সাকিব তুলে নিয়েছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৯ম সেঞ্চুরি। ওশানে টমাসের বলে ৪ মেরে সেঞ্চুরি করেন তিনি। সাকিবকে যোগ্য সঙ্গ দেন লিটন দাশ। দু’জনে মিলে বিশ্বকাপে সর্বেোচ্চ ১৮৯ রানের জুটি গড়েছেন।

লিটন গ্যাব্রিয়েল শ্যাননের বলে চার মেরে বাংলাদেশকে এনে দেন অবিস্মরণীয় জয়। এর আগে শ্যাননকে টানা তিন ছক্কা মারেন লিটন। বিশ্বকাপে উইন্ডিজদের বিপক্ষে এত রান তাড়া করে জিতেনি কোন দল আগে। এছাড়া সব প্রতিযোগিতা মিলে উইন্ডিজদের বিপক্ষে টানা ৫ ম্যাচ জিতেছে টাইগাররা।

৯৪ রানে অপরাজিত ছিলেন লিটন। বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজ ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দীন নিয়েছেন ৩টি করে উইকেট।

(ওএস/পিএস/১৭ জুন, ২০১৯)