স্টাফ রিপোর্টার : নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার বলেছেন, ‘এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে সবচেয়ে আশঙ্কার দিক হচ্ছে ভোটারদের নির্বাচনবিমুখতা। নির্বাচনবিমুখতা জাতিকে গভীর খাদের দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। কর্তৃত্ববাদী শাসনের অনিশ্চিত গন্তব্যে বাংলাদেশ। এ অবস্থা কখনও কাম্য হতে পারে না।’

গতকাল মঙ্গলবার (১৮ জুন) অনুষ্ঠিত হয় পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের পঞ্চম বা শেষ ধাপের ভোট। পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন শেষ হওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার বিকেলে এক ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন এ নির্বাচন কমিশনার।

উপজেলা নির্বাচন শেষ হওয়ার পর নির্বাচন কমিশনে এ ব্রিফিংয়ের আয়োজন করা হলেও একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বিষয়েও কথা বলেন মাহবুব তালুকদার। উপজেলা ও জাতীয় নির্বাচন বিষয়ে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য হচ্ছে, ‘এসব (উপজেলা) নির্বাচন কতটা অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে। জাতীয় নির্বাচন সম্পর্কে আমি পূর্বে যা বলেছিলাম এখনও তাই বলব। আপনারা নিজেদের বিবেককে জিজ্ঞাসা করলে এর উত্তর পেয়ে যাবেন।’

পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের প্রথম ধাপের ভোট হয় ১০ মার্চ। এরপর দ্বিতীয় ধাপের ভোট ১৮ মার্চ, তৃতীয় ধাপের ২৪ মার্চ এবং চতুর্থ ধাপের ভোটগ্রহণ হয় ৩১ মার্চ। গতকাল ১৮ জুন পঞ্চম ধাপের ভোটের মধ্য দিয়ে শেষ হলো পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ভোটাভুটি। এ পঞ্চম ধাপে বড় একটা অংশ বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।

এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচন সম্পর্কে মাহবুব তালুকদারের বক্তব্য, ‘বিরোধী দলগুলো অংশগ্রহণ না করায় এবারের পঞ্চম উপজেলা পরিষদ নির্বাচন ছিল একতরফা।’

তিনি আরও বলেন, একতরফা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠের কোনো অভিব্যক্তি প্রতিফলিত হয় না বলে এর কোনো ঔজ্জ্বল্য থাকে না। নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণের ক্ষেত্র তৈরিতে উপযুক্ত পরিবেশ অপরিহার্য। কিন্তু আমরা ক্রমাগত একতরফা নির্বাচনের দিকে অগ্রসর হচ্ছি, যা গণতন্ত্রের জন্য অনভিপ্রেত।’

কারও আজ্ঞাবহ হয়ে দায়িত্ব পালন করলে এবং উপজেলা পরিষদের গণতান্ত্রিক বৈশিষ্ট্য বিসর্জিত হলে উপজেলা পরিষদ জনআকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থ হবে বলেও মন্তব্য করেন এ নির্বাচন কমিশনার।

মাহবুব তালুকদার জানান, কোনো কোনো সংসদ সদস্য আচরণবিধি লঙ্ঘন করায় নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে বা সংসদ সচিবালয়ের পক্ষ থেকে চিঠি পাঠিয়ে তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করতে হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘উপজেলা নির্বাচন সাংসদদের আওতামুক্ত না হলে তা কখনও অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে না। তাদের উপদেষ্টার ভূমিকা উপজেলা পরিষদের কৌলিন্য বিনষ্ট করেছে।’

অনেক সাংসদ কেন আচরবিধি লঙ্ঘন করে পছন্দের প্রার্থীকে উপজেলা চেয়ারম্যান পদে বসাতে চান, কখনও বা নিজ দলের মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেন, এ প্রশ্নের সমাধান না পেলে উপজেলা নির্বাচন তাদের প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাবের কবলে পড়বেই বলেও মনে করেন মাহবুব তালুদকার।

(ওএস/এসপি/জুন ১৯, ২০১৯)