স্টাফ রিপোর্টার : বাসচাপায় পা হারানো রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকার বাকি ৪৫ লাখ টাকা গ্রীনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে দিতেই হবে। তবে একসঙ্গে না দিয়ে ৯ কিস্তিতে প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে পরিশোধ করতে বলেছেন হাইকোর্ট।

টাকা কমানোর আবেদন নাকচ করে মঙ্গলবার (২৫ জুন) হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালত বলেন, গ্রীনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে জরিমানার বাকি ৪৫ লাখ টাকা রাসেলকে দিতে হবে। গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ প্রতি মাসে পাঁচ লাখ টাকা করে ৯ কিস্তিতে রাসেলকে এই দেবে। প্রতি মাসের ৭ তারিখের মধ্যে পাঁচ লাখ টাকা পরিশোধ করে সে বিষয়ে ওই মাসের ১৫ তারিখ আদালতকে তা জানাতে হবে।

আদালতে আজ গ্রীনলাইনের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মো. ওজিউল্লাহ। রিটের পক্ষে ছিলেন খন্দকার শামসুল হক রেজা ও রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার আবদুল্লাহ আলম মাহমুদ বাশার।

এর আগে গত ২২ মে ক্ষতিপূরণের বাকি ৪৫ লাখ টাকা পরিশোধের জন্য আজকের (২৫ জুন) দিন পর্যন্ত সময় দেন আদালত। কিন্তু গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ টাকা পরিশোধ না করে আজ ক্ষতিপূরণের টাকা কমানোর জন্য হাইকোর্টে আবেদন করেন।

এর আগে গত ১০ এপ্রিল রাসেল সরকারকে আদালতের মাধ্যমে ৫০ লাখ টাকার মধ্যে পাঁচ লাখ টাকার চেক হস্তান্তর করে গ্রীনলাইন কর্তৃপক্ষ। গত ১২ মার্চ রাসেল সরকারকে ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেয়ার নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

আইনজীবী শামসুল হক রেজা বলেছিলেন, মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রীনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেয়। এ ঘটনায় হাইকোর্টে রিট দায়ের করা হলে গত বছরের ১৪ মে বিচারপতি সালমা মাসুদ চৌধুরী ও বিচারপতি একে এম জহিরুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুল জারি করেন।

এরপর রুলের শুনানি নিয়ে ভিন্ন একটি বেঞ্চ রাসেলকে ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫০ লাখ টাকা দেয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে রাসেলের চিকিৎসা সংক্রান্ত যাবতীয় খরচ গ্রীনলাইন পরিবহন কর্তৃপক্ষকে বহন করতে এবং তার কৃত্রিম পা লাগানোর ব্যবস্থা করতে বলা হয়।

গত বছর ২৮ এপ্রিল মেয়র মোহাম্মদ হানিফ ফ্লাইওভারে কথা কাটাকাটির জেরে গ্রীনলাইন পরিবহনের বাসচালক ক্ষিপ্ত হয়ে প্রাইভেটকার চালকের ওপর দিয়েই বাস চালিয়ে দেয়। এতে ঘটনাস্থলেই প্রাইভেটকার চালক রাসেল সরকারের (২৩) বাম পা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।

পা হারানো রাসেল সরকারের বাবার নাম শফিকুল ইসলাম। গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার পলাশবাড়ীতে। ঢাকার আদাবর এলাকার সুনিবিড় হাউজিং এলাকায় তার বাসা। এ ঘটনায় সংরক্ষিত আসনের সংসদ সদস্য উম্মে কুলসুম স্মৃতি হাইকোর্টে এ রিট আবেদন করেন। পরে আদালত রিটের শুনানি নিয়ে রুল জারি করেন।

(ওএস/এসপি/জুন ২৫, ২০১৯)