ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি : ঠাকুরগাঁওয়ে বসতভিটার মাত্র এক শতক জমি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে মানসিক নির্যাতন ও বিভিন্ন ধরনের হয়রানি ও হুমকি-ধামকির শিকার হয়ে ন্যায় বিচারের আশায় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন এক মুক্তিযোদ্ধার সন্তান।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঠাকুরগাঁও শহরের প্রাণকেন্দ্র আশ্রমপাড়া(ইমরান বেকারী সংলগ্ন) এলাকায় নিশ্চিন্তপুর মৌজার ৫২৮ দাগে ২০ শতক জমি ভোগ দখল করে আসছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম সামসুল হক এর সন্তান ও পৌর ছাত্রলীগের সাবেক সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও বর্তমান জেলা মুক্তিযোদ্ধা চেতনালীগের সমাজসেবা বিষয়ক সম্পাদক মো: এনামুল হক বাবু।

কিন্তু তার বসতভিটার প্রায় এক শতক (দেড় ফিট চওড়া ও প্রস্থ পঁচানব্বই ফিট) জমি জোরপূর্বক দখল করে সেখানে কাউকে না জানিয়ে সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে পায়েলিং করে বেজ ঢালাই করেন জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মো: ওবায়দুল্লাহ মাসুদ। এ ঘটনায় উভয়ের মধ্যে দ্বন্দ চলে আসছে।

এ নিয়ে এনামুল বাবু বিষয়টির সুরাহা চেয়ে পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দিলেও তা আমলে নেননি বর্তমান মেয়র। উপরন্তু তিনি দ্বিতীয় তলার ছাদ ঢালাই দেওয়ার সময় মেয়র মির্জা ফয়সল আমিন, নির্বাহী প্রকৌশলী মো: বেলাল হোসেন, ৮নং ওয়ার্ড পৌর কাউন্সিলর নূর ইসলাম নুরু সহ পৌরসভার কর্মকর্তারা এসে প্লান অনুমোদন নেই বলে কাজ আটকে দেওয়ার চেষ্টা করেন। অথচ এস এম এ মঈন পৌর মেয়র থাকা কালে এ প্লান অনুমোদন দেয় পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী মো: বেলাল হোসেন। এসময় এনামুল বাবু এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করলে এর কোন সদুত্তর দিতে পারেননি মেয়র। ফলে ছাদ ঢালাইয়ের কাজ অব্যাহত রাখেন তিনি।

এদিকে এনামুল বাবু অভিযোগ করে বলেন, এ ঘটনার ২/৩ দিন পর তার বাসায় সদর থানা থেকে কয়েকজন পুলিশ এসে কাজ বন্ধ করতে বলেন, তবে কেন কাজ বন্ধ করবেন এমন প্রশ্ন করলে পুলিশ তাকে জানায় উপর থেকে নির্দেশনা আছে।পরে তিনি খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন ওবায়দুল্লাহ মাসুদ তার ভাস্তিজামাই জনৈক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল-কে দিয়ে জেলা পুলিশ সুপারকে প্রভাবিত করে এ কাজটি ঘটিয়েছেন।

এরপরও বাবু ঢালাই কাজ অব্যাহত রাখলে ওবায়দুল্লাহ মাসুদ ক্ষমতার অপব্যবহার করে জেলা লেবার সমিতির সভাপতি মজিবর ও সাধারণ সম্পাদক নজরুলকে বশে এনে এনামুল বাবুর ছাদ ঢালাই কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের জোর পুর্বক ভয়ভীতি দেখিয়ে নিয়ে যান, ফলে তিনি আর ছাদ ঢালাই কাজ সমাপ্ত করতে পারেননি।

পরবর্তীতে এনামুল বাবু জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মুহা. সাদেক কুরাইশীর শরনাপন্ন হলে তাঁর সহযোগিতায় তিনি দ্বিতীয় তলার ঢালাই কাজ সম্পন্ন করেন।

এদিকে ছাদ ঢালাই সম্পন্ন হলে আরো তেলে-বেগুনে জ্বলে ওঠে ওবায়দুল্লাহ মাসুদ। এরমধ্যে এনামুল বাবু অসুস্থ্য হয়ে পড়লে তার অসুস্থতার সুযোগ নিয়ে এবার তিনি জোর পুর্বক তার জমির পানি নিস্কাসনের জায়গাটুকু দখল করে তার স্থাপনার বাথরুম ও পানি নিস্কাসনের রাস্তা তৈরী করে ঢালাই কাজ সমাপ্ত করেন। এতে এনামুল বাবু আর তার বিল্ডিংয়ের কাজ সমাপ্ত করতে পারছেন না।

এ অবস্থায় কোন উপায় না পেয়ে বিষয়টি নিরসনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন তিনি।

তিনি আক্ষেপ করে বলেন, আমি একজন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান, নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করেছে আমর বাবা সহ বীর মুক্তিযোদ্ধারা। অথচ স্বাধীন দেশেই তাদের উত্তরসূরীরা আজ পরাধীন স্বাধীনতা বিরোধীদের হাতে। আমি ন্যায় বিচারের আশায় জেলা প্রশাসন সহ জনপ্রতিনিধিদের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

(এফ/এসপি/জুলাই ০৯, ২০১৯)