মানিক বৈরাগী


গতকাল থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি খবর ভাসছে ব্যাপক ভাবে তা হলো বিএনপির সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান ও বেগম খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা ইনাম আহমেদ চৌধুরী মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ পেয়েছেন।

চামচারা সেটা বেশ জোরেশোরে প্রচার করছে।আর আদর্শিক যারা তারা কেউ কেউ মিনমিনে কেউ ক্ষেপা পাগলার মতো প্রতিবাদ করছে। গেলো মাসের ৩০ তারিখ আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের সাংবাদিকদের উদ্যেশে বলা এক বক্তব্য নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় শুরু হয়েছে। তা নিয়ে আপনাদের অনুরোধে আমারও লিখতে হয়েছে। এরপর যেদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনা চিন সফর শেষে দেশে এলেন সেইদিন রাত থেকে ইনাম এর বিষয় টি পত্র-পত্রিকায় ঘুরছে। এবার ও আর স্থির থাকতে পারলাম না।তাই এ কলাম।

কীভাবে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে যোগদান সংস্কৃতি এলো তার একটি নুন্যতম ভূমিকা না টানলে নয়। বিশেষ করে বাংলাদেশ আওয়ামীলীগ এর জন্যে যোগদান সংস্কৃতি কি মারাত্মক ভূমিকা পালন করে তা তুলে ধরতে চাই। ভারত উপমহাদেশে বিশেষ করে পশ্চিম বঙ্গ, পূর্ববঙ্গ ও পাকিস্তান এ অঞ্চল গুলোতে ৪৫ থেকে ৪৭ এসময় টাতে টলটলায়মান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তে কংগ্রেস, স্বরাজ, কৃষক প্রজা পার্ট, মুসলীমলীগ সহ আরো অন্যান্য রাজনৈতিক দলে জোটের জোটের রাজনীতি বিরাজমান। কে কখন কার জোটে যোগদিচ্ছে এমন পরিস্থিতি ও কমনয়।

৪৭ পরবর্তী পাকিস্তান পর্বে কলকাতা ফেরত পূর্ব বাংলায় রাজনৈতিক নেতাদেরও কি অবস্থা। কতৃত্ব পরায়ন মুসলীমলীগে যখন উদার প্রগতিশীল তরুণ ছাত্রনেতা গণ রাজনৈতিক ঠিকানা খোজছে তাদের সামনে যখন দেখছে কলকাতায় যেসব মুরব্বিরা সিদ্ধান্ত হীনতায়, বিভক্ত তখন গড়ে উঠে প্রগতিশীল যুব সংগঠন যুবলীগ। এ যুবলীগে বাম উদার ও ডানেরও কিছু তরুণ নেতৃত্বে। যুবলীগ কমিটি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান যেমন ছিলেন, একি ভাবে কমরেড তোয়াহা, অলি আহাদ, শাহ আজিজুর রহমানও ছিলেন, ছিলেন আরো অনেকে।

শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, মাওলানা ভাসানি আবুল হাসিমেরা তখনো কোনো রাজনৈতিক সংগঠন গড়ে তুলেনি, কতৃত্ত পরায়ন মুসলীম লীগে মাওলানা আকরাম খাঁ গোষ্ঠী মুসলীম লীগের তাদের কে মুসলীম লীগের ধারে কাছেও ঘেষতে দেয়নি, তখন মাওলানা সাহেবের হুষ হলো একটি রাজনৈতিক ফ্লাট ফর্মের। এরও পূর্বে পূর্ব বাংলায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগ গঠন হয়েছে। যুবলীগ ও ভাষা আন্দোলন এবং রাজনৈতিক পথ পদ্ধতি বিষয়ে ভাগ হয়ে স্থীমিত হয়ে যায়।

