রংপুর প্রতিনিধি : হঠাৎ করে উজানের ঢলে তিস্তা নদীতে পানি বেড়ে যাওয়ায় জেলার পীরগাছা উপজেলার ১৫টি গ্রামের মানুষ পানিবন্দী হয়ে পড়ে। গত মঙ্গলবার রাত থেকে পানি বৃদ্ধির পর শুক্রবার থেকে তা আবার নেমে যায়। তবে পানি নেমে গেলেও এলাকার ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ কয়েক হাজার মানুষের কাঁচা ঘরবাড়ির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়া প্রায় ৫০ হেক্টর জমির চিনা বাদাম ও বিভিন্ন ফসলেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। 

ক্ষতিগ্রস্থ পরিবার ও এলাকাবাসী জানায়, মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ করেই তিস্তা নদীর পানি বাড়তে থাকে। এতে উপজেলার ছাওলা ইউনিয়নের গাবুরা, শিবদেবচর, আমিনপাড়া, চর ছাওলা,কামারের হাট, রামসিং ও জুয়ানের চরসহ প্রায় ১০টি গ্রামের নিম্নাঞ্চলের বাড়িঘর, ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উঠতি ফসল পানির নিচে তলিয়ে যায়। এতে করে অনেক কৃষকের উঠতি বাদাম পানির তোড়ে ভেসে যায।

বাদাম চাষিরা জানান, সবেমাত্র বাদাম তোলা শুরু হয়েছে। শতাধিক কৃষক জমি থেকে বাদাম তুলে শুকানোর জন্য জমিতেই রেখেছিল। কিন্তু হঠাৎ পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উত্তোলনকৃত বাদাম গাছসহ পানিতে ভেসে যায়। এতে করে দরিদ্র অনেক কৃষকই একেবারে নি:স্ব হয়ে পড়েছেন। কারণ, চরাঞ্চলের এসব কৃষকদের অধিকাংশই বাদাম চাষি।

এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে পানি নামতে শুরু করায় তারা পড়েছে এখন ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’-য়ে পরিণত হওয়ার উপক্রমে। পানি নামার সাথেই শুরু হয়েছে নদী ভাঙ্গন। বিশেষ করে ছাওলা ইউনিয়নের গাবুরার চরসহ আশপাশের কয়েকটি এলাকার ভাঙ্গন ব্যাপক আকার ধারণ করেছে। যা এখনও অব্যাহত রয়েছে।

জুয়ানের চর এলাকার আফসার আলী জানান, এক রাতেই হাজারো মানুষের সব সর্বনাশ হয়ে গেছে। এদিকে স্কুল মাঠের পানি এখনও না নামায় কোমলমতি শিক্ষার্থীরা স্কুলে যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছে।

এলাকাবাসী অভিযোগ করেন, এতগুলো পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হলেও উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এখনও তাদের কোন সাহায্য সহযোগিতা করা হয়নি।

এ ব্যাপারে পীরগাছা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জেসমিন প্রধান জানান, ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোর তালিকা তৈরির জন্য উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

(এম/এসপি/জুন ২২, ২০১৯)