আঞ্চলিক প্রতিনিধি, বরিশাল : দশ বছর পর অবশেষে নতুন অধ্যক্ষ পেয়েছে বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার ঐতিহ্যবাহী ‘সরকারী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ। গুরুত্বপূর্ন বিভাগের শিক্ষক সংকটের মধ্যে অধ্যক্ষ ও উপ-অধ্যক্ষ দু’টি পদে শিক্ষক নিয়োগ পাওয়ায় কিছুটা হলেও আশার আলো দেখছেন সংশ্লিষ্ট অভিভাবক ও শিক্ষার্থীরা।  

আগৈলঝাড়া সরকারী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজে অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন বরিশাল সরকারী বিএম কলেজের ইতিহাস বিভাগের অধ্যাপক সরদার আকবর আলী ও উপ-অধ্যক্ষ পদে একই কলেজের দর্শণ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মো. আখতারুজ্জামান।

মহামান্য রাষ্ট্রপতির আদেশক্রমে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ-২ শাখার উপসচিব ড. শ্রীকান্ত কুমার চন্দ কর্তৃক ২৫জুন স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে এসব তথ্য নিশ্চিত হওয়া গেছে। ওই প্রজ্ঞাপনে ‘সরকারী শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাত ডিগ্রী কলেজ’সহ দেশে ১২টি সরকারী কলেজে অধ্যক্ষ ও উপাধ্যক্ষ নিয়োগ প্রদান করা হয়। আদেশে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারের কর্মকর্তাগনকে পুনরাদেশ না দেয়া পর্যন্ত নিজ বেতন ও বেতনক্রমে বর্ণিত পদ ও কর্মস্থলে বদলী/ পদায়ন করার কথা জানানো হয়েছে। ওই প্রজ্ঞাপনে ৩০ জুনের মধ্যে কর্মকর্তাদের কর্মস্থলে যোগদানের জন্যও নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

২০০৯ সালের ১৪ জুলাই অধ্যক্ষ রমেশ চন্দ্র সাহা অবসরে যাওয়ার পর থেকে গত ১০ বছর যাবত কলেজের অধ্যক্ষর পদ শুন্য ছিল। ওই বছর ১৫ জুলাই উপাধ্যক্ষ এসএম হেমায়েত উদ্দিন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দায়িত্ব পালন শেষে আট বছর পর ২০১৬ সালের ১৯জুন অবসর গ্রহন করেন। এর পর থেকে উপধ্যক্ষর পদও শুন্য হয়।

কলেজ সূত্র মতে, হেমায়েত উদ্দিন অবসরে গেলে বিকাশ চন্দ্র বিশ্বাস ওই বছর ২০ জুন ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দ্বায়িত্ব গ্রহন করেন। তিনি ২০১৭ সালের ১জানুয়ারি অবসর গ্রহন করেন। ওই বছর ২ জানুয়ারি বাংলা বিভাগের সিনিয়র শিক্ষক কমলা রানী মন্ডল ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দায়িত্ব পালন শেষে চলতি বছরের ২৭ এপ্রিল অবসর গ্রহন করেন। কমলা রানী মন্ডলের পরে ২৮এপ্রিল ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষর দায়িত্ব পান রাষ্ট্র বিজ্ঞানের সিনিয়র শিক্ষক মোবারক হোসেন। তিনিও ১৪জুন অবসরে যান।

বর্তমানে অধ্যক্ষ ও উপ-অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের পরেও কলেজটিতে বাংলা, পদার্থ বিদ্যা, জীব বিদ্যা, সমাজ বিজ্ঞান, দর্শণ ও ইতিহাসসহ মোট ছয়টি পদে শিক্ষক শুন্য রয়েছে। ফলে কলেজটিতে ১৩শ’ ৬৫জন শিক্ষার্থীর ক্লাশ চরমভাবে ব্যাহত হয়ে আসছে।

কলেজটিতে এক সময়ে শিক্ষার্থীদের ভর্তি চাপের কারণে শিক্ষা বোর্ড মানবিক শাখায় বাড়তি কোটা অনুমোদন করেন। বর্তমানে দেড়শ শিক্ষার্থীর বিপরীতে আড়াইশ কোটা রয়েছে। বিজ্ঞান ও বানিজ্য বিভাগে দেড়শ শিক্ষার্থীর কোটা থাকলেও শিক্ষক শুন্যতার কারণে এবছর ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থী দিয়ে ওই বিভাগের কোটা পুরণ হবে না বলে আশংকা প্রকাশ করেছেন কলেজ কর্তৃপক্ষ।

প্রসংগত, জাতির পিতার ভাগ্নে, মন্ত্রী পদ মর্যাদায় পার্বত্য শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরীবিক্ষন কমিটির আহ্বায়ক আলহাজ্ব আবু হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি’র প্রচেষ্টায় ২০১৮ সালের ৮আগষ্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁর ফুফা “শহীদ আব্দুর রব সেরনিয়াবাতের নামে কলেজটিকে জাতীয় করণের অনুমতি প্রদান করেন।

কলেজের সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বিপুল চন্দ্র দাস বলেন, বুধবার সকালে তিনি অধ্যক্ষ ও উপ-অধ্যক্ষ নিয়োগের প্রজ্ঞাপন হাতে পেয়েছেন। দু’টি পদে সরকারী নিয়োগের ফলে নিয়মিত পাঠদান ও প্রশাসনিক অচলাবস্থা কিছুটা সমাধান হলো। অন্য বিভাগের শিক্ষক শুন্যতা পুরণের জন্য সরকারী নিয়োগ না দেয়া পর্যন্ত বিকল্প শিক্ষক দিয়ে পাঠ দান চালানোর ব্যবস্থা করবেন বলেও জানান তিনি।

(টিবি/এসপি/জুন ২৬, ২০১৯)