এর পর পাকিস্তানে ভোটের হাওয়া বইছে।পশ্চিমা শক্তি তাদের মুসলীম লীগ শক্তিশালী অবস্থানে।
এই সময়ে জোট গঠন ও নেতা ভেড়ানো, ক্মতায় গিয়ে মন্ত্রী হওয়া বিভিন্ন বাসনায় কত বড় বড় নেতা কে কখন কার হাত ধরে জোটে আসবে ভিড় জমামে তার হিসাব নিকাশ চলতো। এই সময়ে নিখিল পাকিস্তানের নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী নিখিল আওয়ামী মুসলীম লীগের নেতা ও পূর্ব বাংলার আপামর জনতার ভক্তি ভালোবাসার আসনে আসিন। মাওলানা ভাসানী পূর্ব বাংলা আওয়ামী মুসলীম লীগের নেতা। তরুণ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান তো আছেই। জেলে যাচ্ছে বের হচ্ছে এমনি পরিস্থিতি।
শেখ মুজিবুর রহমান যত দিন জেল মুক্ত থাকতেন ততদিন আওয়ামী মুসলীম লীগের কাজ চলতো, নাহয় ঢিলে ঢালা।

সেই যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন থেকে ইতিহাস ঘাটাঘাটি করলে দেখা যাবে ব্যক্তি স্বার্থে, রাজনৈতিক দার্শনিক ইস্যুতে শেখ মুজিবুর রহামানের প্রাণের নেতা,পিতৃতুল্য নেতা আওয়ামীলীগ ছেড়ে যাচ্ছে, জোট করছে, নেতা বেরিয়ে যাচ্ছে, আবার সুযোগ বুঝে যোগদান করছে। কিন্তু শেখ মুজিবুর তাঁর রাজনৈতিক দর্শন ও লক্ষ্যে স্থীর অবিচল অগ্রযাত্রায় এগিয়ে নিচ্ছে আওয়ামীলীগের রাজনীতি।

৬ দফা ইস্যুতে শেখ মুজিবুর রহমানের কত প্রাণের বন্ধু মাওলানা সাহেবের সাথে সুর মিলিয়ে আওয়ামীলীগ ছেড়ে চলে গেলো, ৭০এর নির্বাচনে এসে উপায় অন্তর না দেখে নিজের অস্থিত্ব টিকিয়ে রাখতে ৭০এর নির্বাচনের প্রাক কালে এসে যোগ দিয়ে আওয়ামীলীগের হয়ে নির্বাচন করে এমপি হয়ে গেলো আওয়ামীলীগ বনে গেলো। এর মধ্যে অন্যতম খন্দকার মুস্তাক আহমদ। সেই সময় সেই প্রেক্ষাপটে শেখ মুজিবুর রহমানের রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে ওটি শতভাগ ঠিক ছিলো।

একাত্তরে মহান মুক্তিযুদ্ধে এসব যোগাদন ও জোটগত রাজনৈতিক নেতাও বন্ধুরা অনেকেই ভারতে আশ্রয় নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী, বিভ্রান্তি আন্ত কোন্দলের ভূমিকায় অবতীর্ণ। কেউ কেউ ভারতে গিয়ে ফিরে এসে আবার মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী ভূমিকায় অবতীর্ণ হন।এরমধ্যে অলি আহাদ, মশিউর রহামান যাদু মিয়া, আতাউর রহামান খান, স্বাধীনতার পর মাওলানা।শাহ আজিজুর রহমান কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের সময় থেকে পাকিস্তানি দালালের ভূমিকায় অবতীর্ণ।

