রাণীশংকৈল প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ের ঐতিহ্যবাহী রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ বাজারে অবস্থিত ব্যবসায়ীদের দোকানঘরসহ কিছু বাড়ী ঘর অবৈধভাবে থাকার কারণে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে উপজেলা প্রশাসন। আর এ উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করছেন উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা।

তবে প্রশাসন ঐতিহ্যবাহী এ বাজারে উচ্ছেদ অভিযান চালানোর কারণে বর্তমানে কার্যত বিলীন হযে পড়েছে নেকমরদ বাজার। এতে ব্যবসায়ীদের গোচ্ছা যাচ্ছে লাখ লাখ টাকা।

এদিকে উপজেলা প্রশাসন বলছে সরকারে প্রয়োজনে উচ্ছেদ হয়েছে। তবে বাজার ভেঙ্গে আবার ব্যবসায়ীদের দোকান ঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।

অন্যদিকে দোকানদারদের বক্তব্য ভেঙ্গে যদি দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া হয় তাহলে আগে পরিকল্পনা প্রণয়ন করে কেন এ কর্মসুচি হাতে নেওয়া হলো না।

তাহলেতো আমরা আজ পথে বসতাম না। জাকজমকপূর্ণ একটি বাজার যে বাজারের জন্য সরকার প্রতি বছরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে এবং যাদের কারণে করছে। আজ তাদের পথে বসিয়ে মানবেতর জীপন যাপন করিয়ে এখন প্রশাসন বলছে দোকানঘর বরাদ্দ দেওয়া হবে।

তাদের অভিযোগ এ বরাদ্দেও বড় ধরনের বাণিজ্য হতে পারে? এতে আরো পথে বসবে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা। তাই তাদের দাবী সঠিক ভাবে যেন দোকান ঘর বরাদ্দ দেওয়া হয়।

এদিকে ঐ বাজারের পাশে সরকারী তালিকাভুক্ত বাগানবাড়ীতে প্রায় ১৫০জন ভুমিহীন পরিবার বসবাস করতো তাদেরও সেখান থেকে হঠাৎ করে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং কি আগে থেকে পূর্ণবাসনের জন্য জায়গা নির্ধারণ না করে তাদের উচ্ছেদ করা হয়েছে। বর্তমানে তারা মানবেতর জীপন যাপন করছে। এছাড়াও স্কুল কলেজে পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পড়াশুনার করার পরিবেশ হারিয়ে ফেলেছে এবং হতাশায় ভুগছে তারা।

তবে উপজেলা প্রশাসন তাদেরকে কুমরগঞ্জ নামক এলাকায় ২টি সরকারী পুকুর পাড়ে আপাতত জায়গা দিয়েছে । প্রশাসনের পক্ষ থেকে এ পরিবারগুলোকে সহযোগিতা স্বরুপ ২বান টিন ও নগদ ছয় হাজার টাকা বিতরণ করা হয়েছে যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল।

উপজেলা সহকারী কমিশনার ভুমি সোহাগ চন্দ্র সাহা গতকাল শনিবার মুঠোফোনে জানান, নেকমরদ বাজারে অবৈধভাবে দখল ছিলো ৭একর ৩৫ শতক জমি আর বাগানবাড়ীতে ছিলো ১একর ৯৩শতক জমি। নেকমরদ বাজারে প্রায় ২৭৮ টি অবৈধ স্থাপনা ছিলো আর বাগানবাড়ীতে ১৫০টি বাড়ী ছিলো। এগুলো উচ্ছেদ অভিযান জুন মাসের ১০ তারিখ থেকে শুরু হয়ে চলমান রয়েছে। অনেক জটিলতা রয়েছে এগুলো পর্যায়ক্রমে সমাধান করে জমিগুলো উচ্ছেদ করা হচ্ছে।

তিনি আরো জানান, নিয়মনুযায়ী বাজারটি এবার সাজানো হবে কোন ধরনের অনিয়ম বরদাস্ত করা হবে না। আমি সর্বাত্বক চেষ্টা করছি নিরপেক্ষ অবস্থানে থেকে কাজগুলো করার।

এ ব্যাপারে ঠাকুরগাও-৩ আসনের সাংসদ জাহিদুর রহমান গতকাল শনিবার মুঠোফোনে বলেন,সরকারের প্রয়োজনে সরকারী জায়গা দখলে নিতে পারে। তবে জনগণের জন্য সরকার এ কথা মনে রেখে ভুমিহীন পরিবারদের আগে পূর্ণবাসন দিয়ে তারপর তাদের ঘর বাড়ী ভাঙ্গা উচিত ছিলো। পাশাপাশি দোকানদেরও আগে পূর্ণবাসনের প্রক্রিয়া সর্ম্পুণ করে উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করলে ব্যবসায়ীরা আজ এত ক্ষতির মধ্যে পড়তো না। তবে তিনি প্রত্যাশা করেন নেকমরদ বাজার নিয়ে পরবর্তী কার্যক্রম সঠিক চিন্তাভাবনা নিয়ে করা হবে যাতে ব্যবসায়ীরা আর কোন ক্ষতির মধ্যে না পড়ে।

(কেএএস/এসপি/জুলাই ০৬, ২০১৯)