ধামরাই (ঢাকা) প্রতিনিধি : শিক্ষামন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি রথ উৎসবের সকলকে ধন্যবাদ ও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই ভূমিতে হিন্দু বৌদ্ধ মুসলমান খ্রিষ্টান সকলে সম্প্রীতির মাধ্যমে এগিয়ে গেছে আমাদের এই বাঙালী জাতিয়তাকে। সনাতন ধর্মের এটি একটি পৃথক ধর্মীয় উৎসব। স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তি তারা এখনো সক্রিয় আছে।

রথ বিষয়ে তিনে বলেন এখন যে রথটি আছে তা সাতাশ ফুট উচু। আগের যে রথটি পাক হানাদার বাহিনী পুড়িয়ে দিয়েছে সেটি পুড়তেও সাত দিন লেগেছে, সেছিল ষাট ফুট উচু পয়তাল্লিম পুট চওড়া। পুড়িয়ে দিয়েও রথ উৎসব বন্ধ করতে পারেনি। ধর্মীয় আবেগ দিয়ে সংস্কৃতির যে শক্তি আছে সেই আবেগ দিয়ে এগিয়ে রথ উৎসবকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। আমরা ধর্মীয় সম্প্রীতির মাধ্যমে এই দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। সারা বিশ্বে এই বাংলাদেশ একটি রোল মডেল।

তিনি বলেন, ধর্ম যার যার কিন্ত উৎসব সবার সকল ধর্মের মানুষের এটি একটি মিলন মেলা।তিনি শ্রীশ্রী যশো মাধবের রথযাত্রার শুভ উদ্ধোধন ঘোষনা করেন। এর পর রথ টানা শুরু হয়।

শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি বৃস্পতিবার বিকেলে ঢাকার অদূরে ধামরাই ্সদরে এশিয়া খ্যাত ও দ্বিতীয় বৃহত্তম চার শত বছরের পুরোনো ঐতিহ্যবাহী রথ উৎসব ও তার মাস ব্যাপী মেলার উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষনে এসব কথা বলেছেন।

নিশ্চিদ্র নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে বৃহস্পতিবার বিকেলে রথ উৎসবের উদ্ধোধনী অনুষ্ঠানে যশোমাধব মন্দির ও রথ পরিচালনা পরিষদের সভাপতি মেজর জেনারেল (অবঃ) জীবন কানাই দাসের সভাপতিত্বে এ উদ্ধোনী সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন ও ম্মংঙ্গল প্রদীপ জ্বালিয়ে ও শান্তির প্রতীক পায়ড়া উড়িয়ে মেলার উদ্ধোধন করেন শিক্ষা মন্ত্রী ডাঃ দীপু মনি।

বিশেষ অতিথি ছিলেন ঢাকা বিশ আসন ধামরাইয়ের সংসদ সদস্য মুক্তিযোদ্ধা আলহাজ্ব বেনজীর আহমদ, সাবেক এমপি মুক্তিযোদ্ধা এমএ মালেক।

স্বাগত বক্তব্য রাখেন, যশোমাধব মন্দির ও রথ পরিচালনা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রাজীব প্রসাদ সাহা। অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবুল কালাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (অপরাধ) মোঃ সাঈদুর রহমান, সংরক্ষিত মহিলা আসনের এমপি এরোমা দত্ত, ধামরাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাদ্দেছ হোসেন, সার্বিক অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন যশোমাধব মন্দির ও রথ পরিচালনা পরিষদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শিক্ষক নন্দ গোপাল সেন। ১২ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে উল্টো রথ যাত্রা অনুষ্ঠান।

বিকেল চারটায় দেবতা মাধব তার সহচরদের নিয়ে প্রতি বছরের মত আজও রথে চড়ে যান তার কথিত শশুরালয় ধামরাই যাত্রাবাড়ি মন্দিরে। মেলাঙ্গনে আগত হাজারো ভক্ত নর-নারীরা দেবতাকে সন্তুষ্ট করতে ,দেশ ও জাতির মঙ্গল বাসনায় রথের উপর ছুড়ে দেয় কলা চিনি ও বিভিন্ন ফল। ভক্তরা উপজেলা সদরের প্রধান সড়ক দিয়ে পাটের রশি ধরে টেনে নিয়ে যায় দেবতাসহ রথটি গোপনগরে।এ সময় মেলায় আগত ভক্ত নারীদের উলুধ্বনিতে মুখরিত হয়ে উঠে রথ মেলাঙ্গন।টেনে নেবার পর গোপনগরে রথটি প্রতি বছরের মতো ৯দিন অবস্থান করবে। ওই যাত্রাবাড়ির কথিত শ্বশুরালয়ে মাধব ও অন্য বিগ্রহগুলো রথ থেকে নামিয়ে ৯দিন পূজা করা হবে কথিত ওই মাধবের শ্বশুরবাড়ী যাত্রাবাড়ী মন্দিরে।

এই ঐতিহব্যবাহী রথ উৎসবকে কেন্দ্র করে গোটা ধামরাইয়ে এখন সাজ সাজ রব পড়ে গেছে । বাড়ি ঘরে আত্মীয়দের সমাগমও বেড়েছে।

সাধারন মানুষের মাঝে রথ উৎসবের পূর্ণ আমেজ বিরাজ করছে। রথ মেলাকে কেন্দ্র করে ব্যবসায়ীরাও তাদের প্রসরা সাজিয়ে বসেছে। প্রতি বছরের মতো এবারো রথ মেলাকে কেন্দ্র করে মেলাঙ্গন জুড়ে বসেছে সহস্রাধিক বিভিন্ন শ্রেণীর ষ্টল, দেশ খ্যাত সার্কাস দল দোল্লা নৌকা, বিভিন্ন আর্কষনীয় খেলাসহ আরো কত কি। রথযাত্রা উৎসব উপলক্ষে ধামরাই পৌর এলাকার কায়েতপাড়ার রথখোলা থেকে যাত্রাবাড়ির কথিত মাধবের শ্বশুরালয় পর্যন্ত রয়েছে উৎসবের মেলাঙ্গন। দীর্ঘ এ পথ জুড়ে বসেছে হরেক রকমের দোকান।
বুধবার রাত ১১ টায় কায়েতপাড়ার রথখোলায় রথের সামনে ঢাকঢোল, বাদ্য, কাঁসরঘন্টা ও মহিলাদের উলু-উলু ধ্বনিতে মাধব মন্দিরের পুরোহিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান সম্পন্ন করেন।

পরে প্রধান অতিথি সারথী মাধব মন্দিরের প্রধান পুরোহিতের হাতে প্রতীকী রশি প্রদান করে রথ উৎসবের আনুষ্ঠানিক শুভ উদ্ধোধন করেন।

(ডিসিপি/এসপি/জুলাই ০৭, ২০১৯)