এখানে ক্ষমার রাজনীতির একটি উদাহারন না দিলে নয়, "আজিজুর রহমানের স্ত্রী তার স্বামীর মুক্তির জন্যে শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে আবেদন জানান। শেখ মুজিবুর রহমান তাঁকে জবাবে বলেছিলেন আইন তার নিজস্ব গতিতে চলবে। এস এম আলীর বেলায়ও অনুরূপ ঘটে। "এসময় শেখ মুজিবুর রহমান তাঁর ব্যক্তিগত সচিবকে চমকে দিয়ে নির্দেশ দেন যেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল থেকে যেন আজিজুর রহমানের স্ত্রীকে প্রতিমাসে সংসার চালানোর জন্য ৫০০টাকা দেয়া হয়।" তো শেখ মুজিবুর রহমান এমন অপরাধী রাজনৈতিক বন্ধুদের বিবেকের উদারতায় অনেক যুদ্ধাপরাধী সুযোগ নিয়েছিলেন।

এবার একজন যুদ্ধাপরাধী সাংবাদিকের উদাহারন দিতে হয়, "যখন ওই সাংবাদিক বুঝতে পেরেছিলেন যে শেখ মুজিবুর রহমানের রাগ একটু কমে এসেছে তখনই তিনি পাশের কক্ষে অপেক্ষারত তার বোনকে শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে নিয়ে এসে পরিচয় করিয়ে" দেন। তখন স্নেহভরা কণ্ঠে শেখ মুজিবুর রহমান তাকে প্রশ্ন করলেন " আমি তোমার জন্যে কি করতে পারি? তখন সাংবাদিকের বোন উত্তর দেন, 'আমার স্বামী গত ছয় মাস যাবত কারাগারে আছে।আমি এটা আর সয্য করতে পারছিনা।' শেষে তিনি শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে প্রশ্ন রাখেন, 'আমি আর আমার সন্তানের অপরাধ কি?'

শেখ মুজিবুর রহমান এ কথা শুনে অপ্রস্তুত হয়ে গিয়েছিলেন। তখন তিনি প্রশ্ন করেন, 'তোমার ভাই কোথায়। সে তোমাকে এখানে নিয়ে এসে নিজে কেটে পড়েছে। চিন্তা করো না। তোমার ভাইকে বল সে যেনো আমাকে আগামীকাল ফোন করে।' পরদিন ওই নারীর স্বামীকে ছেড়ে দেয়া হলো। এ হলো বঙ্গবন্ধুর সময়ে চাটুকারদের অবস্থা। এই চাটুকারেরা জানতো কিভাবে বঙ্গবন্ধুর মন গলানো যাবে।

এ নিয়ে বিখ্যাত সাংবাদিক এল এ খতিব লিখছেন, "শেখ মুজিবুর রহমানের কাছে কিভাবে আবেদন জানাতে হবে।যারা সেটা ঠিক মতো জানতো তারা তাঁকে দিয়ে প্রায় যে কোন কিছুই করিয়ে নিতে পারতো।"

বঙ্গবন্ধুর উদারতা মানবিকতা কে কে কিভাবে যে রাজনৈতিক আদর্শ মুক্তিযুদ্ধের তরতাজা ক্ষত ভুলে সে সময় চাটুকারেরা এমনি পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছিলো। যারা সুযোগ সুবিধা নিয়েছিলো তারাই আবার বঙ্গবন্ধু বিরোধী ভুমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিলো। এরাই ৭৫র ঘফিয়েছিলো।এরাই পরবর্তী খন্দকার মুস্তাক জিয়া এরশাদ কে বলিয়ান করেছিলো।

এবার আসা যাক আমলা পর্বে।স্বাধীনতার পর যেসব বাঙ্গালি সামরিক ও বেসামরিক আমলা মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেনি, পাকিস্তানের পক্ষে অবস্থান নিয়ে হানাদার বাহিনীর দালালী করে ছিলো যুদ্ধরত বাংলাদেশে ও পাকিস্তানে। এরা ফিরে আসে যুদ্ধবন্দী চুক্তির মধ্যদিয়ে। তারা এসে স্বাধীন বাংলাদেশে সামরিক ও জনপ্রশাসনে কি পরিস্থিতি তৈরি করেছিলো তা একটু তলিয়ে দেখা যাক।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৪, ৭৫'র দিকে বাকশাল গঠন পর্বে ত্রিদলীয় ঐক্যজোট গঠন করলেন,সিপিবি ন্যাপ ও আওয়ামীলীগ নিয়ে।বাকশাল গঠন করলেন।এই বাকশালে আওয়ামীলীগের ডান ব্লগের মধ্যে ব্যারিস্টার মইনুল হোসেন গং সরাসরি বিরোধিতা করলো, ধূর্ত খন্দকার মুস্তাক ও চতুর সামরিক ও বেসামরিক আমলারা দলে দলে বাকশালের সদস্য হতে লাগলো।

