সাতক্ষীরা প্রতিনিধি : কলারোয়া থানা পুলিশের বিরুদ্ধে ১২ কোটি টাকা মূল্যের ৩০০ পিছ সোনার বার আটক করে তা আত্মসাত করার অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগে কলারোয়া থানার ওসি মুন্সি মোফাজ্জেল হোসেন কনককে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়েছে। গ্রেপ্তার করা হয়েছে কলারোয়ার সাবেক এক ইউপি সদস্যকে।

কলারোয়া থানা পুলিশের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, আর্ন্তজাতিক সোনা পাচার চক্রের ঢাকাস্থ এক ব্যবসায়ি গত শুক্রবার ৩০০ পিছ সোনা পাচারের জন্য খুলনা হয়ে কলারোয়া সীমান্তে আসছিলেন। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি কলারোয়া থানা পুলিশ জানতে পেরে খুলনা-সাতক্ষীরা মহাসড়কের কাঁঠালতলা নামক স্থানে রাস্তায় ব্যারিকেড সৃষ্টি করে একটি মাইক্রোবাস ও একটি প্রাইভেট কার আটক করে। পরে তল্লাশী চালিয়ে মাইক্রোবাস থেকে ৩০০ টি সোনার বার উদ্ধার করা হয়।

এসময় কলারোয়া থানার ওসির নেতৃত্বে ডুমুরিয়া থানার চুকনগর এলাকা থেকে ৫/৬ জন সোনা পাচারে সহায়তাকারিকে আটক করা হয়। উদ্ধারকৃত সোনা ও আটক করা চোরাচালানীদের যশোর জেলার কেশবপুর উপজেলা হয়ে কলারোয়ায় নিয়ে আসার পথে কেশবপুরের মঙ্গলকোট নামকস্থান থেকে আটককৃত সোনা পাচারকারীদেরসহ আটক প্রাইভেটকার ও মাইক্রোবাসটি ছেড়ে দেয়া হয়। পরে কলারোয়া থানায় ওসির রুমে বসে উদ্ধারকৃত ওই সোনা ভাগাভাগি করা হয়।

বিষয়টি কলারোয়া থানার অন্য পুলিশ অফিসারসহ কনষ্টেবলদের মধ্যে ব্যাপক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হলে ঘটনা লোকসমাজে জানাজানি হয়ে যায়। ঘটনাটি সাতক্ষীরা জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কানে পৌছালে শুরু হয় দৌড়ঝাপ। পরে সোনা আটকের সংবাদদাতা পুলিশের সোর্স কলারোয়া উপজেলার সোনাবড়িয়া ইউনিয়নের সাবেক ইউপি সদস্য ভাড়িয়ালী গ্রামের আসাদুজ্জমান আসাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃত আসাদ পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে কলারোয়া থানার ওসি আটক সোনা নিজে ও তার সাথে থাকা পুলিশ সদস্যরা ভাগাভাগি করে নিয়েছেন বলে স্বীকার করে। পুলিশের তদন্তে এর প্রাথমিক সত্যতা মেলায় রবিবার রাতে কলারোয়া থানার ওসিকে পুলিশ লাইনে ক্লোজড করা হয়।

কলারোয়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আমিনুল ইসলাম লাল্টু জানান, গ্রেপ্তারকৃত আসাদ দীর্ঘদিন যাবত পুলিশের ছত্রছায়ায় ভারতে সোনা পাচার করে আসছিলো। বিষয়টি ওই এলাকার অনেকেই তার কাছে নিশ্চিত করেন। উদ্ধার করা ৩০০ ভরি সোনা কলারোয়া থানার ওসি আত্মসাত করেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, ওসি ওই সোনা বিক্রি করে রবিবার সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ঝাউডাঙ্গা রুপালী ব্যাংক শাখায় তার স্ত্রীর নামে ১০ লাখ টাকার একটি এফডিআর করেছেন।

এ বিষয়ে কলারোয়া থানার ওসি তার ক্লোজের কথা অস্বীকার করে বলেন, এমন একটি কথা তিনিও শুনেছেন। তবে এ ঘটনায় তিনি জড়িত নন।

সাতক্ষীরা অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোবাইলে ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত না জানিয়ে তিনি বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।

(আরকে/জেএ/জুলাই ২৮, ২০১৪)