বাগেরহাট প্রতিনিধি : দুটি বাস মালিক সমিতির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বাগেরহাটের উপর দিয়ে উত্তরবঙ্গসহ খুলনা-বরিশাল রুটের অন্তত ৫০টি দূরপাল্লার যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল ৩ সপ্তাহ ধরে বন্ধ রয়েছে। বরিশাল ও ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির মধ্যে চলা এই বিরোধ আগামী ১৫ দিনের মধ্যে সমাধান করে এই রুটটি সচল করতে প্রশাসনের কাছে দাবী জানিয়েছে ৭টি পরিবহন মালিক সমতির নেতারা। নিধারিত সময়ের মধ্যে সমস্যরা সমাধান না হলে বাগেরহাট, খুলানা, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালী এই ৬টি জেলার ৭টি বাস মালিক সমিতি সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেবে বলে প্রশাসনের কাছে আল্টিমেটাম দিয়েছে পরিবহন মালিক নেতারা।

শনিবার দুপুরে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টামিনালে বাগেরহাট আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির কার্যালয়ে বাগেরহাট ও খুলনার পাঁচটি বাস মালিক সমিতি জরুরী সভা করে এই সিদ্ধান্তে কথা জানান পরিবহন মালিক সমিতির নেতারা। এদিকে দূরপাল্লার এই রুটে ৩ সপ্তাহ ধরে অন্তত ৫০টি যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন যাতায়াত করা হাজার-হাজার যাত্রীরা সিমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন। তবে বাগেরহাটসহ পাঁচটি মালিক সমিতির অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতারা। এজন্য বরিশাল ও ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতারা পরষ্পর পরষ্পরের উপর দোষা চাপিয়েছে।

বাগেরহাট আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকি জানান, বরিশাল ও ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্বে বাগেরহাটের উপর দিয়ে উত্তরবঙ্গসহ খুলনা- বরিশাল রুটে চলাচলকারী দূরপাল্লার সব পরিবহন চলাচল গত ১৫ জুন থেকে বন্ধ করে দিয়েছে ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতারা। উত্তরবঙ্গসহ খুলনা থেকে ছেড়ে আসা বরিশাল-বরগুনা- পটুয়াখালী-পিরোজপুর ও পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটাগামী দূরপাল্লার পরিবহনগুলো বাগেরহাট-পিরোজপুর সীমান্ত অতিক্রম করার পর ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতারা ওই সব পরিবহন থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে গাড়ীগুলো আটকে রাখছে।

একই ভাবে বরিশাল-বরগুনা- পটুয়াখালী ও কুয়াকাটা থেকে ছেড়ে আসা পিরোজপুর-বাগেরহাট- খুলনাসহ উত্তরবঙ্গগামী দূরপাল্লার পরিবহনগুলো ঝালকাঠি বাস মালিক সমিতির নেতারা চলতে দিচ্ছেনা। দূরপাল্লার এই রুটে ৩ সপ্তাহ ধরে অন্তত ৫০টি যাত্রীবাহী পরিবহন চলাচল বন্ধ থাকায় প্রতিদিন যাতায়াত করা হাজার-হাজার যাত্রীরা সিমাহীন ভোগান্তিতে পড়েছেন।

এই সিমাহীন ভোগান্তি ও দূরপাল্লার এই রুটটি সচল করতে শনিবার দুপুরে বাগেরহাট কেন্দ্রীয় বাস টামিনালে বাগেরহাট আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির কার্যালয়ে বাগেরহাট আন্ত:জেলা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক তালুকদার আব্দুল বাকির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত জরুরী সভায় রুপসা-বাগেরহাট আন্তঃজেলা সড়ক পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি নিখিল চন্দ্র মুখার্জী, সাধারণ সম্পাদক নকিব নজিবুল হক নজু, রুপসা-বাগেরহাট আন্তঃজেলা পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি নুরুল হক লিপন, সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক হোসেন, মহিষপুরা-খুলনা পরিবহণ মালিক সমিতির সভাপতি শেখ মাসুদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক বিনয় কৃষ্ণ দাস, বাগেরহাট শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রেজাউর রহমান মন্টুসহ পাঁচটি মালিক সমিতির নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

বাগেরহাট ও খুলনার পাঁচটি বাস মালিক সমিতি জরুরী সভায় দুই মালিক সমিতির চলমান দ্বন্দ্ব প্রশাসন নিরসন করতে প্রশাসনকে আগামী ১৫ দিনের আল্টিমেটাম দেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সমস্যার সমাধান না করা হলে বাগেরহাট, খুলানা, পিরোজপুর, বরিশাল, বরগুনা ও পটুয়াখালী এই ৬টি জেলার ৭টি বাস মালিক সমিতি সব ধরনের যান চলাচল বন্ধ করে দেবে বলে জানান পরিবহন মালিক নেতারা।

বরিশাল-পটুয়াখালী বাস মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওসার হোসেন লিপন বলেন, ঝালকাঠি মালিক সমিতির খামখেয়ালীপনা ও চাঁদাবাজীর কারনে গত ৩ সপ্তাহ ধরে খুলনা-বরিশাল রুটে অন্তত ৫০টি দূরপাল্লার বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে। সমস্যা নিরসনে সাতটি বাস মালিক সমিতি সভা করে বিভাগীয় কমিশনারসহ প্রশাসনের সংশ্লিষ্টদের চিঠি দেয়া হয়েছে। কিন্তু প্রশাসন কোন উদ্যোগ না নেয়ায় গাড়ী চলাচল সাময়িক বন্ধ রয়েছে।

চাঁদাবাজীর অভিযোগ অস্বীকার করে ঝালকাঠি জেলা বাস ও মিনিবাস মালিক সমিতির জেষ্ঠ্য সহসভাপতি মাহবুবুল হক দুলাল বলেন, গত ২৪ জুন বরিশাল বিভাগীয় কমিশনারের কার্যালয়ে দুরপাল্লার যাত্রী পরিবহণ করা নিয়ে একটি সিদ্ধান্ত হয়। প্রশাসনের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বরিশাল ও পিরোজপুর গাড়ী চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। তাই প্রশাসনকে এই বিষয়ে পদক্ষেপ নিতে হবে।

(এসএকে/এসপি/জুলাই ০৬, ২০১৯)