আর এক দিকে বাকশালের বিপক্ষে মাঠে জাসদ, ভাসানী, ন্যাপ, সর্বহারা পার্টি, অলি আহাদের জাতিয় লীগ প্রকাশ্যে সভা সমাবেশ ও রাতে সর্বহারা পার্টি আওয়ামীলীগ নিধন করতে লাগলো। "ফলশ্রুতিতে দেশ বহুদলীয় সরকার ব্যবস্থা থেকে একদলীয় ব্যবস্থায় যায়।এতে দল শুধু জনগণ থেকে বিচ্ছিন্ন হয়নি, সামরিক ও বেসামরিক আমলারা, যার যার অবস্থান থেকে প্রচারণা সরকারের বিরুদ্ধে একটা বিরূপ ধারণা সৃষ্টির সুযোগও এতে পেয়ে গেলো। এইসব আমলার কাজই ছিলো দপ্তরে বসে আওয়ামীলীগের সমালোচনা করা।তাছাড়া কী'৭২-পূর্ব সামরিক আমলা, সে মুক্তিযোদ্ধা কী পাকিস্তান প্রত্যাগত এদের ট্রেনিং এবং মোটিভেশান ছিলো যে, সামরিক বাহিনীর লোকই হলো দেশ পরিচালনার জন্যে সর্বগুণে গুণান্বিত। "
এই সামরিক আমলাদের মধ্যে হলেন বর্তমান মৃত্যুপথযাত্রী স্বৈরাচার এরশাদ।তিনি পাকিস্তানে বন্দী বা ট্রেনিং এ ছিলেন।

আর বাংলাদেশের বিখ্যাত খাদ্য পন্য কোম্পানি "প্রাণ" এর মালিক আমজাদ খান। তিনি মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানিদের হয়ে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধ করেছেন এবং যুদ্ধাপরাধী হিসাবে পাকিস্তান ফেরত গেছেন।
কি আশ্চর্যজনক তিনি আবার পাকিস্তান থেকেফেরত আসেন যুদ্ধবন্দী হিসাবে।আরো একজন নাম উল্লেখ করতে পারি তিনি হলেন ডাক্তার অধ্যাপক বদরুদ্দোজা চৌধুরীর এলডিপির মহাসচিব আব্দুল মান্নান।

সম্প্রতি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দেশরত্ন শেখ হাসিনার উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগপ্রাপ্ত ইনাম আহমেদ চৌধুরী।
এখানে আর একটি বিষয় উল্লেখ না করলে নয়,স্বাধীন বাংলাদেশ অস্থায়ী সরকারের পররাষ্ট্র মন্ত্রী ছিলেন খন্দকার মুস্তাক, পরে তাকে ঐ পদ থেকে নিষ্ক্রিয় রাখা হয়। এই পররাষ্ট্র দপ্তরের সচিব ছিলেন মাহবুবুল আলম চাষি। উভয়ের বাড়ি কুমিল্লায়। উভয়ই ছিলেন পাক মার্কিন সমর্থক। উভয়ই মিলে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে চক্রান্ত শুরু করেছিলেন। জানাজানি হওয়ার পর মাহবুবুল আলম চাষি কে পররাষ্ট্র সচিবের পদ থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করা হয়েছিল।

বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর মাহবুবুল আলম চাষি প্রতিষ্ঠিত কুমিল্লা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রে বসেই পাকিস্তান ফেরত সামরিক আমলা ও বেসামরিক আমলারা প্রশিক্ষণ নিতো,ছুটিতে যেতো(এই ছুটিতে বেড়াতে যাওয়া কে কেন্দ্র করে মুজিব হত্যার চক্রান্ত গড়ে উঠে।

এদিকে পাকিস্তানিদের সেবা দান কারি আমলাদের পাকিস্তানের সামরিক শাসক আইয়ুব খান যাদের বিভিন্ন তকমা বা বিশেষণে ভূষিত করেছিলেন, তাদের কে দেশ স্বাধীনতার পর তালিকা করে চাকুরি চ্যুত করা হয়। এই চাকুরিচ্যুত আমলার মধ্যে হলেন সেদিন বিএনপির চেয়ারপার্সন খালেদার উপদেষ্টা থেকে বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা হিসাবে নিয়োগ পাওয়া ইনাম আহমেদ। তিনি অনেক ধ্বংসাত্মক মেধাবী আমলা। যিনি জিয়া এরশাদ কে ক্ষমতায় নানা অপরাধের সুযোগের পথ তৈরি করেছিলেন। চাকুরি থেকে অবসর নিয়ে বিএনপির রাজনীতির সাথে যুক্ত হন।

বিএনপির খালেদা জিয়ার সময়ে প্রাইভেটাজেশন বোর্ডের চেয়ারম্যান হন। আরো কত কিছু। বিএনপির অর্থমন্ত্রী সাইফুর রহমানের খুবই বিশ্বস্ত জন।একিভাবে আর এক মেধাবী অর্থনীতিবিদ সাবেক আমলা এরশাদ ও আওয়ামীলীগের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত।বর্তমানে তাঁর বর্তমান সরকারের মন্ত্রী।
সেই বাকশাল যখন গঠন হলো তখন কে কার আগে বাকশালে যোগদান করবে তারই একটি হই হুল্লোড় পড়ে গেলো। কে কার আগে বাকশালে যোগাদান করবে সদস্য হবে তার প্রতিযোগিতা ও তোড়জোড়ে চিরকালিন আদর্শিক আওয়ামীলীগের তরুণ ছাত্র মুক্তিযোদ্ধারা ব্যাক্তিগত ভাবে হতাশ সিদ্ধান্ত হীনতায় ভোগতে লাগলো। এমন সময় সকল পাকিস্তান পন্থী বা ডানপন্থীরা রাতারাতি বাকাশাল ও এমনভবে সমাজতন্ত্রী হতে লাগলো আওয়ামীলীগের ভেতরে থাকা প্রকৃত সমাজতন্ত্রীরও দিশে হারা হয়ে গেলো।

ভাবান্বিত হলো আসলে কি হতে যাচ্ছে "যা হোক,বাকশাল নিয়ে একটা মহা তোড়জোড় শুরু হয়ে গেলো। চারদিকে হৈ হৈ রৈ রৈ রব। কে কার আগে বাকশালের সদস্য হবে, তার প্রতিযোগিতা চলতে লাগলো। সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা আতাউর রহমান খান ২৫ এপ্রিল বিবৃতি দিয়ে বাকশালে যোগ দিলেন"।
অথচ এরাই ১৫আগস্টের পর বাকশালের সমালোচনায় পঞ্চমুখ ছিলেন।

এই পঞ্চমুখ ওয়ালাদের মধ্যে শুধু রাজনৈতিক নেতা নন, ছিলেন শিক্ষক, সাংবাদিক, বুদ্ধিজীবী, আইনজীবী সহ বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ। বাকশালে সামরিক বেসামরিক আমলারাও বাদ যান নি।জিয়া এরশাদ উভই কিন্তু বাকশালের সদস্য হয়েছিলেন।সেই আতাউর রহমান খান,ক্ষমা পেয়ে যাও শাহ আজিজুর রহমান পরবর্তী রাজনৈতিক অবস্থান আপনারা সকলেই জানেন।

