ঈশ্বরদী (পাবনা) প্রতিনিধি : দাশুড়িয়া ডিগ্রি কলেজের চাকুরী খেকো বলে খ্যাত অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদেরের বিরুদ্ধে এবারে স্বাক্ষর ও সীলমোহর জাল করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

কাদেরের বিরুদ্ধে কলেজের তহবিল হতে বিভিন্ন উপায়ে আর্থিক দূর্র্নীতির তদন্ত চলা অবস্থাতেই তিনি ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষের স্বাক্ষর জাল এবং নিজেই সীলমোহর লাগিয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ব্যানবেইসে আবেদন জমা দিয়েছেন বলে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম জানিয়েছেন। জালিয়াতির বিষয়ে ঈশ্বরদী থানায় একটি সাধারণ ডায়েরী করাও হযেছে। জিডি নং-৫৪,তারিখ-১/৭/১৯ইং।

জিডি সূত্রে জানা যায়, ০১১২৭২ ইনডেক্স নম্বরধারী অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদের গত ২৫ জানুয়ারী শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে বাংলাদেশ শিক্ষা তথ্য পরিসংখ্যান ব্যুরোর মহাপরিচালক বরাবরে ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শহিদুল ইসলামের স্বাক্ষর জাল পূর্বক নকল প্রত্যয়নপত্র তৈরী করে কল্যাণ ভাতার টাকা উত্তোলনের জন্য আবেদন করেন। যার নম্বর সি-২২৯৭৩০১২০। কলেজের অধ্যক্ষ থাকাকালীন সমযে তিনি কলেজের বিভিন্ন দূর্নীতির সাথে জড়িত ছিলেন বলে জিডিতে উল্লেখ করা হয়। অবসরকালীন পাওনা টাকা উত্তোলনের জন্য তিনি আবারো অপরাধ ও দূর্নীতির আশ্রয় গ্রহণ করায় কলেজের শিক্ষক-কর্মচারীরাও ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানান, ঈশ্বরদীতে দূর্নীতির বরপুত্র হিসেবে তিনি পরিচিত। অবৈধ ও অন্যায়ভাবে কলেজের ৩ জন শিক্ষককে চাকুরীচ্যুত করে তাদের জীকন বিনষ্ট করেছেন। এদের মধ্যে ইংরেজীর শিক্ষক সাইফুল ইসলাম ৭/৮ বছর যাবত মামলা পরিচালনা করায় পর শেষ পর্যন্ত আদালতের নির্দেশে সম্প্রতি তিনি চাকুরী ফিরে পেয়েছেন।

বিগত ১১-৮-১৭ তারিখে কলেজের শিক্ষক ও কর্মচারীরা অধ্যক্ষের অনিয়ম ও দূনীতির বিরুদ্ধে গভর্নিং বডির সভাপতি ও সাবেক ভূমিমন্ত্রী শামসুর রহমান শরীফের নিকট অভিযোগ দাখিল করেন। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে ৫-৯-১৭ তারিখে অনুষ্ঠিত গভর্নিং বডির সভায় দূর্নীতি তদন্তের জন্য জিবি সদস্য সাইদুর রহমান মান্না সরদারকে আহব্বায়ক এবং আবু বাশার সিদ্দিকী ও দাশুড়িয়ার চেয়ারম্যান বকুল সরদারকে সদস্য করে ৩ সদস্য বিশিষ্ঠ তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। তদন্ত চলা অবস্থায় অধ্যক্ষ কাদের গত ২-৭-১৮ তারিখে অবসর গ্রহন করেন।

চলমান তদন্তে তার বিরুদ্ধে ভাউচার ও রশীদ জালিয়াতি করে ছাত্র-ছাত্রীদের বেতন, পরীক্ষার ফি, সেশন ফিসহ যাবতীয় কল্যাণ ও উন্নয়ন ফি আত্মসাতের অভিযোগের সাথে চাকুরী দেওয়ার নামে শিক্ষকদের নিকট হতে প্রায় কোটি টাকা আত্মসাতেরও অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ জানান, তদন্ত এখনও চলমান রয়েছে। যেকারণে তিনি অবসরে যাওয়ার পর গভর্নিং বডির সভার সিদ্ধান্ত ছাড়া অবসরকালীন ভাতা ও কল্যাণ তহবিলের টাকা উত্তোলনের জন্য ছাড়পত্র দেওয়া হয়নি।

তিনি পূর্বের ন্যায় আবারো জালিয়াতির আশ্রয় গ্রহন করে আমার স্বাক্ষর ও সীল জাল করে কল্যাণ তহবিলের টাকা উত্তোলনের জন্য ছাড়পত্র তৈরী করে ব্যানবেইসে দাখিল করেছেন।

এ ব্যাপারে অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ আব্দুল কাদেরের ০১৭১৫-১৮২০২০ মোবাইলে রবিবার ও সোমবার বারংবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।

(এসকেকে/এসপি/জুলাই ০৮, ২০১৯)