শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুরে দেশব্যাপি ধর্ষণ, শিশু ধর্ষণ, হত্যা ও নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে মানববন্ধন কর্মসূচী পালন করা হয়েছে। আজ বেলা ১১টায় শরীয়তপুর জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে জাতীয় মহিলা সংস্থা ও বাংলাদেশ মানবাধিকার কামিশন, আইনজীবী, বেসরকারি সংস্থা এসডিএস, নুসা, নারী নির্যাতন প্রতিরোধ জোটসহ বিভিন্ন পেশাজীবী ও বেসরকারী সংগঠন ও বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মানববন্ধনে অংশগ্রহণ করেন।

দেশব্যাপী ধর্ষণের বিরুদ্ধে মানববন্ধন হলেও সম্প্রতি শরীয়তপুরের এক চাঞ্চল্যকর ধর্ষণ মামলায় একজন নারী আইনজীবীর আবেদণের প্রেক্ষিতে একজন নারী বিচারক কলেজ ছাত্রী ধর্ষণের আসামী মেয়র পুত্রকে ঘটনার মাত্র সাতদিনের মাথায় জামিন দেয়ার বিষয়টি প্রতিপাদ্য হয়ে দাঁড়ায়।

মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য রাখেন, জেলা জাতীয় মহিলা সংস্থার চেয়ারম্যান মানবাধিকার নেত্রী এ্যাডভোকেট রওশন আরা, শরীয়তপুর জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি এডভোকেট আবুল কালাম আজাদ, জেলা মানবাধিকার কমিশনের সভাপতি এ্যাডভোকেট মাসুদুর রহমান, এসডিএস পরিচালক বি,এম কামরুল হাসান, নুসা পরিচালক জয়দেব কুন্ড, শরীয়তপুর সদর উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান সাবিনা ইয়াসমিন, সাংবাদিক প্রতিনিধি কাজী নজরুল ইসলাম, আইনজীবী ও কলামিস্ট আসাদুজ্জামান জুয়েল, নিরাপদ সড়ক চাই কমিটির সভাপতি এ্যাড. মুরাদ মুন্সি প্রমুখ।

উল্লেখ্য, গত ২৯ জুন বিকেলে শরীয়তপুর জেলার জাজিরা পৌরসভার মেয়র ইউনুছ বেপারীর বিবাহিত পূত্র মাসুদ বেপারী তার দু:সম্পর্কের আত্মীয়া হতদরিদ্র প্রান্তিক কৃষকের এক কলেজ পড়–য়া মেয়েকে নিজ বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোর পূর্বক ধর্ষণ করে।

এক পর্যায়ে মেয়েটিকে শ্বাস রোধ করে হত্যার চেষ্টা করে। নিজের বুদ্ধি আর সাহসিকতার জোরে মেয়েটি পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। বিষয়টি রাত ১০টার দিকে জেলা পুলিশের উর্ধতন কর্তৃপক্ষ জানতে পারলে মাসুদ বেপারীকে ওই দিন রাত আড়াইটার দিকে আটক করে। ৩০ জুন ওই মেয়েটি ও তার বাবা দুপুরে জাজিরা থানায় হাজির হয়ে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করে। ১ জুলাই ধর্ষক মাসুদকে আদালতের মাধ্যমে শরীয়তপুর জেলা কারাগারে পাঠানো হয়।

৭ জুলাই ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে মাসুদের জামিন প্রার্থনা করে তার আইনজীবী। রাষ্ট্রপক্ষ মাসুদের জামিনের বিরোধীতা করে ৭ দিনের রিমান্ড দাবী করেন। কিন্তু আদালত মাসুদের জামিন নামঞ্জুর করেন এবং রিমান্ড আবেদটিও না মঞ্জুর করেন। ৮ জুলাই মাসুদের আইনজীবী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে পূনরায় মাসুদের জামিন আবেদন করলে একজন নারী বিচারক অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ (বর্তমানে ভারপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ) মরিয়ম মুন মুঞ্জুরী ধর্ষক মাসুদকে জামিনে মুক্তির আদেশ প্রদান করেন।

ধর্ষক মাসুদ আদালত থেকে জামিন পাওয়ার পর ধর্ষিতা মেয়েটির পরিবার এখন আতংকের মধ্যে রয়েছে। বিভিন্ন প্রভাবশালী লোকদের মাধ্যমে ওই পরিবারকে চাপ দেয়া হচ্ছে মামলা তুলে নিতে।

(কেএনআই/এসপি/জুলাই ১০, ২০১৯)