বর্তমান অবস্থা দৃষ্টিতে ইনাম আহমেদ চৌধুরীর আওয়ামীলীগ বনে যাওয়াটা কি তারই নামান্তর নয় কি?
প্রবাদ আছে " ঘরপোড়া গরু সুদুরে মেঘ দেখলে ভয় পায়"আমিও দুর্দিনের একজন নির্যাতিত মুজিব সেনা হিসাবে ভয় পাচ্ছি বর্তমান আওয়ামীলীগ ও আওয়ামীলীগ সরকারের অবস্থা। আমি দেশরত্ন শেখ হাসিনার প্রতি চরম আস্থা রাখি ও বিশ্বাস করি। কিন্তু সতর্কতার মাইর নাই।বিগত জিয়া, এরশাদ, খালেদা,খালেদা-নিজামীর সময়ে আমি আমার ভাই বোনের আওয়ামী রাজনৈতিক অবস্থানের কারনে তৃণমূলের যে যন্ত্রনা ও নির্যাতন আমার পরিবারের সদস্যরা ভোগ করেছে তা মনে এলে গা শিউরে উঠে। মূর্ছা যায় সকল অনুভূতি। কিছুই তো চাইনি পাইনি এই আওয়ামীলীগ রাজনীতি থেকে শুধু হতাশার বেদনা ছাড়া।

যুদ্ধাপরাধী ইনাম আহমেদ রচিত বই গুলি পড়লে বুঝাযায় তিনি কি পরিমাণ আওয়ামীলীগ কে ঘৃণার অবস্থান থেকে দেখে। ওনি ও ওনার ওস্তাদ মেধাবী সাবেক আমলা, সাবেক বিশ্বব্যাংক এর কর্থা আওয়ামীলীগ ও স্বৈরাচার এরশাদের অর্থমন্ত্রী আবুল মাল মুহিত সিলেটের স্থানীয় রাজনীতি আওয়ামীলীগের দীর্ঘদিনের বিশ্বস্ত ত্যাগী বদর উদ্দিন কে কামরান ও নৌকা কে পরাজিত করতে প্রয়জনে আওয়ামীলীগ এ যোগদান করবো। এই তাদের চিন্তা ও কর্ম।

আমার এ লেখা কামরানের পক্ষে সাফাই গাওয়া নয়,বাস্তবতার কথাই বললাম। বিগত সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচনে তাই দেখা গেছে। ইনাম আহমেদ চৌধুরী যদি সত্যি আওয়ামী রাজনৈতিক দর্শন ও রাজনীতি কে বিশ্বাস করে আওয়ামীলীগে যোগাদান করেন তাহলে তাঁর উচিত হবে সংবাদ সম্মেলন করে জাতির ক্ষমা চাইতে হবে একাত্তরে চাকুরী কালিন সময়ে পাকিস্তানের পক্ষে দালালী র অপরাধের জন্যে।
নাহয় আওয়ামীলীগের তৃণমূল নেতা কর্মীরা তাকে ঘৃণা ভরে মানসিক ভাবে হলেও প্রত্যাক্ষান করবে, মনে মনে। আজ এত টুকুই প্রিয় মুজিব প্রেমী পাঠক পাঠিকারা।

লেখক : কবি ও নব্বইয়ের নির্যাতিত ছাত্রনেতা,কক্সবাজার।

ঋণ স্বীকার

১-হু কিল্ড মুজিব-এ এল খতিব
২-রাজনীতির তিনকাল -মিজানুর রহমান চৌধুরী
৩-বাংলাদেশ শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল-মওদুদ আহমদ।
৪-সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম
৫-পত্রিকার আর্কাইভ।