সঞ্জীব কুমার দাস, কাপাসিয়া (গাজীপুর) : সম্প্রতি কাপাসিয়া বাজারের একটি দোকানে শিব মুর্তি ভাঙ্গচুরের ঘটনায় তাপস বনিকের অভিযোগ করা কাপাসিয়া থানা মামলার বিষয়ে আজ সোমবার সকালে কাপাসিয়া উপজেলা প্রশাসনের শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। 

এ সময় বাজারের শতাধিক সাধারণ মানুষ প্রত্যক্ষ করেন। শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিরা সকালে বাজারস্থ কোট কর্তৃক বুঝিয়ে দেয়া ঘরে প্রবেশ করে দেখেন যে ঘরে ২টি তুলসি কাছের ভেদী ও ছোট একটি শিব লিঙ্গে মূর্তি রয়েছে। এতে মূর্তির কোন ক্ষক্ষতি হয় নাই। যে ভাবে জেলা ম্যাজিস্ট্যট দখল বুঝিয়ে দেয় ঠিক সেই ভাবে ঘরের ভীতরে সংরক্ষিত রয়েছে। তাছাড়া ওই ঘরটি তালাবদ্ধ থাকে। যার চাবি উপজেলা নিবার্হী অফিসারের কাছে রক্ষিত রয়েছে। এথচ তাপস বনিক কাল্পনিক মূর্তি ভাঙ্গার মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষকে হয়রানী ও এলাকায় হিন্দু মুসলিমদের মধ্যে সামপ্রদায়িক উস্কানীর পরিবেশ তৈরী করছে।

ঘটনাস্থ পরিদশর্নের সময় উপস্থিত ছিলেন, কাপাসিয়া উপজেলা নিবার্হী অফিসার মোসা.ইসমত আরা,উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অ্যাভোকেট আমানত হোসেন খান,কাপাসিয়া থানার অপিসার ইনচার্জ মো.রফিকুল ইসলাম, কাপাসিয়া উপজলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মিজানুর রহমান প্রধান,উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মো. আসাদুজ্জামান আসাদ, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান মাসা. রওশন আরা সরকার, কাপাসিয়া বাজার ব্যবসায়ী সমিরি সভাপতি অধ্যাপক মোহাম্মদ আলী বদু, সহ সভাপতি মইনুল হক মিলন, উপজেলা হিন্দু বৌদ্ধ খৃষ্টান ঐক্য পরিষদের সভাপতি বাবু চিত্তরঞ্জন সাহা,কাপাসিয়া শ্রী শ্রী জয়কালী মন্দিরের সভাপতি বাবু নারায়ন চন্দ্র বনিক, সাধারণ সম্পাদক বাবু জীবন ভৌমিক, উপজেলা দুনীতি দমন কমিশনের সাধারণ সম্পাদক হাজী মো. সাইফুল ইসলাম শাহীন,উপজেলা কেন্দ্রীয় ম্মাশান ঘাট কমিটির সভাপতি বাবু স্বপন কুমার ভৌমিক এবং স্থানীয় সাংবাদিক ও হিন্দু মুসলিম সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ।

জানা যায়, উপজেলার তরগাঁও ইউনিয়নের বাঘিয়া গ্রামের বাসিন্দা ও তরগাঁও ইউনিয়ন পরিষদের তিনবারের প্রাক্তন চেয়ারম্যান মরহুম ডাঃ মোতাহার উদ্দিন ১৯৮৩ সালে বানার হাওলা মৌজার এস এ ৭৫ খতিয়ানে, ১ নং আর এস খাস খতিয়ানে এবং এস এ দাগ নং - ১৬৪ ও ৭৮০ নং- আর এস দাগে লিজমূলে ১.৫ শতাংশ সম্পত্তি এবং ১৯৮৪ ইং সালে তার স্ত্রী আমেনা বেগম ক্রয় সূত্রে আরো ৫ শতাংশ সম্পত্তির মালিক প্রাপ্ত হন।

ডাক্তারের মৃত্যর পর বর্ণিত সম্পত্তির দোকান ঘরটি তাঁর বড় ছেলে মোর্শেদ উদ্দিন প্রতিবেশী কার্তিক চন্দ্র বনিকের বড় ছেলে তাপস বনিকের নিকট মাসিক ভাড়া হিসাবে দেয়। এর কিছুদিন পর ২০০৯ ইং সালে তাপস বনিক ভাড়ার চুক্তিনামা দলিলটি সম্পত্তি আতœসাতের উদ্দেশ্যে জাল দলিল সৃষ্টি করে।

এ নিয়ে পরবর্তীতে গাজীপুর আদালতে মামলার সৃষ্টি হয়। দীর্ঘদিন মামলা পরিচালনার পর মরহুম ডাঃ মোতাহার উদ্দিন গংদের পক্ষে রায় হয়। ফলে গত ১২/৫/২০১৯ইং তারিখে গাজীপুর আদালত কর্তৃক ম্যাজিষ্ট্রেট নিয়োগ করে দোকান ঘরটির দখল পজিশন মরহুম ডাঃ মোতাহার উদ্দিনের পরিবারের নিকট বুঝাইয়া দেন।

বুঝিয়ে দেয়ার পর গত ২০জুন তাপসের ঘরের মূর্তি ভাঙ্গার অভিযোগ করে থানায় একটি অভিযোগ দাখিল করেন। পরে গাজীপুরের একজন পুলিশ কর্মকতার নিদের্শে কাপাসিয়া থানা পুলিশ গত ৩০জুন অভিযোগটি নথিভুক্ত করেন। এ মিথ্যা মামলা নিয়ে কাপাসিয়া হিন্দু সমাজের মধ্যে বিভ্রন্তির সৃস্টি হয়েছে ।

(এসকেডি/এসপি/জুলাই ০৮, ২০১৯)