শরীয়তপুর প্রতিনিধি : শরীয়তপুর জেলার ভেদরগঞ্জ উপজেলার সখিপুর থানাধীন ডিএমখালী ইউনিয়নে পুত্রবধূকে ধর্ষণের অভিযোগে ৬০ বছর বয়সী এক বৃদ্ধ শ্বশুরকে আটক করেছে পুলিশ। 

আটক গিয়াসউদ্দিন ঢালী ডি,এম খালি ইউনিয়নের বেলায়েত সরদার কান্দি গ্রামের বাসিন্দা। নিজের পুত্রবধূর দায়ের করা ধর্ষণ মামলার ভিত্তিতে গত সোমবার তাকে আটক করে সখিপুর থানা পুলিশ।

মামলার এজাহার ও স্থানীয় সূত্রে জানাগেছে, দুই বছর আগে ডিএমখালী ইউনিয়নের গিয়াসউদ্দিন ঢালীর ছেলে লিটন ঢালীর সাথে একই ইউনিয়নের মোল্যা কান্দি গ্রামের বাসিন্দা এক বুদ্ধি প্রতিবন্ধী দিন মজুরের প্রতিবন্ধী মেয়ের বিয়ে হয়। বিয়ের পর স্বামী লিটন স্ত্রীকে নিজের গ্রামের বাড়িতে রেখে রাজধানী ঢাকার একটি হোটেলে চাকুরী করে আসছে। গ্রামের বাড়িতে তার যাতায়াত কম ছিল। এ সুযোগে লিটনের বাবা গিয়াসউদ্দিন ঢালী নিজের পুত্রবধূকে মেরে ফেলা সহ নানা রকম ভয়ভীতি দেখিয়ে গত ৬ মাস যাবৎ প্রায় প্রতিরাতে ধর্ষন করে আসছে। সম্প্রতি বিষয়টি স্থানীয়দের মধ্যে জানাজানি হয়। পরে বিষয়টি ধামাচাপা দেয়ার জন্য গত বুধবার স্থানীয় সালিশ বৈঠকে বিচারের নামে গিয়াসউদ্দিন ঢালীকে জনসাধারনের সামনে জুতাপেটা করা হয়। আর হতদরিদ্র পরিবারের মেয়েটিকে তার বাবার বাড়িতে পাঠিয়ে দিয়ে তার স্বামী লিটন জানিয়ে দেয় তাকে আর স্ত্রী হিসেবে রাখবেনা। কিন্তু এ বিচারে সন্তুষ্ট না হওয়ায় রবিবার রাতে ধর্ষিত ওই গৃহবধু তার শশুড় গিয়াসউদ্দিন ঢালীকে আসামী করে সখিপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

স্থানীয়রা জানিয়েছেন, গিয়াস উদ্দিন ঢালী আগে থেকেই চরিত্রহীন। সে দুইটি বিয়ে করেছে। দুই স্ত্রীর ঘরে তার ৮/১০ জন সন্তান রয়েছে। ধর্ষিতা গৃহবধুটির স্বামী লিটন ঢালী গিয়াস উদ্দিনের দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রীর সন্তান।

অসহায় গৃহবধু বলেন, আমাকে মেরে ফেলবে, বাড়িতে রাখবে না, এরকম ভয় দেখিয়ে আমার শশুড় ৫-৬ মাস ধরে আমার সাথে খারাপ কাজ করেছে, আমাকে ধর্ষণ করেছে। রাতে ঘরে আর দিনে ক্ষেতে-খামারে নিয়ে এ কাজ করতো। এখন তার ছেলেও আমাকে রাখবেনা। আমি এই অপরাধের বিচার চাই।

ধর্ষিতা গ্রহবধুর মা বলেন, আমার মেয়ের সাথে তার শশুড় এ কাজ কেমনে করলো ? আমি তার বিচার চাই। সালিশীর বিচার আমি মানি না। আমার স্বামী বুদ্ধি প্রতিবন্ধী, কোন রকম কৃষি কামলা দিয়ে আমাগো সংসার চলে। আমি ডেকোরেটরের থালা বাসন পরিস্কার করে কিছু পয়সা পাই। এখন আমি এই মেয়েকে নিয়ে কই যামু।

ধর্ষক গিয়াসউদ্দিন ঢালী বলে, আমার ছেলের স্ত্রী আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা কথা বলছে। তারপরেও সমাজে সালিশরা যে সিদ্ধান্ত দিছে আমি ঐ বিচার মেনে নিয়েছি।

সখিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, এ বিষয়ে ধর্ষিতা গৃহবধু বাদী হয়ে তার শশুড়ের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করেছেন। আসামীকে আটক করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

(কেএনআই/এসপি/জুলাই ১০, ২০১৯)