চট্টগ্রাম প্রতিনিধি : চট্টগ্রাম কর্ণফুলীর কালারপোল হাজী মো. ওমরা মিঞা চেীধুরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরী’র অনৈতিক কর্মকান্ডের প্রতিবাদে ছাত্র/ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে মানববন্ধন করেছে। সোমবার সকাল ১১টার দিকে বৃষ্টি উপেক্ষা করে শত শত শিক্ষার্থীদের প্রতিবাদে নজিরবিহীন আন্দোলনের ঢেউ ছড়িয়ে পড়েছে কর্ণফুলী এলাকায়।

অত্র বিদ্যালয়ের আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করে প্রাক্তন ছাত্রছাত্রী ও এলাকাবাসী সকাল থেকে মানববন্ধন করেছে।

প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরী’র বিরুদ্ধে ব্যানারে অঙ্কিত দূর্নীতিবাজ , লম্পট, দূষ্কৃতিকারী , যৌন নির্যাতনকারী, অর্থ আত্মসাৎকারী এবং শিক্ষক সমাজের কলঙ্ক সহ নানা বিশেষণ আখ্যা দিয়ে প্রাক্তন ও বর্তমান শিক্ষার্থীরা দাবি তুলেছে দ্রুত অপসারণের।

এসময় অভিভাবক সহ শত শত শিক্ষা সচেতন মানুষ শিক্ষার্থীদের এই মানববন্ধনে অংশ নিয়ে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষকের অপসারণের দাবী করেন। এমনকি স্কুল ম্যানেজিং কমিটির বিরুদ্ধেও অভিযোগের অঙ্গুলী নির্দেশ করে শিক্ষার্থীরা জানান, তারাঁ এখন প্রতিবাদ স্বরুপ ক্লাস বর্জন করে মানববন্ধন করেছে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক’কে দ্রুত অপসারণ করা না হলে বিক্ষোভ কর্মসূচী ঘোষণা করবেন।

মানববন্ধনে বক্তারা দাবী তুলেন, বির্তকিত কোনো ব্যক্তি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধান চেয়ারে বসার অধিকার রাখেনা এবং থাকতে পারেনা। অভিভাবক ও প্রাক্তন ছাত্ররা জানিয়েছেন, অনৈতিক কর্মকান্ডের অভিযোগে এর আগেও একই শিক্ষকের বিরুদ্ধে বহু অভিযোগ করা হয়েছিলো কিন্তু স্কুল ম্যানেজিং কমিটি কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন। তার মতো শিক্ষক থাকলে বিদ্যালয়ের পরিবেশ নষ্ট হবে। এমন কর্মকান্ডের বিচার ও স্থায়ী বহিষ্কারে দাবী জানায় তাঁরা।

যদিও অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আবদুর রহিম চৌধুরী তার বিরুদ্ধে তোলা সব অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে বলেন, আমি ওই স্কুলে প্রধান শিক্ষক হিসেবে যোগদানের পর থেকে পর পর দুবার রেকর্ড পরিমাণ ভালো রেজাল্ট করেছে। ছাত্রছাত্রীদের স্বার্থে সব সময় শিক্ষকেরা যেন ক্লাস করে এমন চাপে রাখতাম। কিন্তু একটি পক্ষ বার বার বিভিন্ন অজুহাতে আমাকে গায়েল করতে চেয়েছে মিথ্যা অজুহাতে তাদের ব্যক্তিগত স্বার্থে। গতকাল ও ওই শত্রুপক্ষ আমার স্কুলের শিক্ষক সিরাজুল ইসলামের ওপর অহেতুক হামলা চালিয়েছে। আমরা নিরাপত্তাহীনতায় ভোগছি কিছু বলতে পারছিনা।’

প্রধান শিক্ষক আরো বলেন, স্কুলের বর্তমান অবস্থা! কেন বার বার একটি পক্ষ শিক্ষার পরিবশে ঘোলা করছে তার সামগ্রিক বিষয় নিয়ে তাঁরা একটি প্রেস ব্রিফিং/ সংবাদ সম্মেলন করবেন শীঘ্রই।’

এ প্রসঙ্গে কালারপোল হাজী মো. ওমরা মিঞা চৌধুরী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক মোখলেসুর রহমান জানান, আজ সকালে শিক্ষার্থীরা তাদের দাবি নিয়ে মানববন্ধন করেছে। গতকাল এমপিও ভুক্ত ১৩ শিক্ষক উপজেলা নির্বাহী অফিসারের সাথে দেখা করে সার্বিক বিষয়ে অবগত করেছেন। যা দেখেছি এতটুকুই এর চেয়ে বেশি কিছু বলতে পারবনা।’

বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক এম মহিউদ্দীন চৌধুরী বলেন, ‘স্কুলে মানববন্ধন হয়েছে কিনা জানিনা। আমি এখন ভার্সিটিতে আছি ছেলেদের পরীক্ষা চলছে একটু ব্যস্ত। তবে গতকাল স্কুলে একটু করে গিয়েছিলাম তখন শোনেছিলাম বিষয়টি। আমি খবর নিয়ে পরে জানাবো।’

এ ব্যাপারে কর্ণফুলী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দ শামসুল তাবরীজ বলেন, ‘অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে বিধিগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিক্ষার পরিবেশ যাতে নষ্ট না হয় সে ব্যাপারে স্কুল কর্তৃপক্ষকে সর্তক দৃষ্টি রাখতে বলা হয়েছে।’

এ সময় মানবন্ধনে প্রাক্তন ছাত্রদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন মুহি উদ্দীন মুরাদ, হাসান মুরাদ সাগর, তারেকুল ইসলাম, সেলিম খাঁন, সালাহ্ উদ্দীন খোকন, শহীদ হোসাইন, ইলিয়াছ মধু, সেলিম উদ্দীন সানী, বাহাদুর খাঁন, মারুফ উদ্দীন নীরব, এমএ রহিম, আরিফ হোসেন, বর্তমান ছাত্র ও কেবিনেট সদস্যের মধ্যে তৌহিদুল ইসলাম, তিশা গালিব, তুহিন, সেলিম হোসাইন, অভিভাবক ইদ্রিস মেম্বার, মাকসুদ মেম্বার, মো. ইউনুছ, জাফর আলম ও মো. তালেব।

এছাড়াও এমপিও ভুক্ত শিক্ষক রতন সুত্রধর, রফিক আহমদ, শ্যামল কান্তি দত্ত, অধীর কান্তি বিশ্বাস, অমল কুমার, স্বপ্না দে, টিংকু দে, মো. আলমগীর, কল্লোল দাস, রিটন নাথ, সাজ্জাদ হোসেন, আব্দুশ শুক্কুর, জহিরুল আলম, নাসির আহমদ, সাইফুল ইসলাম, কাঞ্চন কুমার চৌধুরী, মোহাম্মদ হোসেন, মুবাশ্বেরা হেজাজী।

(জেজে/এসপি/জুলাই ০৮, ২০১৯)